Logo
Logo
×

শেষ পাতা

মালটিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণে এমওইউ

চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগ করবে আবুধাবি গ্রুপ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

চট্টগ্রাম বন্দরে বিনিয়োগ করবে আবুধাবি গ্রুপ

চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনালে মালটিপারপাস কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চায় আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ। এক হাজার ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে এ টার্মিনাল নির্মাণে আবুধাবি গ্রুপের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে এ সমঝোতা স্মারকে সই করেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল এবং আবুধাবি পোর্টস গ্রুপের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সাইফ আল মাজরুই।

স্মারকপত্র অনুযায়ী, আরব আমিরাতের আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ মালটিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণে বিনিয়োগ করবে। তারা অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি যন্ত্রপাতিও সংগ্রহ করবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লা আলী আব্দুল্লা কাসিফ আল মৌদি, আবুধাবি পোর্টস গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল অফিসের রিজিওনাল চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার আহমেদ আল মুতায়া, আবুধাবি পোর্টস গ্রুপের বাংলাদেশের অংশীদার সাইফ পাওয়ার টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমিন প্রমুখ।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বে-টার্মিনাল নির্মিত হলে ২৪ ঘণ্টাই জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারবে। এখনকার মতো জোয়ার-ভাটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। এ টার্মিনাল নির্মাণ হলে চট্টগ্রাম বন্দর অন্য উচ্চতায় চলে যাবে। এ টার্মিনালের সঙ্গে সড়ক ও রেলপথ কানেকটিভিটি থাকবে। ফলে পণ্য পরিবহণ সহজ হবে।

তিনি বলেন, বিনিয়োগের জন্য শুধু আবুধাবি গ্রুপ নয়, সবার জন্য আমাদের জানালা খোলা আছে। দেশের যে কোনো বন্দরে বিনিয়োগের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেব। আমরা অল্প সময়ের মধ্যে মালটিপারপাস টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শুরু করতে চাই।

চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, বে-টার্মিনালে দুটি কনটেইনার টার্মিনাল, একটি মালটিপারপাস টার্মিনাল এবং একটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। এসব অবকাঠামো নির্মাণে ৮-১০ বিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন হবে। দেশি-বিদেশি উৎস থেকে এ অর্থের জোগান দেওয়া হবে। দেশের আইনকানুন মেনে এ টার্মিনালে বিনিয়োগ হবে। এটি হবে নতুন আধুনিক চট্টগ্রাম বন্দর। তিনি জানান, চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে বে-টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শুরু হবে। কাজ শুরুর ৪ বছরের মধ্যে প্রথম টার্মিনাল ব্যবহার উপযোগী হবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তারা জানান, বে-টার্মিনাল নির্মাণ হলে ১২ মিটার গভীরতার এবং ২৮৫-২৯০ মিটার দৈর্ঘ্যরে জাহাজ ভিড়তে পারবে। ওইসব জাহাজ প্রায় পাঁচ হাজার টিইউইএস কনটেইনার বহন করতে পারবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে ১০ মিটার গভীরতা ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে জাহাজ ভিড়তে পারে। এসব জাহাজের সক্ষমতা দুই হাজার ৪০০ টিইউইএস কনটেইনার।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী বে-টার্মিনালে এক হাজার ২২৫ মিটার দীর্ঘ দুটি কনটেইনার টার্মিনাল এবং এক হাজার ৫০০ মিটার দীর্ঘ একটি মালটিপারপাস টার্মিনালসহ মোট তিনটি টার্মিনাল রয়েছে। তিনটি টার্মিনালের দৈর্ঘ্য ৪.৯৫ কিলোমিটার। মাস্টার প্ল্যানে মোট ১১টি জেটি রাখার প্রস্তাব করা হয়। আবহাওয়া এবং সাগরের বড় বড় ঢেউ থেকে রক্ষা করতে একটি ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রেক ওয়াটার বা ঢেউনিরোধক বাঁধ নির্মাণ করা হবে।

বে- টার্মিনাল থেকে বহির্নোঙ্গরের দূরত্ব এক কিলোমিটার। মালটিপারপাস টার্মিনালটি চট্টগ্রাম বন্দর এবং আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ যৌথভাবে নির্মাণ করবে। দুটি কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে সিঙ্গাপুরের পিএসএ ও দুবাইয়ের ডিপি ওয়ার্ল্ডের বিনিয়োগ করার কথা রয়েছে। ৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ব্রেক ওয়াটার ও এক্সেস চ্যানেল ড্রেজিংয়ে অর্থায়ন করবে বিশ্বব্যাংক।

বে-টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য ৬৬.৮৫ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া সরকারের ৫০০.৬৯ একর খাস জমিও নেওয়া হচ্ছে। বছরে ৫০ লাখ কনটেইনার হ্যান্ডলিং লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ২০২৬ সালে এ টার্মিনাল অপারেশনে যাবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম