Logo
Logo
×

শেষ পাতা

মুম্বাইয়ে শোক পালন

পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় রতন টাটার শেষকৃত্য সম্পন্ন

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় রতন টাটার শেষকৃত্য সম্পন্ন

ভারতের প্রয়াত শিল্পপতি রতন টাটার শেষকৃত্য পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে মহারাষ্ট্রের ওরলির শ্মশানে তাকে দাহ করা হয়। এ সময় তাকে শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। খবর আনন্দবাজার, হিন্দুস্থান টাইমসের।

শিল্পপতি রতন টাটার প্রয়াণে ১ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রতন টাটাকে শ্রদ্ধা জানাতে বৃহস্পতিবার রাজ্যে ‘শোক দিবস’ পালন করা হয়েছে। এর অংশ হিসাবে রাজ্যের সব সরকারি দপ্তরে জাতীয় পতাকা ছিল অর্ধনমিত। এদিনে রাজ্যজুড়ে পূর্বনির্ধারিত বিভিন্ন বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়। মহারাষ্ট্র সরকারের সব কর্মসূচি এবং বৈঠকও বাতিল করা হয়। পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় টাটার শেষকৃত্য সম্পন্ন করার কথা রাজ্যের পক্ষ থেকেই আগেই জানানো হয়েছিল। তাকে দেওয়া হয়েছে গার্ড অব অনারও। মুম্বাইয়ের ওরলি শ্মশানে বিকালে ইলেকট্রিক চুল্লিতে তাকে দাহ করা হয়। সেখানে হিন্দুরীতি অনুযায়ী শেষকৃত্যের আগে ৪৫ মিনিট প্রার্থনাও করা হয়।

প্রবীণ শিল্পপতি রতন টাটার প্রতি সাধারণ মানুষের শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সকালে মরদেহ রাখা ছিল মুম্বাইয়ের নরিম্যান পয়েন্টে, ন্যাশনাল সেন্টার ফর পারফর্মিং আর্টসে (এনসিপিএ)। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে এর আগে জানিয়েছিলেন, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত টাটাকে সাধারণ মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন। রতন টাটার শেষকৃত্যে অংশ নিতে মুম্বাই গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এছাড়া মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে থেকে শুরু করে শরদ পাওয়ার, দেবেন্দ্র ফড়নীস, উদ্ধব ঠাকরেসহ বহু রাজনীতিবিদ শেষবারের মতো রতন টাটাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। শিল্পপতি মুকেশ আম্বানিও পরিবারসহ রতন টাটাকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়েছেন। বাদ যাননি অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও।

টাটা পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বেলা সাড়ে ৩টার সময় প্রয়াত শিল্পপতির দেহের শেষযাত্রা শুরু হয় নরিম্যান পয়েন্ট থেকে। বিকাল ৪টায় শুরু হয় শেষকৃত্যের কাজ। রতন টাটা পার্সি ধর্মাবলম্বী হলেও, পার্সি প্রথায় তার শেষকৃত্য হয়নি। তাকে বৈদ্যুতিক চুল্লিতে দাহ করা হয়েছে। প্রথা অনুযায়ী মৃত্যুর পর পার্সিরা শকুন-চিলকে দেহ অর্পণ করেন। তবে, বর্তমানে পার্সিদের এ প্রথা প্রায় অবলুপ্তির পথে। তাই, পার্সি সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরেই তাদের প্রথাগত শেষকৃত্যের পথ থেকে সরে এসেছে। তার বদলে তারা এখন দেহ বৈদ্যুতিক চুল্লিতে দাহ করেন। রতন টাটার ক্ষেত্রেও এ প্রথাই অনুসরণ করা হয়েছে।

বুধবার রাতে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন টাটা। তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। বয়সজনিত সমস্যা নিয়ে তিনি কয়েক দিন মুম্বাইয়ের ওই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। রোববার রাতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবরে বলা হয়েছিল, প্রবীণ শিল্পপতিকে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডির একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে তাকে আইসিইউতে ভর্তিও করানো হয়েছে বলেও জানানো হয়েছিল। কিন্তু সোমবার সকালেই সব খবর উড়িয়ে দিয়ে টাটা নিজেই জানিয়েছিলেন, সব খবর ভুয়া। বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যার কারণে তিনি নিয়মমাফিক চেকআপের জন্যই হাসপাতালে গিয়েছিলেন। এরপর বুধবার রাতে তার মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।

১৯৬২ সালে টাটা স্টিল বিভাগে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন। এর ৯ বছর পর তিনি ন্যাশনাল রেডিও অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি লিমিটেডের ডিরেক্টর-ইন-চার্জ হিসাবে নিযুক্ত হন। ১৯৯১ সালে টাটা সন্সের চেয়ারম্যান পদ থেকে জেআরডি টাটা পদত্যাগ করলে রতন টাটা তার উত্তরসূরি হিসাবে স্থলাভিষিক্ত হন। ওই পদে থাকাকালীনই রতন টাটা নিয়ম করেন, টাটা সন্সে চেয়ারম্যান পদে ৭৫ বছর বয়েসের ঊর্ধ্বে কেউ বসবেন না। সেই নিয়ম অনুসরণ করেই তিনি ২০১২ সালে অবসর নেন। ২০১২ সালের পর টাটা সন্সের চেয়ারম্যান ইমেরিটাস পদে ছিলেন রতন টাটা।

২০০০ সালে ‘পদ্মভূষণ’ সম্মান পান রতন টাটা। ২০০৮ সালে তিনি পান ‘পদ্মবিভূষণ’ সম্মান। মহারাষ্ট্র, আসাম সরকারও তাকে সম্মান প্রদান করেছে। ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ, লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স, আইআইটি বম্বে, ইয়েল ইউনিভার্সিটি, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, রাজা তৃতীয় চার্লসের থেকেও তিনি বিশেষ ভাবে সম্মানিত হয়েছেন।

রতন টাটার প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতারা। শোক প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম