সৈয়দপুর বিমানবন্দর
অরক্ষিত রানওয়েতে শিয়াল, যাত্রীদের মাঝে আতঙ্ক
নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সুউচ্চ সীমানাপ্রাচীরে ঘেরা নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরের রানওয়ে। রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তার পরেও নানা ঘটনায় অরক্ষিত হয়ে পড়েছে বিমানবন্দরের রানওয়ে। শুক্রবার সকালে রানওয়েতে শিয়াল ছোটাছুটি করায় যাত্রীবাহী একটি উড়োজাহাজ অবতরণ করতে পারছিল না। তাই বাধ্য হয়ে উড়োজাহাজ আকাশে ২৫ মিনিট ধরে চক্কর দিতে থাকে। এ সময় যাত্রীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে শিয়াল তাড়িয়ে উড়োজাহাজটি রাওয়েতে অবতরণ করে।
সূত্রমতে, সকাল ৮টা ১০ মিনিটে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট (ড্যাশ-৮ ডি) সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণের সময়সূচি ছিল। ফ্লাইটটি নামার পূর্ব মুহূর্তে পাইলট রানওয়েতে একটি শেয়ালের ছুটোছুটি দেখতে পান। তাই পাইলট ফ্লাইটটি অবতরণ না করে বিমানবন্দরের আকাশে চক্কর দিতে থাকে। এভাবে প্রায় ২৫ মিনিট ঘুরপাক খেলে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পাইলট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালে বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা শিয়ালটি তাড়িয়ে দেওয়ার পর পৌনে ৯টার দিকে ফ্লাইটটি অবতরণ করে।
ওই ফ্লাইটের যাত্রী আতিকুল ইসলাম জানান, এ বিমানবন্দরে রানওয়েতে অবতরণ করতে গিয়ে পাইলট উড়োজাহাজটি আবার উপরে তোলেন। এরপর ২৫ মিনিট ধরে আকাশে ঘুরপাক খেতে থাকে। এ সময় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
কিছু দিন আগে বজ পাতে সৈয়দপুর বিমানবন্দরের রানওয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর বিমান অবতরণ করে। রানওয়েটি ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় বিপর্যয় ঘটেছিল নিয়মিত ফ্লাইটের শিডিউল। এছাড়াও গত ২২ মে বিকালে হঠাৎ রানওয়ের ৫৭টি বাতি বিকল হয়ে যায়। বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ত্রুটি খুঁজতেই লেগে যায় ২২ ঘণ্টা। গত ২৮ মে রানওয়েতে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট অবতরণের পর সামনের চাকা বিকল হয়ে যায়। বিমানটি থেমে যাওয়ায় বড় দুর্ঘটনা থেকে যাত্রীরা রক্ষা পান।
সরেজমিন দেখা গেছে, এ বিমানবন্দরের দুই কিলোমিটার রানওয়ে ১৫ ফুট উঁচু প্রাচীরে ঘেরা। তার ওপর রয়েছে তিন ফুট তারকাঁটার বেড়া। এর মধ্য দিয়ে কোনোভাবেই মানুষ বা কোনো বহিরাগত প্রবেশ করতে পারবে না। তবে রানওয়ে ঘেঁষা পশ্চিম পাড়ার প্রাচীরের উপরের বিশাল অংশ বেড়াটি কাটা রয়েছে। ওই কাটা স্থান দিয়ে মানুষজন বিমানবন্দরের রানওয়েতে অবাধে প্রবেশ করতে পারে। কাটা ওই বেষ্টনি সহজেই দৃশ্যমান হলেও তাতে নজর দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। তাই এ বিমানবন্দরের রানওয়েতে নানা ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ভাবিয়ে তুলেছে স্থানীয় বিমান ব্যবহারকারীদের।
ফজলুর রহমান নামের একজন নিয়মিত বিমানযাত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচলে সৈয়দপুর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন এখানে গড়ে ১২ থেকে ১৪টি ফ্লাইট ওঠানামা করে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে ও নানা অনিয়মে সৈয়দপুর বিমানবন্দর গুরুত্ব হারাচ্ছে।
সৈয়দপুর বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক সুপ্লব কুমার ঘোষ বলেন, সমস্যাগুলো বড় কিছু না। ঘটনাটি জানার পর নিরাপত্তাকর্মীরা দ্রুত শিয়ালটিকে তাড়িয়ে দিয়েছে। আর এর আগের ঘটনাগুলো ছিল অনাকাক্সিক্ষত।