মধুখালীতে দুজনকে পিটিয়ে হত্যায় গ্রেফতার ১২
ফরিদপুর ব্যুরো
প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফরিদপুরের মধুখালীর ডুমাইন ইউনিয়নে মন্দিরে আগুনের গুজব ছড়িয়ে পাশের স্কুলে টয়লেট নির্মাণকাজ করা শ্রমিক দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তিন মামলায় ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে পলাতক রয়েছেন এলাকার চেয়ারম্যান ও মেম্বার। মঙ্গলবার রাত ৯টায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম।
ঘটনা পর গ্রেফতার চারজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন-পঞ্চপল্লী গ্র্রামের উজ্জ্বল কুমার বিশ্বাস, কামারখালী বাজারের বিনয় সাহা, জাননগর গ্রামের গোবিন্দ সরকার ও অনয় ভাদুরী। এদের মধ্যে উজ্জ্বল কুমার বিশ্বাস ও বিনয় সাহা আদালতে জবানবন্দিতে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
মঙ্গলবার বাকি আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। তারা হলেন-রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির আকশুকনা গ্রামের উজ্জ্বল কুমার মিত্র ও পুষআমলা গ্রামের বিশ্বজিৎ মল্লিক, সাধুখালী গ্রামের কনক বিশ্বাস, মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার মদনপুরের প্রসেনজিৎ সরকার, বড়ালীদহ গ্রামের সুজয় বিশ্বাস, মধুখালীর জিসনগরের তপন কুমার মন্ডল, তারাপুরের অনুপ রায় ও টুটুল চন্দ্র মন্ডল। এদের ১৬৪ ধারায় নাম উঠে এসেছে এবং ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে।
পুলিশের গুলিতে একজন নিহতের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, একজন ভ্যানচালক ওই বিক্ষোভের মধ্যে পড়েন। তিনি তখন ইটের আঘাতে মাটিতে পড়ে যান। এ সময় হয়তো পুলিশের ছররা গুলি তার লাগতে পারে। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন। পুলিশের ছোড়া ছররা গুলিতে আহত সোহেল রানা উপজেলার কামারখালীর উজানদিয়া গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে।
১৮ এপ্রিল রাতে ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীর কৃষ্ণনগর গ্রামে একটি কালী মন্দিরের কালীমূর্তির কাপড়ে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এতে মন্দিরসংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টয়লেট নির্মাণকাজের নির্মাণ শ্রমিকদের সন্দেহ করে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় দুই ভাই আরশাদুল ও আশরাফুল নিহত হন। তবে পুলিশ জানিয়েছেন, মন্দিরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় শ্রমিকদের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার স্থানীয় জনতার বিক্ষোভ সমাবেশ ও মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধের ঘটনা এবং পুলিশের সঙ্গে বিক্ষুব্ধদের সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। নিহতদের বাড়ি ও ঘটনাস্থল বুধবার পরিদর্শন করেছেন ফরিদপুর-১ আসনের সংসদ-সদস্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।