বেদখল বনভূমি উদ্ধারে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি সংগৃহীত
দেশের বনাঞ্চল দিন দিন সংকুচিত হয়ে আসছে। সারা দেশে বনের জমির দুই লাখ ৫৭ হাজার ১৫৮ দশমিক ৮৪ একর বেদখল হয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ ৩৮ হাজার ৬১৩ একর সংরক্ষিত বনের। সংরক্ষিত বনভূমির দখলদার চিহ্নিত হয়েছে ৮৮ হাজার ২১৫ জন। বনের এসব জমি দখল করে করা হয়েছে শিল্প-কারখানা, রিসোর্ট, বসতভিটা। আবার অনেক জায়গায় বনের জমি দখল করে চলছে চাষাবাদ।
জানা গেছে, প্রভাবশালীদের নাম থাকায় বনের জমি উদ্ধার হয় না। বিশেষ করে চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের বনভূমি চরমভাবে হুমকির মুখে। সেখানে বন বিভাগও অবৈধ দখলদার ও বনখেকোদের বিরুদ্ধে শক্ত কোনো অবস্থান নিতে পারছে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মামলা-মোকদ্দমা করে দায় শেষ করছে তারা। আইনি প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতার ফলে বনের জমি দখল ও গাছ উজাড় হয়ে যাচ্ছে ঠিকই।
সোমবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত ‘জলবায়ু পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক থিমেটিক কমিটির সভার আলোচনায় উঠে আসে এসব তথ্য।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কমিশনের সদস্য ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, পিকেএসএফ-এর পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদ, সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী মোহাম্মদ সামসুদ্দোহাসহ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং বন অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ১৪টি আলোচ্যসূচির ওপর আলোচনা হয়; আলোচনায় সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর কমিশনের থিমেটিক কমিটির পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু সুপারিশ পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
কনফারেন্স অব পার্টিজ-২৯ (কপ-২৯) এর প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত তা নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় আরও আলোচনা হয় যে, অতিবৃষ্টি ও বন্যা মোকাবিলাসহ অতিবৃষ্টির পানি ধরে রাখতে ও পরিবহণ করতে হাওড় ও নদী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু ক্রমাগত অপরিকল্পিত উন্নয়ন, নদী-হাওড়-বিল দখল ও ভরাট, নদীর নাব্য সংকট, অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, জমি ভরাট ও পূর্ব-পশ্চিমে আড়াআড়ি মহাসড়ক নির্মাণ বন্ধ করতে কমিশন সরকারের কাছে একটি প্রস্তাবনা পাঠাবে।
বায়ুদূষণ রোধে সরকারি উদ্যোগে পরিচালিত অবকাঠামোগত নির্মাণকাজ যথাযথ পদ্ধতি ও নীতিমালা মেনে পরিচালনার প্রতি কমিশন জোর আরোপ করে। এছাড়া সীমান্তঘেঁষা ৩৫টি জেলায় ‘পার্থেরিয়াম’ আগাছার বিস্তার খাদ্য নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি বলে জানানো হয়। এ আগাছার বিস্তার রোধ করতে জেলা প্রশাসন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সিভিল সার্জন দপ্তর, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে সচেতনতা সৃষ্টি ও প্লান্ট কোয়ারেন্টাইনের বিষয়ে নির্দেশনা দিতে সভায় সবাই ঐকমত্য প্রকাশ করেন।