মিট দ্য প্রেসে ডিএমপির ডিবি প্রধান
ডিবি কার্যালয়ে আয়নাঘর-ভাতের হোটেল থাকবে না
ডিবির কলঙ্কিত অধ্যায় শেষ করে পবিত্র করা হচ্ছে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কার্যালয়ে কোনো ‘আয়নাঘর ও ভাতের হোটেল’ থাকবে না। সেলিব্রিটি নায়ক-নায়িকাদের বিচরণস্থল হবে না। ডিবি অফিসের নাম শুনলে আর কেউ আতঙ্কিত হবেন না, ভুক্তভোগীদের ভরসার স্থল হবে। ডিবিকে শুধু অপরাধীরাই ভয় পাবে। এ লক্ষ্যে ডিবিকে জনবান্ধব হিসাবে গড়ে তোলা হচ্ছে। ডিবির কোনো সদস্য অন্যায় করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে ‘মিট দ্য প্রেস’-এ এসব কথা বলেন, ডিএমপির ডিবি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক।
সাবেক ডিবি প্রধান হারুন-অর-রশীদ ও যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারসহ অনেক পুলিশ কর্মকর্তা একাধিক হত্যা মামলার আসামি হয়েছেন। তারা এখনো পলাতক, এসব কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, ‘অপরাধের সঙ্গে যেসব পুলিশ কর্মকর্তা জড়িত তাদের আমরা আইনের আওতায় আনব। যারা পলাতক তাদের খুঁজে বের করা হবে।’
ঢালাও মামলা ও ভুয়া মামলায় গ্রেফতার প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ডিবি প্রধান বলেন, ‘এজাহারভুক্ত যারা আসামি আমরা তদন্ত করে শুধু তাদেরই গ্রেফতার করছি।’
মিট দ্য প্রেসে ডিবি প্রধান বলেন, বিগত সময়ের উচ্চাভিলাষী ও অপেশাদার কিছু পুলিশ কর্মকর্তা পুরো পুলিশ বাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়। এর ফলে ছাত্র-জনতার আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান এবং বিগত সরকারের পতনকে ঘিরে সংঘর্ষ-সহিংসতায় পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়ে। এ ধরনের ভয়াবহ বিপর্যয়ে পুলিশ বাহিনীকে পূর্বে কখনো হতে হয়নি।
লিখিত বক্তব্যে ডিবি প্রধান বলেন, ডিবির কলঙ্কিত অধ্যায় শেষ করে সেটিকে পবিত্র করা হচ্ছে; সেখানে মানুষ ন্যায়বিচার পাবেন। এখানে কোনো নায়ক-নায়িকা বা সেলিব্রিটিদের সময় কাটানোর জায়গা হবে না। থাকবে না কোনো আয়নাঘর-ভাতের হোটেল। আসামি যেই-ই হোক না কেন সে ন্যায়বিচার পাবে। গ্রেফতার আসামিদেরও নির্যাতন করা হবে না। ডিবি অফিসের নাম শুনলে আর কেউ আতঙ্কিত হবে না-আমাদের শুধু অপরাধীরাই ভয় পাবে। আমি যতদিন ডিবি প্রধানের দায়িত্ব পালন করব-ন্যায়নীতি, পেশাদারিত্ব ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করব। যারা ভুক্তভোগী এবং অসহায় তাদের কথা শুনব। তাদের কী রকম আইনগত সহযোগিতা দেওয়া যায় সেটি দেখব। ডিবিকে মানুষের আস্থা ও ভালোবাসার স্থান হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। নতুন স্বাধীন বাংলাদেশে ডিবি অফিস হবে ভুক্তভোগীদের ভরসাস্থল।
ডিবি প্রধান আরও বলেন, ডিবি অফিসে কোনো রকম অন্যায়, অবিচার ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। সাধারণ মানুষ যেন সুবিচার পান, অন্যায় জুলুম থেকে বাঁচতে পারেন সেটি নিশ্চিত করা হবে। এমনকি আমিও আইনের ঊর্ধ্বে নই। আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিচ্ছি, ডিবির কোনো সদস্য যদি কোনো ধরনের অনৈতিক ও অপেশাদার কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হন, তাদেরকেও বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।
সবাইকে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজার আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, কয়েকদিন পরেই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সারা দেশের মতো ঢাকা মহানগর এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি সবাইকে আইন ও বিধি মেনে চলার অনুরোধ জানান।
‘মিট দ্য প্রেস’-এ ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা-উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূঁইয়া; যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টার-দক্ষিণ) সৈয়দ হারুন অর রশীদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।