নেত্রকোনার হাওড়ে দ্রুত ধান কাটতে মাইকিং
কামাল হোসাইন, নেত্রকোনা
প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি:সংগৃহীত
নেত্রকোনায় নদ-নদীসহ হাওড়াঞ্চলে পানি বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আগামী ৩ মে থেকে দেশের উত্তর পূর্ব-অঞ্চল সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নেত্রকোনাসহ ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে হাওড়সহ নিুাঞ্চলের বোরো ধান হুমকির মুখে পড়বে। তাই দ্রুত পাকা ধান কেটে মাঠ থেকে বাড়িতে আনতে কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
সোমবার সকাল থেকেই স্থানীয় প্রশাসন, পাউবো ও কৃষি বিভাগ বিভিন্ন উপায়ে কৃষকদের এই পরামর্শ দিচ্ছে। অবশ্য কৃষি বিভাগ বলছে এরই মধ্যে হাওড়ের অধিকাংশ খেতের ধান কাটা হয়ে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ নূরুজ্জামান বলেন, ‘কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৩ মে থেকে দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের অনেক জায়গায় ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। তাই বৃষ্টিপাতের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে হাওড়ে বোরো ধান দ্রুত কাটার জন্য আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। যেসব ধান ৮০ শতাংশ পরিপক্ক হয়েছে। রোববার পর্যন্ত ৭০ শতাংশ খেতের ধান কাটা হয়েছে বলে জানান তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড নেত্রকোনা কার্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক মো. সারওয়ার জাহান বলেন, ‘আমরা হাওড়াঞ্চলের কৃষকদের দ্রুত ধান কাটতে পরামর্শ দিচ্ছি। কারণ আগামী ৩ মে থেকে জেলার নদ-নদী, হাওড়সহ নিুাঞ্চলে পানি বাড়বে। ফলে হাওড়ে সোনালি ধান কেটে দ্রুত ঘরে তোলার জন্য বলা হচ্ছে। এ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে সচেতনতামূলক ও অবহিতকরণ প্রচার করা হচ্ছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১০ উপজেলায় এ বছর ১ লাখ ৮৫ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়। এরমধ্যে হাওড়াঞ্চলে ৪১ হাজার ৭০ হেক্টর খেতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। বেশির ভাগ ধান ব্রি-২৮ ও ব্রি-৮৮সহ উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের।
মদনের উচিতপুরের কৃষক আরিফুল মিয়া বলেন, উচিতপুর হাওড়ে প্রায় ৮০ ভাগ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। এ বছর প্রচণ্ড রোদ থাকায় নিরাপদে ধান কাটা ও শুকানো যাচ্ছে। গবাদি পশুর খড়ও শুকিয়ে জমা করা হচ্ছে।’
ওই উপজেলার বাগজান গ্রামের কৃষক ফয়েজ আহমেদ বলেন, এ বছরের মতো এত শান্তিতে কৃষকরা খুব কম সময়ই ধান কেটেছেন। কারণ প্রতিদিন তীব্র রোদ হচ্ছে। অনেকে গরমে সইতে না পেরে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করছেন। কিন্তু আমরা বৃষ্টি চাই না। এখন বৃষ্টি হলে আমরার জন্য সর্বনাশ হয়ে যাবে।’