পাহাড়ে অবরোধ শেষ, আটকে পড়া ৩৫ পর্যটক উদ্ধার
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
পাহাড়িদের ওপর হামলার প্রতিবাদে তিন পার্বত্য জেলায় ‘বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতা’র ডাকা ৭২ ঘণ্টার অবরোধ সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হয়েছে। শেষ দিনেও খাগড়াছড়িতে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল করেনি। তবে রাঙামাটিতে ছিল ঢিলেঢালা। আর বান্দরবানে শুরু থেকেই অবরোধের কোনো প্রভাব পড়েনি।
অবরোধের কারণে রাঙামাটির সাজেকে আটকে পড়া অন্তত হাজার পর্যটকের মধ্যে সোমবার ৩৫ জনকে উদ্ধার করে ঢাকায় পৌঁছে দিয়েছে সেনাবাহিনী। এদিকে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সংঘটিত সহিংস ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে পার্বত্য ভিক্ষুসংঘ। পাহাড়ে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আইনের আওতায় আনার দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
খাগড়াছড়ি : সকাল থেকে খাগড়াছড়ির সঙ্গে রাঙামাটি, ঢাকা ও চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিল। এছাড়া দীঘিনালা, পানছড়িসহ আন্তঃউপজেলাগুলোতেও সড়কে যানবাহন চলাচল করেনি। তবে রোগী বহনকারী সিএনজি, অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি যান চলাচল ছিল স্বাভাবিক। খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কের জামতলা, গবামারা, সদরের মানিকছড়ি গিরি মৈত্রী সরকারি ডিগ্রি কলেজের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন জুম্ম ছাত্র-জনতা। দীঘিনালা বাসস্টেশনে অটোরিকশা চালক বাবুল বলেন, যাত্রী সংকটের কারণে সারাদিনে একবারের বেশি আসা-যাওয়া করা যায় না। তিন দিন ধরে আয় রোজগার বন্ধ। আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো. অরেফিন জুয়েল বলেন, অবরোধের শেষ দিনেও কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
রাঙামাটি : অবরোধের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রাঙামাটির সাজেক ঘুরতে গিয়ে আটকা পড়েছেন অন্তত হাজার পর্যটক। এদের মধ্যে ৩৫ জনকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় পৌঁছানো হয়েছে। রোববার বিকাল ও সোমবার সকালে সেনাবাহিনীর সাতটি হেলিকপ্টারে তাদের সাজেক থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়। সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুবর্ণ দেব বর্মণ বলেন, অবরোধের কারণে সাজেকে বহু পর্যটকসহ যানবাহন চালক ও শ্রমিক আটকে পড়েছেন। সেনাবাহিনীর সহায়তায় কিছু পর্যটককে উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (আজ) যানবাহন চলাচল শুরু হলে আটকা পড়া অন্যরা সড়কপথে নিজেদের গন্তব্যে ফিরতে পারবেন।
এদিকে বৌদ্ধবিহার ভাঙচুর ও লুটপাটসহ রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে সংঘটিত সহিংস ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে পার্বত্য ভিক্ষুসংঘ বাংলাদেশ। সোমবার সকালে রাঙামাটি শহরের কাঁঠালতলী মৈত্রী বিহারে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
এতে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন সংগঠনটির সভাপতি শ্রীমৎ শ্রদ্ধালংকার মহাথের। এ সময় মৈত্রী বিহার অধ্যক্ষ শ্রীমৎ পুণ্যজ্যোতি মহাথের, পূর্ণকীর্তি মহাথের, নান্যাচারা মহাথের, মৈত্রী বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি পুর্নেন্দু বিকাশ চাকমাসহ অন্য বৌদ্ধভিক্ষুরা উপস্থিত ছিলেন।
জবি : খাগড়াছড়িতে বাঙালিদের হত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। সোমবার বেলা ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বর প্রাঙ্গণে এই মানববন্ধন পালিত হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, বর্তমানে সরকারি চাকরিতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের ৫ শতাংশ কোটা দেওয়া হয়েছে। সরকারের সবচেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীরা। অথচ তাদের কেউ কেউ দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছে। এ সময় তারা কুকি-চিনসহ পাহাড়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী সব সন্ত্রাসী সংগঠনকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।