বিতর্কের পর কমলায় ঝুঁকছেন অনেকেই
দুজনের নজর এখন দোদুল্যমান স্টেটে
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
কমলা
যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম টিভি বিতর্কের পুরোটাতেই একে অপরকে নানা ইস্যুতে তর্ক-বিতর্ক, পালটাপালটি আক্রমণ ও বাক্যবাণে জর্জরিত করেছেন। মঙ্গলবার পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়ায় অনুষ্ঠিত এ বিতর্কে কেউ কাউকে এতটুকু ছাড় দেননি। এদিকে বিতর্কের পর বৃহস্পতিবার তারা দুজনই প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। এখন তাদের দুজনেরই নজর দোদুল্যমান স্টেটগুলোর দিকে। খবর বিবিসি, রয়টার্সের।
বিতর্কের মঞ্চে ঝলসে উঠেছিলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। মার্কিন অর্থনীতি, স্বাস্থ্যসেবা, জলবায়ু, আন্তর্জাতিক ইস্যু সব কিছুতেই কমলাকে এগিয়ে রেখেছেন মার্কিন নাগরিকরা। বিতর্কের মঞ্চে তার জ্বলে ওঠাকে ইতিবাচক দেখছেন অনেক নাগরিক। আবার কমলার বিতর্ক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করছে অনেক সিদ্ধান্তহীন নাগরিককে। এ বিতর্কের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীরাও নড়েচড়ে বসছেন। অনেকেই এখন কমলা হ্যারিসের দিকে ঝুঁকে পড়ার কথা ভাবছেন। এমনকি বুধবার বিকালেই ট্রাম্পের মিডিয়া অ্যান্ড টেকনোলজি গ্রুপের শেয়ারের দাম ১৩ শতাংশ নেমে গেছে। আর সোলার স্টক এ বিতর্কের ফলে লাভবান হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিতর্কের পর মার্কিন ভোটাররা বিবিসিকে জানিয়েছেন কমলার পারদর্শিতায় তারা মুগ্ধ। বিতর্কের পর কমলার দিকে তাদের সমর্থন বেড়েছে। তবে নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন তা এখন ঠিক করে উঠেননি অনেক ভোটারই। অনেকে আবার কমলাকে ভোট দেওয়ার কথাও ভাবছেন। কারণ, ট্রাম্পের দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া নিয়ে শঙ্কিত অনেকেই। নির্বাচনে এ বিতর্কের প্রভাব কতটুকু তা এখনই বোঝা না গেলেও, এটা অন্তত বোঝা যাচ্ছে যে বিতর্কের পর কমলা বেশিরভাগ ভোটারের কাছাকাছি যেতে পেরেছেন। মঙ্গলবারের বিতর্কে গর্ভপাত, অর্থনীতি, অভিবাসন, গাজা ও ইউক্রেন যুদ্ধ, ব্যক্রিগত আক্রমণ, সব মিলিয়ে তীব্র বিতণ্ডায় জড়ান দুই পক্ষ। তবে ট্রাম্প নিজে রক্ষণাত্মক অবস্থান নিতে বাধ্য হন। বেশিরভাগ সময়ই কমলার পাতা ফাঁদে ট্রাম্পকে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা গেছে।
বিতর্কের পরপরই ফক্স নিউজ কমলাকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে। ট্রাম্পের নিজের বক্তব্য ও ব্যগ্রতা এবং কমলার ধীরস্থির ও সুচিন্তিত মন্তব্য এ বিতর্কের গতিপথ নির্ধারণ করেছে। ট্রাম্পের প্রতিটি দাবিকেই কমলা সুকৌশলে তার বিরুদ্ধেই ব্যবহার করে গেছেন।
উত্তপ্ত বিতর্কে অংশ নেয়ার পর বৃহস্পতিবার তারা দুজনেই ফের নির্বাচনি প্রচারণায় নেমেছেন। দুজনই এবার নজর দিচ্ছেন দোদুল্যমান স্টেটগুলোর দিকে। কারণ, ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে জয়-পরাজয় এসব রাজ্যের ভোটের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। কমলা তার বিতর্কের অর্জনকে কাজে লাগিয়ে নর্থ ক্যারোলিনার ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করবেন বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। বৃহস্পতিবার তিনি সেখানে প্রচারণা চালান। এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প অ্যারিজোনা রাজ্যের দিকে প্রচারণায় বেশি নজর দিচ্ছেন। তিনি সেখানকার টুকসনে প্রচারণায় অংশ নেন। প্রথম বিতর্ক শেষ হতেই ৫ নভেম্বরের আগে আরেকটা ‘প্রেসিডেনশিয়াল ডিবেট’ আয়োজনের আহ্বান করেছে ডেমোক্র্যাট পার্টি। এ থেকেই বোঝা যায়, মঙ্গলবারের বিতর্কে হ্যারিসের সাফল্য নিয়ে ডেমোক্র্যাট পার্টি কতটা আত্মবিশ্বাসী।