Logo
Logo
×

শেষ পাতা

সংবাদ সম্মেলনে সিপিডি

ব্যাংক খাতে ৯২ হাজার কোটি টাকা লোপাট

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ব্যাংক খাতে ৯২ হাজার কোটি টাকা লোপাট

দেশের পুরো ব্যাংক খাত নিয়মনীতির বাইরে চলে গেছে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। তারা বলেছে, এতদিন বিশেষ ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর প্রসারে কাজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হয়েও আইনের প্রয়োগ না করে বিশেষ গোষ্ঠীর তোষণ করেছে। ফলে গত এক দশকের বেশি সময় ব্যাংক খাতে ২৪টি বড় ধরনের কেলেঙ্কারি ঘটেছে। এসব কেলেঙ্কারিতে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা ব্যাংক থেকে বেরিয়ে গেছে। অতি দ্রুত এ খাতের সংস্কার ও জাল-জালিয়াতির বিচার করতে স্বাধীন ব্যাংক সংস্কার কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে সিপিডি।

সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা আনা, শিগ্গির কী করতে হবে’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এসব কথা বলেন। ১৫ বছরে শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে দেশের আর্থিক খাতের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। 

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিকভাবে লাইসেন্স পাওয়া তৃতীয় ও চতুর্থ প্রজন্মের কিছু ব্যাংক মৃতপ্রায় হয়ে আছে। এগুলোকে জনগণের করের টাকায় বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। এতে শুধু অর্থের অপচয় হচ্ছে। এসব ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাক বা এগুলো পুনর্গঠন করা হোক। এছাড়া কিছু ব্যাংকের পারফরম্যান্স খারাপ, আরেকটু ধাক্কা লাগলেই পড়ে যাবে। এগুলোর পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন করে পরিচালনার চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান এবং গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমও বক্তব্য দেন। 

ব্যাংক খাতের সমস্যা চিহ্নিত ও সমাধান করতে ব্যাংক কমিশন গঠন করার সুপারিশ জোর করেছে সিপিডি। তারা আরও বলেছে, ব্যাংক খাতে দ্বৈত প্রশাসন চলছে। এটি বন্ধ করতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করে দেওয়া উচিত। কেন্দ্রীয় ব্যাংককেও সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। এছাড়া কোনো ধরনের বিবেচনা ছাড়া লাইসেন্স দেওয়ার সংস্কৃতিও বন্ধ করতে হবে। ইতোমধ্যে যেসব লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর বিষয়েও পর্যালোচনা করতে হবে। 

সিপিডি বলেছে, চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপের হাতেই রয়েছে সাতটি ব্যাংক। এস আলম গ্রুপ একাই ইসলামী ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে। একসময় ইসলামী ব্যাংক ভালো ব্যাংক ছিল। দখলের পর তা মুমূর্ষু হয়ে গেছে। এছাড়া একক গ্রাহকের জন্য ঋণসীমা নীতি লঙ্ঘন করে জনতা ব্যাংক অ্যানন টেক্স গ্রুপকে দিয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। এভাবে একক গোষ্ঠী যদি এত বেশি ঋণ পায়, তাহলে অন্যরা কী পাবে?

বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে ফাহমিদা খাতুন বলেন, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায়নি যে তাদের স্বাধীনতা নেই; যতটুকু আছে তারা এটা ব্যবহার করছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক বরং বিশেষ গোষ্ঠীর স্বার্থের কথা চিন্তা করে নীতিমালা করেছে। এর আওতায় অনেক সুদ মওকুফ হয়েছে। নানা ছাড় দেওয়া হয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনায়। এগুলোর সুবিধাভোগী একটি গোষ্ঠী। এতে ব্যাংক খাতের ক্ষতি হয়েছে।

সিপিডি আরও বলেছে, দুই বছর ধরে দেশের মানুষ উচ্চ মূল্যস্ফীতির কবলে ভুগছে। দরকার ছিল সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ নেওয়া। কিন্তু বিশেষ ব্যবসায়িক গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে সুদহার বাড়ায়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। এমন সময়ে সুদহার বাড়িয়েছে, যখন তা আর মূল্যস্ফীতিকে কমাতে পারছে না।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ হয়ে গেলে এর আওতায় থাকা ব্যাংক ও অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর পর্ষদ নিয়োগ দেওয়াসহ অন্যান্য কাজ কে করবে-এমন প্রশ্নের জবাবে ফাহমিদা খাতুন বলেন, অর্থ বিভাগ করবে। যেগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে, সেগুলো তারা করবে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা বাড়বে। একই সঙ্গে সংস্থাকে স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পৃথিবীর সব দেশেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক আছে। সেখানে কি আলাদা কোনো সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে এভাবে নিয়ন্ত্রণ করে? যেমনটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে করা হয়েছে। একসময় তো অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ তুলে দেওয়া হয়েছিল। পরে তা আবার চালু করা হয়েছে। এখন আবার তুলে দেওয়ার সময় এসেছে। এতে ব্যাংক খাতের জন্য আরও ভালো হবে। যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে স্বাধীনতা দেওয়া যায় এবং স্বায়ত্তশাসন দেওয়া যায়, সংসদের কাছে যদি জবাবদিহি করে, তাহলে এরকম দ্বৈতশাসন দরকার হয় না।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান, পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়ম হয় বলে অভিযোগ করে ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কীভাবে নিয়মকানুন না মেনে সরকারি ব্যাংকগুলোয় এমডি পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়, এর নজির তো ভূড়ি ভূড়ি রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্তিশালী করলে, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে পারলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের মতো দপ্তর না থাকলেও চলে। অতীতে যখন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ছিল না, তখন তো কোনো সমস্যা হয়নি।

স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেই সবদিক সামাল দিতে পারবে বলেও মনে করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। তার মতে এফআইডি বিভাগ বিলুপ্ত করার সময় এসেছে। একে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও তিনি মনে করেন। সিপিডির অভিযোগ, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকাণ্ডে নানা প্রভাব বিস্তারের জন্যই এফআইডি গঠন করা হয়েছিল।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, অর্থনৈতিক অবদানে সহযোগিতার জন্য ব্যাংকিং খাতকে বিশদ কাঠামোগত সংস্কার করা দরকার। এর জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা দরকার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা-তারা ব্যাংকিং খাত ও অর্থনীতির অন্যান্য খাতকে পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট হবে। পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচারবিশ্লেষণ না করে ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ করতে হবে।

অনিয়মের সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়ে ফাহমিদা খাতুন বলেন, ১৫ বছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নররা যেসব নীতিমালা গ্রহণ করেছেন, সেগুলো ব্যাংকিং আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যেসব ভালো চর্চা ছিল, সেগুলোকে পাশ কাটিয়ে বা নতুন নিয়ম তৈরি করে বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিয়েছেন তারা। এই অনিয়মের মাধ্যমে বিশেষ গোষ্ঠীর কাছে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ চলে গেছে। এর প্রতিটি ঘটনা তদন্ত হওয়া উচিত এবং যারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদেরও শাস্তির আওতায় আনা উচিত।

পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংকগুলোর পরিচালকদের মধ্যে যাদের আর্থিক লেনদেনের স্বচ্ছতার ঘাটতি আছে, তাদেরও পরিচালনা পর্ষদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করেছে সিপিডি। 

সিপিডি বলেছে, ২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৫ বছরে ২৪টি বড় ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে প্রায় ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

সিপিডির তথ্য অনুযায়ী, আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের ১২ শতাংশ বা জিডিপির দুই শতাংশের সমান। ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল-এ সময়ে ধুঁকতে থাকা ব্যাংকগুলোর পুঁজির জোগান দিতে সরকারকে সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে।

গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির এক রিপোর্টের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ২০০৭ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দেশ থেকে ৪৭০০ থেকে ৬৭০০ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ অবৈধভাবে পাচার করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা যায়, দেশের ব্যাংক খাতে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বহু অনিয়ম করা হয়েছে।

উদাহরণ হিসাবে বলা হয়েছে, অ্যানন টেক্স গ্রুপ নামে এক প্রতিষ্ঠানকে ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে জনতা ব্যাংক, যা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মোট পুঁজির এক-চতুর্থাংশের বেশি। আবার ২০১৭ সালে দেশের একটিমাত্র ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রাজনৈতিক প্রভাবে সাতটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মালিকানা বা নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

গভর্নরসহ জড়িতদের বিচার চায় সিপিডি : বিগত বছরগুলোয় বড় বড় অন্তত ২৪টি আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় গভর্নরসহ জড়িতদের বিচার চেয়েছে সিপিডি। ১৫ বছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্তরা বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়ার জন্য অনেক নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। ফলে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশাসনিক দায়িত্ব যারা পালন করেছেন অর্থাৎ গত ১৫ বছরে গভর্নর যারা ছিলেন, তারা যেসব নীতিমালা নিয়েছেন, ওইগুলো ব্যাংকিং নর্মসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তারা বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়ার জন্য অনেক নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। ফলে বিশেষ গোষ্ঠীকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিটি কেস তদন্ত হওয়া উচিত। এর সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন, তাদের শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলছে। ২০০৯ সালে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি নিয়ে এখনো তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ করার জন্য সিআইডি ৭৯ বার সময় নিয়েছে। আমরা চাই, ওই তদন্ত প্রতিবেদন উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বারবার পুনঃতফশিল করার কারণে ঋণখেলাপির পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে, এটা বন্ধ করতে হবে। ২০১২ সালের হলমার্কের ঋণ কেলেঙ্কারিতে দেখেছিলাম অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা দুর্বল ছিল, এখনো বিভিন্ন ব্যাংকে তা রয়ে গেছে। 

২০২১ সালের তথ্যানুসারে ১১টি ব্যাংকের তথ্য-উপাত্ত গবেষণা করে বলেছিলাম শক্তিশালী প্রশাসক নিয়োগের সুপারিশ করছি। অনেকগুলো মৃতপ্রায়। এগুলো বেঁচে থাকার কথা নয়। ওইগুলো বন্ধ করা উচিত। যেগুলো দুর্বল রয়েছে, সেগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন করে যথাযথভাবে ঠিক করতে হবে। না হলে সক্রিয় করা সম্ভব নয়।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, অনেক আর্থিক মামলা আদালতে পড়ে আছে। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আর্থিক আদালতে মামলার সংখ্যা ৭২ হাজার ৫০০টি। টাকার পরিমাণ ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা। ২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করে আর্থিক কেলেঙ্কারি খুঁজে বের করা প্রয়োজন। গবেষণায় দেখিয়েছিলাম ২৪টি আর্থিক কেলেঙ্কারি হয়েছে, যার পরিমাণ ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা।

ব্যাংকগুলো মার্জ হওয়ার পূর্বশর্ত হলো অডিট করে ফিন্যান্সিয়াল অবস্থা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করে দেখা। পরিচালনা পর্ষদের সদস্য নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু ক্যাটাগরি ঠিক করে দিতে হবে।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম