Logo
Logo
×

শেষ পাতা

দ্রব্যমূল্য নিয়ে সংসদে ক্ষোভ

সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেই

Icon

সংসদ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেই

আওয়ামী লীগের এত উন্নয়ন ও অর্জনের পরও বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করায় সরকার বিপদের মধ্যে আছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সংসদ-সদস্যরা। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেছেন, মানুষের মধ্যে হাহাকার চলছে। সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে গরিব মানুষের কাছে নিত্যপণ্যকে সহজলভ্য করা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। কিন্তু সিন্ডিকেট ভাঙা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মতো ক্ষমতা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেই।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২৪ পাশের সময় আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ-সদস্যরা এ কথা বলেন। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বিলটি পাশের জন্য সংসদে উত্থাপন করেন। পরে বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাশ হয়। নতুন আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সচিব পদের নাম হবে পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ)।

বিলের ওপর সংশোধন আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ হচ্ছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা। টিসিবি নামে একটা সংস্থা আছে, যারা বাজারে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি করে। উপজেলা পর্যায়ে দেখেছি একটা কার্ড দেওয়া হয়েছে, এটি দিয়ে পাঁচ-ছয়টা পণ্য কিনতে হবে। অনেক মানুষ এটা নিতে পারে না। যার যেটা প্রয়োজন নেই, সেটাও টিসিবির কাছ থেকে নিতে হবে। এটা হচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ!

যেখানে যা প্রয়োজন নেই, সেটাও নিতে হবে, যা প্রয়োজন তাও নিতে হবে। এ আইনটি না এনে বাজার নিয়ন্ত্রণ করার কোনো আইন নিয়ে আসতেন, সিন্ডিকেট ভাঙার মতো কোনো আইন আনতেন, তাহলে মনে করতাম বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভালো কোনো কাজ করছে।

হাফিজ উদ্দিন আরও বলেন, বিভিন্ন সময় তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। যখন তারা যান, তখন বাজারটা ঠিক আছে। কিন্তু তারা চলে এলে আবার যে অবস্থায় ছিল, সেই অবস্থায় চলে যায়। দ্বিগুণ বাড়ে। বাজারে সব পণ্যের দাম বেড়েছে দাবি করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ওষুধের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। কোম্পানিগুলো কোটি কোটি টাকা লাভ করে কোথায় নিয়ে যাবে জানি না। ওষুধ কোম্পানিগুলো শুল্ক ফাঁকি দিয়ে, কম শুল্ক দিয়ে কাঁচামাল নিয়ে আসে; কিন্তু আমাদের দেশে দাম বেশি। ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করা গেলে মানুষ সুচিকিৎসা পেত। আইন করে ক্যানসারের ওষুধের দাম, কিডনি চিকিৎসা ব্যয় কমানোর কথা বলা হচ্ছে। এ কোম্পানিগুলো কি বাইরের। এটা কি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। আমাদের দেশি মালিক। এদের কি বিবেক নেই। কত শতাংশ লাভ করতেছে? ১০০ শতাংশ লাভ করে। যারা দোকানে বিক্রি করে ৩০-৪০ শতাংশ কর দেয়। অনেক ওষুধের মধ্যে দাম লেখা থাকে না। সেজন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করব বাজার নিয়ন্ত্রণ করুন। মানুষের যে হাহাকার অবস্থা।

স্বতন্ত্র সদস্য পংকজ নাথ বলেন, বিলটিতে জনগণের স্বার্থ নেই। এখানে শুধু শব্দের পরিবর্তন। জনগণের স্বার্থ তখনই থাকত, যদি ট্যারিফ কমিশনের দায়িত্ব ভোগ্যপণ্য, নিত্যপণ্যের দাম নির্ধারণ, বাজারে সহজলভ্যতা, আমদানি ও উৎপাদন সমন্বয় করে মানুষের কাছে সহজে পৌঁছে দেওয়া। সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে গরিব মানুষের কাছে নিত্যপণ্যকে সহজলভ্য করা। সেক্ষেত্রে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে ট্যারিফ কমিশনের কাজ বাড়াতে। ট্যারিফ কমিশন তা না করে সংসদের সাড়ে তিনশ সদস্যকে ডেকে এনে প্রধানমন্ত্রীকে সামনে রেখে একটি শব্দ পরিবর্তন করে অর্থের অপচয় করা হচ্ছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম