মোহনপুরে আ.লীগ কর্মীর কোপে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত
শ্রীপুরে বিএনপি-আ.লীগ সংঘর্ষে আহত ১৫ * ইন্দুরকানীতে ছাত্রলীগের হামলায় জামায়াত নেতা গুরুতর আহত
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় এক আওয়ামী লীগ কর্মীর হাঁসুয়ার কোপে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সাদ্দাম হোসেন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় উপজেলার ধুরইল ইউনিয়নের বড় পালশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার সব্দালপুর গ্রামের স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত দুপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় অন্তত ১০টি বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে ছাত্রলীগ কর্মী নোমানের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন জামায়াত নেতা রমিজ সিকদার ও তার স্ত্রী মালেকা বেগম। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
রাজশাহী : সাদ্দাম হোসেনের বাবার নাম আয়েন উদ্দিন। হামলায় সাদ্দামের বড় ভাই মো. বুলবুল গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সাদ্দামের লাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ ওই গ্রামের একসার আলী নামের এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে আটক করে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সাদ্দাম ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার ভাই আহত বুলবুল ইউনিয়ন কৃষক দলের সদস্য। অভিযুক্ত একসার আলী আওয়ামী লীগের সমর্থক। একসারের ভাতিজা আকতার হোসেন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি।
মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল হান্নান জানান, রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে একসার আলীর সঙ্গে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হতো কৃষক দলের নেতা বুলবুলের। সন্ধ্যায় আবারও একসারের বাড়ির সামনে দুজনের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এরই একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ কর্মী একসার বাড়ি থেকে হাঁসুয়া এনে বুলবুলকে কোপাতে শুরু করেন। বড় ভাইকে কোপাতে দেখে তাকে রক্ষায় এগিয়ে যান বুলবুলের ছোট ভাই সাদ্দাম হোসেন। এ সময় সাদ্দামকেও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।
মাগুরা : উপজেলার কালাইয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার দুপুরে সব্দালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হাফিজার ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক দুলাল মোল্যা সমর্থিতদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী জানায়, সম্প্রতি সারা দেশে রাজনৈতিক মামলার ধারাবাহিকতায় ঢাকার একটি মামলায় শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা দুলাল মোল্যার ছেলে সাব্বির মোল্যাকে আসামি করা হয়।
এ নিয়ে সব্দালপুর গ্রামে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থিতদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার দুপুরে উভয়পক্ষ বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় তারা ঢাল-সড়কি নিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা ও বাড়িঘর ভাঙচুর করে। সংঘর্ষ চলাকালে হাফিজার মোল্যা, মিলন শেখসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌতম ঠাকুর বলেন, পুলিশের পাশাপাশি সেনা সদস্যরাও টহল জোরদার করায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
ইন্দুরকানী (পিরোজপুর) : আহত রমিজ সিকদার কালাইয়া গ্রামের মৃত ফজলুল সিকদারের ছেলে। তিনি জামায়াতে ইসলামীর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কালাইয়া ওয়ার্ড সভাপতি।
শেখ হাসিনা সরকারের সময় রমিজ সিকদারের জমি জোর করে দখল করেন একই গ্রামের আবুল কালাম ও তার দুই ছেলে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা নোমান ও জাহিদ। বৃহস্পতিবার রমিজ সিকদার সেই জমির পাশে গেলে অতর্কিত হামলা চালায় নোমান ও তার ছোট ভাই জাহিদ। এতে গুরুতর আহত হন রমিজ সিকদার ও তার স্ত্রী মালেকা বেগম। স্থানীয়রা তাদের ইন্দুরকানী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ বিষয় রমিজ সিকদারের ছেলে ছাবরুল সিকদার বলেন, ছাত্রলীগ ক্যাডার নোমান জমি দখলের পরে আমরা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মতিউর রহমানের কাছে অভিযোগ দেই। তিনি জমি ছেড়ে দিতে বললেও তারা জমি ছাড়েনি। বরং আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে।
অভিযুক্ত নোমান বলেন, আমার মা ও স্ত্রী পুকুরে গোসল করা অবস্থায় রমিজ সিকদার তা গোপনে মোবাইলে ভিডিও করছিল। সেই সময় আমি দেখে দৌড়ে গিয়ে তাকে বাধা দিলে একপর্যায়ে ধস্তাধস্তি হলে রমিজ মিয়া পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান।
ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত র্কমর্কতা কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।