বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, মানুষকে ভালোবাসতে হবে। কোনো ভিনদেশি আমার আপনার অধিকার আদায় করে দেবে না। নিজের অধিকার নিজেদেরই প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ভারত আমাদের জন্য কিছু করবে না, করেও না। শুক্রবার বিকালে পুরান ঢাকার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শনের আগে হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ১৬ বছরে রাজপথে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা আমাকে হামলা করে রক্তাক্ত করেছে, আমার বাড়িতে হামলা হয়েছে, আমার পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। কিন্তু দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের এত সংগঠন, এসব সংগঠনের নেতারা নিন্দা বা প্রতিবাদ অথবা সমবেদনা জানিয়ে কোনো বিবৃতি দেননি। কারণ আমি বিএনপির রাজনীতি করি।’

হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা সবাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলেন। আমার কথা হচ্ছে, সবার আগে মনোভাব পরিবর্তন করেন। আমি বিএনপি করি-এ জন্য আমার বা আমার পরিবারের ওপর হামলা হলে সমবেদনা জানানো যাবে না, এ ধরনের মানসিকতা থেকে আমাদের বের হতে হবে। সম্প্রদায়ের প্রতি সম্প্রদায়ের টান থাকতে হবে। মসজিদ কিংবা মন্দিরে রাজনীতির চর্চা কল্যাণ বয়ে আনে না। মন্দির প্রাঙ্গণে বসে রাজনৈতিক চর্চা না করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে আমরা বাংলাদেশি। আমাদের সমস্যা আমাদেরই সমাধান করতে হবে, বাইরে থেকে কেউ এসে সেটা করবে না। বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, এখনও মিডিয়া সত্য কথা বলতে পারে না। যেই আকাক্সক্ষা নিয়ে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার আন্দোলন হয়েছে, তেমনটা এখনও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

এই অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত দেব প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাপস চন্দ্র পাল, জিয়া মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়েজ উল্যাহ ইকবালসহ পূজা পরিষদ ও মহানগর পূজা কমিটির নেতারা।

আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা এখনো ঘাপটি মেরে আছে-সেলিমা রহমান : এদিন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা এখনো ঘাপটি মেরে আছে। তারা গার্মেন্ট শিল্পসহ নানাভাবে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায়। বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য গণতন্ত্র, সুশাসন ও ভোটাধিকার। আমাদের অনেক কাজ এখনো বাকি। কত যে শহিদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন তার সঠিক হিসাব নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের গর্ব। তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা করছে। আমরা বিশ্বাস করি, তিনি প্রয়োজনীয় সংস্কার করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দেবেন।

যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের স্বাধীনতা কোনো একনায়কত্ব চায় না। বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখায়। কোনো বৈষম্য থাকবে না। উচ্ছৃঙ্খলতা ও চাঁদাবাজি এখনো চলছে। সে বিষয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সতর্ক থাকবেন। শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ নিয়ে সামনে এগিয়ে যান।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।