বাংলাদেশের শিরোপা ধরে রাখার লড়াই
ওমর ফারুক রুবেল, কাঠমান্ডু (নেপাল) থেকে
প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দুই বছরের ব্যবধানে আরও একটি সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। আরও একটি বাংলাদেশ ও নেপাল লড়াই। এবারও স্বাগতিকদের হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জিতে দেশে ফিরতে মরিয়া সাবিনা খাতুনরা। পারবেন কি লাল-সবুজের মেয়েরা? আজই তা জানা যাবে। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে শুরু হবে ম্যাচটি।
দুই দেশের লড়াইয়ে কিছুটা এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। নেপালের দুই ভয়ংকর ফরোয়ার্ড সাবিত্রা ভান্ডারি ও রেখা পাউডেল জুটিতে ভাঙন ধরেছে। ভারতের বিপক্ষে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছেন রেখা। তাই বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে তাকে পাবে না নেপাল। লাল-সবুজ শিবিরেও কিছুটা খামতি রয়েছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করা ম্যাচে সবেধন নীলমণি হয়ে এসেছিল শামসুন্নাহার জুনিয়রের গোলটি। ওই গোলটি না পেলে হয়তো হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হতো সাবিনাদের। ইনজুরিতে থাকায় ফাইনালে খেলা হচ্ছে না জুনিয়রের। তার বদলে দেখা যাবে বয়সভিত্তিক দল থেকে উঠে আসা সাগরিকাকে। আশার কথা, দারুণ ফর্মে রয়েছেন ‘মেসি’খ্যাত তহুরা খাতুন। ভুটানের বিপক্ষে যিনি হ্যাটট্রিক করেছেন। ছন্দে ফিরেছেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। গোল পেয়েছেন লেফট উইঙ্গার ঋতুপর্ণা চাকমা ও ডিফেন্ডার শিউলি আজিম। সাফের শিরোপা ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। মঙ্গলবার ম্যাচের আগে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘শিরোপা ধরে রাখতে এই দল নিয়ে আমি আত্মবিশ্বাসী। মেয়েরা যেসব বিতর্কের মধ্য দিয়ে গেছে, সেসব কিছু অতিক্রম করে যেভাবে ফুটবল খেলেছে সেটা অবিশ্বাস্য। প্রশংসা করা উচিত। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।’ তিনি যোগ করেন, ‘আমার মনে হয় না, কোনো কিছুর ঘাটতি থাকবে মাঠে। শিরোপা জেতার জন্যই খেলব।’ তবে শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে মেয়েরা আরও দুর্দান্ত খেলা ?উপহার দেবেন বলে জানান ব্রিটিশ কোচ পিটার জেমস বাটলার, ‘শিহরণ জাগানিয়া ফাইনাল হবে আশা করি। আমরা অনেকটা পথ এসেছি, আরও এগিয়ে যেতে চাই। নেপালের প্রতি শ্রদ্ধা আছে আমার। ফাইনালের জন্য সব কিছু সেরাভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, কখনো কখনো উপলক্ষ্য আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।’ স্বাগতিক সমর্থক নিয়ে কোচের কথা, ‘স্বাগতিকরা মাঠে সমর্থন পাবে তাদের দর্শকের মাধ্যমে। আমাদের কিছুটা অসুবিধা তো হবেই। দলের অনেকেই তরুণ। আবার অনেকেরই এই মাঠে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। আমার কাছে মনে হয়, স্বাগতিক দলই বেশি চাপে থাকবে।’
অন্যদিকে অপরাজিত থাকা বাংলাদেশের বিপক্ষে বেশ সতর্ক নেপালও। স্বাগতিক কোচ রাজেন্দ্রা সংবাদ সম্মেলনে ব্যাখ্যা দিলেন এভাবে, ‘গতবার আমরা তাদের (বাংলাদেশ) বিপক্ষে ফাইনাল খেলেছিলাম, আমাদের কিছু ট্যাকটিক্যাল ভুল হয়েছিল বলে হেরেছিলাম। আশা করি, এবার সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে না। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়েছি আমরা।’ তিনি যোগ করেন, ‘ইংলিশ কোচের (পিটার জেমস বাটলার) অধীনে বাংলাদেশ শক্তিশালী দল। তাদের খেলার পদ্ধতিও ইংলিশদের মতোই। তাই সতর্ক থাকতে হবে আমাদের। ঘরের মাঠে খেলা বলে যদিও সমর্থকদের পাশে পাওয়ার সুবিধা আমাদের পক্ষে থাকবে। টেকনিক্যালি এবং ট্যাকটিক্যালি এগিয়ে থাকা বাংলাদেশকে নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে আমাদের।’
মেয়েদের সাফের শক্তিশালী দুই দেশের লড়াইয়ের আগে টিকিট পেতে লড়তে হচ্ছে সমর্থকদের। স্বাগতিক দেশের অনেক সমর্থকই টিকিট পেতে দৌড়ঝাঁপ করছেন অল নেপাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (আনফা) কর্মকর্তাদের কাছে। নেপালে বাংলাদেশের সমর্থকরাও দ্বারস্থ হচ্ছেন কাঠমান্ডুতে অবস্থান করা মিডিয়া কর্মী ও বাঙালি কমিউনিটির নেতাদের। এদিকে ভিআইপি টিকিট পেতে নেপালে বাংলাদেশের কনস্যুলার মাসুদ আলম ইতোমধ্যে আনফার মেইলে বার্তা পাঠিয়েছেন। স্টেডিয়ামের গেটে টিকিট বুথে হামলে পড়ছেন দর্শকরা।