প্রচারের অভাবে সাড়া মেলেনি কৃষকদের
সবজি ছাড়াই যশোর ছাড়ল স্পেশাল ট্রেন

যশোর ব্যুরো
প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
-671814f565919.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
কৃষিপণ্য পরিবহণে স্পেশাল ট্রেনটি প্রথম দিনেই সবজি ছাড়া যশোর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রচারের অভাবে কৃষকদের সাড়া মেলেনি। মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় ‘কৃষিপণ্য স্পেশাল ট্রেন’। বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে যশোর স্টেশনে পৌঁছানোর কথা থাকলেও ৪০ মিনিট বিলম্বে পৌঁছায়। প্রথম দিনেই কৃষিপণ্য বা খাদ্যসামগ্রী বুকিং ছাড়াই যশোর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যায়। তবে রেল স্টেশন মাস্টারের দাবি, ব্যাপক প্রচারণা চালালেও আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। আগামীতে সাড়া পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তারা।
নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী, নাকাল হয়ে পড়ছে মধ্যবিত্ত শ্রেণি। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দেশের ১৫টি উৎপাদক অঞ্চল থেকে কৃষিপণ্য সংগ্রহ করে দেশব্যাপী সরবরাহ নিশ্চিতের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষ। সবজি পরিবহণে স্পেশাল ট্রেন সার্ভিস চালুর বিষয়ে যশোর সদরের ছোট হ্বৈতপুর গ্রামের সবজি চাষি আব্দুল আলিম বলেন, ‘আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম ট্রেনের কথা। কবে থেকে চালু হবে বা হয়েছে, জানি না। ট্রেন মুন্সি মেহেরুল্লাহ স্টেশনে থামলে আমাদের জন্যে ভালো হয়। এখান থেকে ট্রেনে পণ্য পরিবহণ করতে পারলে আমাদের সুবিধা।
যশোর সদরের বারীনগর সাতমাইল হাটের আড়তদার আতিয়ার রহমান বলেন, সবজির জন্যে স্পেশাল ট্রেন চালুর বিষয়টি আপনার কাছেই শুনলাম। অবশ্য, আমাদের আড়ত থেকে সবজি পাঠানোর জন্য ট্রাকই ভালো ও সুবিধাজনক। কৃষক তাদের উৎপাদিত পণ্য আমাদের আড়তে দিয়ে যান। আর ট্রাক একদম আড়তের সামনে দাঁড়িয়ে লোড দিতে পারে। এতে আমাদের সুবিধা। আর স্টেশনে যাওয়া আমাদের জন্য কষ্টকর, যদিও ট্রেনে মাল পাঠাতে পারলে আমরা আর্থিকভাবে লাভবান হব।
এদিকে, যশোর রেলওয়ে স্টেশন ত্যাগ করার পর মুন্সী মেহেরুল্লাহ স্টেশনে সবজি ট্রেন থামার কথা। কিন্তু সেখানে কোনো সবজি দেখা যায়নি। কোনো ব্যবসায়ীকেও দেখা যায়নি। পরের স্টেশন ঝিনাইদহের বারবাজার। সাতমাইল বারবাজার এলাকার সবজি চাষি বা ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহণের জন্য এটি সুবিধাজনক। এই স্টেশনের মাস্টার মোবাশ্বের হোসেন বলেন, দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে বারবাজার স্টেশন পার হয়েছে বিশেষ ট্রেনটি। এই স্টেশন থেকে কোনো সবজি ওঠেনি।
রেলস্টেশন মাস্টার আয়নাল হাসান বলেন, প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার বিশেষ এ ট্রেন চলাচল করবে। এজন্য ব্যবসায়ী পর্যায়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়েছে। পাশাপাশি কৃষি বিভাগকেও নতুন সার্ভিস সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু প্রথম দিন? হিসাবে আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। তবে আগামীতে সাড়া পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী আমরা। কৃষক বা ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি সবজি বা পণ্য ১ টাকা ৪০ পয়সা ভাড়ায় ঢাকায় নিতে পারবেন। সাশ্রয়ী ভাড়া হিসাবে ট্রেনকে ব্যবহারের জন্য তিনি কৃষক ও ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সুশান্ত বলেন, সম্প্রতি যশোর সদরের আব্দুলপুর গ্রামের সবজি চাষিদের নিয়ে একটি ট্রেনিংয়ে এ বিষয়ে কথা হয়। তারা বিষয়টি ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন। যেহেতু ট্রেনে পণ্য পাঠাতে খরচ কম, তাই কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।