চট্টগ্রাম বন্দর
ঈদের লম্বা ছুটিতে জমল ৬ হাজার কনটেইনার
জরুরি পণ্য তাৎক্ষণিক নিতে পারছেন না আমদানিকারক
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ঈদের লম্বা ছুটিতে চট্টগ্রাম বন্দর সচল থাকলেও অনেক আমদানিকারক পণ্য ডেলিভারি না নেওয়ায় ইয়ার্ডে জমে যায় প্রায় ছয় হাজার কনটেইনার। এদিকে ছুটি শেষে ডেলিভারি শুরু হলে পণ্য নিতে গিয়ে বিপাকে পড়েন অনেক আমদানিকারক।
ইয়ার্ডে জমে যাওয়া শত শত কনটেইনার সরিয়ে ডেলিভারির কনটেইনারটি খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয় বন্দরের ট্রাফিক বিভাগকে। এ কারণে অনেক আমদানিকারক যথাসময়ে তাদের কনটেইনার বা পণ্য ছাড় করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন। জরুরি পণ্যটি তাৎক্ষণিক ভাবে নিতে না পারার খেসারত তাদের দিতে হচ্ছে লোকসান দিয়ে।
একাধিক আমদানিকারকের প্রতিনিধি যুগান্তরকে জানান, ঈদের ছুটির পর আমদানি পণ্যের শুল্কায়ন শেষে তারা বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি নিতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। ট্রাফিক বিভাগ তাদের চাহিদা ও সময়মতো পণ্য বা কনটেইনার ডেলিভারি দিতে পারছে না।
পরে শুল্কায়ন হওয়া পণ্য আগে ডেলিভারি দেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানানো হয়। ডেলিভারির ক্ষেত্রে যে স্পেশাল পারমিশন বা ‘বিশেষ অনুমতি’র বিধান রয়েছে পণ্য জমে যাওয়ায় সেই বিধানও শতভাগ কার্যকর করতে পারছে না ট্রাফিক বিভাগ। এ কারণে জরুরি পণ্যটি তাৎক্ষণিক নিতে না পেরে মারাত্মক সমস্যায় পড়ছেন আমদানিকারক।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক যুগান্তরকে বলেন, ঈদের ছুটিতে আমদানিকারকরা কনটেইনার বা পণ্য ডেলিভারি কম নিয়েছেন। তাই কিছু কনটেইনার স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেড়েছে। কিন্তু আমরা ডেলিভারি দিতে প্রস্তুত ছিলাম। কনেটইনার বাড়লেও তেমন সমস্যা হয়নি, কারণ এখন ইয়ার্ডের ধারণক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক বেশি। গত দুই দিন ধরে ডেলিভারি বেড়েছে জানিয়ে ওমর ফারুক বলেন, এখন দিনে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার কনটেইনার ডেলিভারি হচ্ছে।
তিনি জানান, কোনো কনটেইনার যদি অনেক কনটেইনারের নিচে চাপা পড়ে যায়, সেক্ষেত্রে উপরের কনটেইনারগুলো নামিয়ে সেটি বের করে আনতে কিছুটা সময় লাগে-এটা স্বাভাবিক। তা ছাড়া অনেক সময় সিরিয়াল ব্রেক করা যায় না। অর্থাৎ আগে শুল্কায়ন হওয়া পণ্য বা পেপার আগে ছাড়তে হয়। এ কারণেও অনেক সময় আমদানি পণ্য ডেলিভারিতে বিলম্ব হয়। এটা প্রক্রিয়াগত জটিলতা।
এবার ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের ছুটি মিলিয়ে টানা ৬ দিন ছিল সরকারি ছুটি। প্রতিবারের মতো এবারও চট্টগ্রাম বন্দর ঈদের ছুটিতেও চালু ছিল। জেটিতে জাহাজে পণ্য উঠানামা হয়েছে। কিন্তু যে পরিমাণ আমদানি কনটেইনার নামানো হয়েছে, সেই তুলনায় ডেলিভারি নেওয়া হয়নি। তাই ছুটির আগের দিন থেকে শুরু করে খোলার দিন পর্র্যন্ত ৮ দিনে ইয়ার্ডে প্রায় ৬ হাজার টিইইউএস (২০ ফুট সমমানের) কনটেইনার বেড়ে যায়।
সাধারণত ঈদের ছুটিতে বন্দর সচল থাকলেও ব্যাংক বন্ধ থাকে। সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও ছুটিতে চলে যান। কলকারখানায় ছুটি থাকায় আমদানিকারকরা ওই সময় কাঁচামাল ডেলিভারি নিতে চান না। এদিকে ঈদের ছুটিতে সড়কে পণ্যবাহী যান চলাচলেও থাকে নিষেধাজ্ঞা। এসব কারণে লম্বা ছুটিতে ডেলিভারি কমে যায়।
সূত্র জানায়, ৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দরে ৩৩ হাজার ৪১৭ টিইইউএস কনটেইনার ছিল। ১৬ এপ্রিল তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ৪৮৩ টিইইউএস। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে কনটেইনার ধারণক্ষমতা ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউএস।