Logo
Logo
×

শেষ পাতা

তাপস আজিজসহ ৬ প্রভাবশালীর কর ফাঁকির খোঁজ

Icon

সাদ্দাম হোসেন ইমরান

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

তাপস আজিজসহ ৬ প্রভাবশালীর কর ফাঁকির খোঁজ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদসহ ৬ প্রভাবশালীর কর ফাঁকি অনুসন্ধান শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ জন্য কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের (সিআইসি) চৌকশ কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শিগগিরই এসব ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব, সিকিউরিটিজ ও সঞ্চয়পত্রের তথ্য চাওয়া হবে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মদদপুষ্ট সাবেক আমলা, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ প্রায় অর্ধশত প্রভাবশালীর তালিকা করেছে সিআইসি। প্রধান উপদেষ্টা ও অর্থ উপদেষ্টার অনুমোদন পেলে তাদেরও কর ফাঁকি খতিয়ে দেখা হবে। দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, প্রভাবশালী ৫ ব্যবসায়ীর সঙ্গে আরও ৬ প্রভাবশালী কর ফাঁকির অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। এরা হলেন-ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার (এসকে) সুর চৌধুরী ও সাংবাদিক দম্পতি শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রুপা। ইতোমধ্যে তাদের লেনদেনের তথ্য চেয়ে দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠানো হয়েছে। অনুসন্ধানের আওতায় আসা ব্যক্তিদের জমি, বাড়ি, গাড়ি, ফ্ল্যাটসহ স্থাবর সব সম্পত্তির আয়কর নথি ও তাদের বাস্তব সম্পত্তির সরেজমিন তদন্ত করা হবে। সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে অর্ধশতাধিক ব্যক্তির তালিকা করা হয়েছে। এ তালিকায় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ আছে। যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় ক্ষমতার অপব্যবহার, ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার ও কর ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে। এ তালিকা অনুমোদনের জন্য অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানের কাছে পাঠানো হয়েছে। সবুজ সংকেত পেলেই ধাপে ধাপে ওই ব্যক্তিদের কর ফাঁকির অনুসন্ধান করা হবে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে বিজনেস টাইকুন হয়ে ওঠা ৫ শিল্পপতির আয়কর ফাঁকি অনুসন্ধান চলছে। এ তালিকায় আছেন-সদ্য পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিষয়ক উপদেষ্টা এবং বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমান, নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিম।

অন্যদিকে কর অঞ্চল-১৫ থেকে আরেক ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম ও তার পরিবারের কর ফাঁকি অনুসন্ধান করছে। গত ১৫ আগস্ট এস আলমের (সাইফুল আলম) স্ত্রী ফারজানা পারভীন, মা চেমন আরা বেগম এবং ভাই আবদুল্লাহ হাসানের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের পিতা-মাতা, স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, ভাই বা বোনের যৌথ নামে অথবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছে।

এছাড়া তাদের নামে থাকা ক্রেডিট কার্ড, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর ও ডাক বিভাগের কাছে থাকা হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছে। ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, গত সোমবার পর্যন্ত এক লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা ডিপোজিট হয়েছে এস আলমের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক স্থিতি আছে ৩২ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।

প্রসঙ্গত, এর আগেও সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরীর কর ফাঁকির অনুসন্ধান করে সিআইসি। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার (এসকে) সুর চৌধুরী ও তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী বিনিয়োগের তথ্য গোপন করে পৌনে দুই কোটি টাকা আয়কর ফাঁকি দিয়েছেন। কর ফাঁকি দিতে তারা মেয়ে নন্দিতা সুর চৌধুরীকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করেন। মেয়ের অ্যাকাউন্টে তারা বিশাল অঙ্কের লেনদেন করেছেন। এছাড়া সুপর্ণার রয়েছে সাড়ে তিন কেজির বেশি স্বর্ণ। বিভিন্ন ব্যাংকে তার অ্যাকাউন্টে নগদ অর্থ ও অর্ধকোটি টাকার সঞ্চয়পত্র রয়েছে। এত বিপুল অঙ্কের সঞ্চয়পত্র কিনলেও তার পুরোটা তিনি আয়কর রিটার্নে না দেখিয়ে কর ফাঁকি দিয়েছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম