সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রীর সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে: ডা. শফিকুর রহমান
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
শফিকুর রহমান
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষ ছিল মজলুম এবং রাস্তায় যে ভাইটি ভিক্ষা করতেন, তিনিও মজলুম। কারণ, ওইসব ভিক্ষুককে চাঁদা দিতে হতো গুন্ডাদের কাছে। চাঁদা না দিলে তারা ভিক্ষা করতে পারতেন না। সারা দিন ভিক্ষা করে যা থাকত, তা দিয়ে আবার সংসার চলত না। কারণ, ৩০ টাকার পেঁয়াজ ৩০০ টাকায় কিনতে হতো। এ দুষ্ট সিন্ডিকেট করেছিলেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে তার চ্যালাচামুণ্ডারা। ৫ আগস্ট আমাদের ছেলেরা নতুন করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এখনো সেই সিন্ডিকেট ভাঙা সম্ভব হয়নি। দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানতে হলে সিন্ডিকেট ভেঙে চুরমার করে দিতে হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জাতীয় বীর আব্দুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চে মঙ্গলবার সকালে জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জামায়াতের আমির গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মলনে বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা ও কুমিল্লা-নোয়াখালী অঞ্চলের টিম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা ও কুমিল্লা-নোয়াখালী অঞ্চলের টিম সদস্য সাবেক জেলা আমির অধ্যক্ষ কাজী নজরুল ইসলাম খাদেম, জেলা নায়েবে আমির কাজী ইয়াকুব আলী, জেলা সেক্রেটারি মুহা. মোবারক হোসাইন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম ভূইয়া প্রমুখ।
কর্মী সম্মেলনে আমিরে জামায়াত ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে ২০০১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৮ জন এবং ২০২২ ও ২০২৪ সালের শহিদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছর একটি দলের ওপর যে রকম জুলুম করা হয়েছে, দেশের অন্য কোনো দলের ওপর সে জুলুম করা হয়নি। সে দলটার নাম হলো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। কিন্তু আমরা আগেই বলেছি, আমরা কারও ওপর প্রতিশোধ নেব না। অর্থাৎ, আমরা সামগ্রিকভাবে ক্ষমা করে দিতে চাই। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে যে অপরাধ করেছে, ইনসাফের দাবি হচ্ছে-তাকে তার অপরাধের শাস্তি পেতে হবে। কিন্তু তাই বলে আমরা কেউ আইন হাতে তুলে নেব না।
জামায়াতের আমির বলেন, আমরা এমন একটি দেশ চাই, যে দেশ অন্য কোনো শক্তি বা দেশের অধীনতা মেনে নেবে না। পৃথিবীর অন্য ১০টি দেশ যেমন মর্যাদার সঙ্গে বিশ্বের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়, বাংলাদেশও তার শির উঁচু করে দাঁড়াবে ইনশাআল্লাহ। বিদেশে আমাদের বন্ধু থাকবে; কিন্তু কোনো প্রভু আমরা মেনে নেব না। কেউ আমাদের প্রভুত্ব করতে এলে জাতি তার সঠিক জবাব বুঝিয়ে দেবে।
বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম বলেন, স্বৈরাচার হাসিনা সরকার দেশকে বৃহত্তর কারাগার বানিয়ে মানুষের সব অধিকার হরণ করে নিয়েছিল। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছি।
কর্মী সম্মেলন শেষে ডা. শফিকুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী জামেয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসা পরিদর্শন ও বড় হুজুরখ্যাত আল্লামা সিরজুল ইসলামের কবর জিয়ারত করেন। পরে জেলা জামায়াতের রুকন সম্মেলনে যোগ দেন।