Logo
Logo
×

শেষ পাতা

শ্রমিক বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ

গাজীপুর ও আশুলিয়ায় ৬৫ কারখানায় ছুটি

বেশির ভাগ কারখানায় উৎপাদন স্বাভাবিক

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

গাজীপুর ও আশুলিয়ায় ৬৫ কারখানায় ছুটি

বিভিন্ন দাবিতে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকরা মঙ্গলবারও টঙ্গী, গাজীপুর, আশুলিয়া, শ্রীপুরের কিছু কারখানায় বিক্ষোভ করে আশপাশের সড়ক অবরোধ করেছেন। বিক্ষোভ ও কোথাও কোথাও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলে গাজীপুর জেলায় ২৫টি এবং আশুলিয়ায় ৪০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বেশির ভাগ কারখানায় স্বাভাবিক উৎপাদন হয়েছে। কারখানা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক পাহারা দিতে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :

গাজীপুর : কয়েকটি এলাকায় পোশাক কারখানার শ্রমিকরা মঙ্গলবার সকাল থেকে আবার বিক্ষোভ শুরু করেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলার ২৫টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। কারখানা বন্ধ ঘোষণা করায় দুপুরের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। সদর উপজেলার নতুন বাজার এলাকার এসএম নিটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকরা সকাল সাড়ে আটটায় কারখানায় ঢুকে হাজিরা বোনাসসহ ১০ দফা দাবিতে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। পরে অ্যাসরোটেক্স লিমিটেডের শ্রমিকরা দুপুর ১২টার দিকে কারখানার প্রধান ফটকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। এরপর এসএম নিটওয়্যার ও অ্যাসরোটেক্স লিমিটেডের শ্রমিকরা অ্যাপারেলস-২১ লিমিটেড ও গ্রিন ফাইবার কম্পোজিট কারখানার ফটকে গেলে ওই দুটি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ।

টঙ্গী শিল্পাঞ্চল (গাজীপুর) : গাজীপুরের টঙ্গীতে ১৫ দফা দাবিতে মঙ্গলবার যমুনা অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করেন। অন্যদিকে ১৩ দফা দাবিতে গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেজ ও ব্রাভো অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করে টঙ্গী-জয়দেবপুর সড়ক অবরোধ করেন। শ্রমিক বিক্ষোভে আরও তিনটি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। জানা যায়, মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা তিন দিন যাবত আন্দোলন করছিল এমট্রানেট গ্রুপের গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেজ ও ব্রাভো অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা। এতে এ দুটি প্রতিষ্ঠান সাধারণ ছুটির আওতায় ছিল। মঙ্গলবারও সকাল ৯টার দিকে ওই দুটি কারখানার শ্রমিকরা প্রথমে মেঘনা রোড এলাকায় কারখানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। সকাল ১০টার দিকে তারা পার্শ্ববর্তী যমুনা অ্যাপারেলসের গেটে গিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকলে কর্তৃপক্ষ কারখানাটি ছুটি ঘোষণার পর তারা নিজেদের কারখানার সামনে চলে যান। আশুলিয়ায় ৪০ কারখানায় ছুটি : শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় কয়েক দিন ধরে হাজিরা বোনাস বৃদ্ধি, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, টিফিন বিল বৃদ্ধিসহ নানা দাবিতে শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া সত্ত্বেও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মঙ্গলবার সকালে নির্দিষ্ট সময়ে শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করলেও কাজ না করায় আশুলিয়ার জামগড়া, নরসিংপুর, ঘোষবাগ এলাকার ৪০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া আরও ১০টি কারখানায় শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করেছেন বলে জানিয়েছে শিল্প পুলিশ। সরেজমিন দেখা গেছে, এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

সকাল থেকে বেশ কয়েকটি কারখানায় কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন কারখানার সামনে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান, র‌্যাব, পুলিশের রায়ট কার। কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। আশুলিয়ার বিভিন্ন সড়কে সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা টহল দিচ্ছেন।

জনরন সোয়েটার কারখানার এইচআর অ্যাডমিন অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স ম্যানেজার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, বিজিএমইএ’র নির্দেশনা মেনে আমরা কারখানা পরিচালনা করছি। এর মধ্যে হঠাৎ করে বহিরাগত কিছু লোকজন কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের লিঙ্কিং এবং ট্রিমিং শাখা ছুটি ঘোষণা করা হলেও অন্যান্য শাখায় কাজ চলছে।

আশুলিয়ার ফাউন্টেইন গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডের এমব্রয়ডারি অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মিজানুর রহমান সুমন বলেন, এতদিন অস্থিরতা বিরাজ করছিল, আমরাও উৎকণ্ঠার মধ্যে ছিলাম। বিজিএমইএ ইতোমধ্যেই শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিয়েছে, শ্রমিকরাও ভালো সাড়া দিয়েছেন। আমাদের কারখানাসহ বেশির ভাগ কারখানা চালু রয়েছে। পোশাক শিল্প নিয়ে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র ছিল, আমার মনে হয় সেটা কেটে গেছে। এখন আমরা পূর্ণোদ্যমে কাজ করতে পারব।

শ্রীপুরে ৩ কারখানা বন্ধ : গাজীপুরের শ্রীপুরে বেতন, হাজিরা বোনাস বৃদ্ধি ও শ্রমিক নির্যাতন বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে লাঠিসোঁটা নিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিক্ষোভ করছে কয়েক হাজার শ্রমিক। এ সময় শ্রমিকদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন। আন্দোলনরত শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে তিনটি কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে শ্রীপুর পৌরসভার গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার সকাল থেকে এসরোটেক্স গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে কারখানার ভেতর কাজ বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন করেন।

পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে তারা পার্শ্ববর্তী মেঘনা গার্মেন্টস এবং হাউআরইউ গার্মেন্টসে গিয়ে হামলা করে শ্রমিকদের বের করে নিয়ে যান। পরে তিনটি গার্মেন্টসের আন্দোলনরত শ্রমিকরা সম্মিলিতভাবে পুনরায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ শ্রমিকদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে আন্দোলনরতদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। এ সময় মেঘনা এবং হাউআরইউ কারখানা দুটি কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দেয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম