Logo
Logo
×

শেষ পাতা

ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত

চাকরি হারানো এডিশনাল এসপির পদোন্নতি!

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

চাকরি হারানো এডিশনাল এসপির পদোন্নতি!

বহিরাগত তিন ব্যক্তিকে পুলিশের এসপিবিএনের (স্পেশাল সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রটেকশন ব্যাটালিয়ন) গোপন অস্ত্রাগারে নিয়ে গিয়েছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা মো. শাহেদ ফেরদৌস রানা। অস্ত্রাগারের সামনে থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সেই ছবি তারা সরাসরি প্রচারও করেন। তখন তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

এরপর তার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অপরাধে অভিযোগ গঠন করা হয়। চার বছর পর ২৫ বিসিএসের এই পুলিশ কর্মকর্তাকে গুরুদণ্ডের আওতায় যখন চাকরিচ্যুত করা হয়, তখন তিনি এসপি। বর্তমানে তিনি এই পদে খুলনা রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে কর্মরত।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অপরাধের পরেও তাকে পদোন্নতি দেওয়ার ঘটনায় পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে তোলপাড় চলছে। চাকরিচ্যুতির বিয়য়টি ছাপিয়ে সমালোচনা এখন পদোন্নতি নিয়ে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান ৯ এপ্রিল চাকরি থেকে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন।

পুলিশের একাধিক সিনিয়র কর্মকর্তা এ বিষয়ে যুগান্তরকে বলেন, শাহেদ ফেরদৌস রানা ফৌজধারি অপরাধ করেছেন। অথচ তাকে সিভিল ওফেন্সের (অসদাচরণ) অভিযোগ আনা হয়। সে যাই হোক, চার বছর পর গুরুদণ্ডের আওতায় তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন্ন হয় এমন অভিযোগ গঠনের পরও তাকে এসপি পদে পদোন্নতি দেওয়া হয় কীভাবে? বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। না হলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা হবে। বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৯ আগস্ট মো. শাহেদ ফেরদৌস রানা ইন্সপেক্টরসহ চার এসআইয়ের সহযোগিতায় বহিরাগতকে নিয়ে উত্তরার এসপিবিএন-১ অস্ত্রাগারে নিয়ে যান। অন্য অভিযুক্তরা হলেন-ইন্সপেক্টর (সশস্ত্র) গোলাম মোস্তফা, ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) সৈয়দ আনিসুর রহমান, এসআই (নিরস্ত্র) নুর-এ সরোয়ার রিপন, এসআই (সশস্ত্র) আবু সাঈদ; মো. ওবায়দুর রহমান এবং এসআই (সশস্ত্র) মানিক খান। ওই দিন অস্ত্রাগারের সামনে থেকে ওই তিন ব্যক্তি অস্ত্রের বর্ণনাসহ তা সরাসরি ফেসবুকে প্রচার করে।

উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা ফেসবুকে লাইভ করতে ওই তিন ব্যক্তিকে সহায়তা করেন। ২০২২ সালের ২৭ জুন এসপি রানার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা ২০১৮-এর বিধি ৭ (১) (খ) অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ অধিদপ্তর থেকে নথিপত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ওই বছরেরই ১৮ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় মামলা করে কারণ দর্শাতে বলা হয়।

তিনি ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশগ্রহণ করে জবাব দাখিল করেন। কিন্তু ঘটনাটির পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিচার বিশ্লেষণ করে গুরুদণ্ডের সুপারিশ করা হয়। অভিযুক্ত রানা তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ খণ্ডনের মতো কোনো যুক্তি বা প্রমাণ দাখিলে ব্যর্থ হয়েছেন। এরপরই তার বিরুদ্ধে গুরুদণ্ড হিসাবে চাকরিচ্যুত করা হয়।

দুই ইন্সপেক্টর তিন এসআইয়ের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি (ডিসিপ্লিন ও পারসোনাল স্ট্যান্ডার্ড) মো. বেলাল উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, ইন্সপেক্টর ও এসআইরা পৃথক ডিভিশনে তদন্তের সুপারিশ অনুযায়ী শাস্তির আওতায় আসবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম