ডেঙ্গুতে আরও ৫ মৃত্যু
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮২ জনে। এ সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৯২৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর এতে চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৩৫ হাজার ৩৬৫ জনে দাঁড়িয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে বিকালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম বলেন, জনগণ সচেতন হলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। নুরজাহান বেগম বলেন, ‘আমরা স্থানীয় সরকার বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছি এবং কয়েক দফা বৈঠক করেছি। এখানে দুটি বিষয় আছে, একটি হচ্ছে চিকিৎসাসেবা দেওয়া, আরেকটি হচ্ছে সচেতনতা। কুর্মিটোলা হাসপাতাল, ডিএনসিসি হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে শয্যার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
অতিরিক্ত চিকিৎসকও দেওয়া হয়েছে। সেখানে কয়েকটি টিম করে দেওয়া হয়েছে। এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসেন বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ গত বছরের চেয়ে তুলনামূলক কম। এ বছর মৃত্যুর সংখ্যাও বেশ কম। তবে কোনো মৃত্যুই কাম্য নয়। আমরা মৃত্যু কীভাবে রোধ করা যায় সেই ব্যাপারে কাজ করছি। সব হাসপাতালে আমরা ডেঙ্গুর চিকিৎসায় যেসব প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপত্র দেওয়া দরকার সেগুলো পাঠিয়ে দিয়েছি। আরও লাগলে দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারা দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায়ই ৪৩২ জন রয়েছেন। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগে ১৭৩ জন, বরিশালে ১০২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৯ জন, খুলনায় ৭৬ জন ময়মনসিংহে ৩৮ জন ও রাজশাহীতে ১৮ জন রয়েছেন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৩৫ হাজার ৩৬৫ জন।
তাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী। একই সময়ে মারা যাওয়া ১৮২ জনের মধ্যে ৫১ দশমিক ১ শতাংশ নারী এবং ৪৮ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ।
প্রতি বছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গেল বছর দেশে তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ ১০ হাজার ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন দুই লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন। এক হাজার ৭০৫ জন মশাবাহিত এই রোগে মারা গেছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু।
এর আগে ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময় চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০২১ সালে সারা দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন, ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০২২ সালে ডেঙ্গু নিয়ে মোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, ২৮১ জন মারা যান।