সরকারি ঋণ আইন কার্যকর
সঞ্চয়পত্রের উত্তরাধিকার জটিলতায় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সঞ্চয়পত্রের মূল গ্রাহকের মৃত্যু হলে মনোনীত উত্তরাধিকার নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে, সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে যে সিদ্ধান্ত দেবে সে অনুযায়ী সঞ্চয়পত্রের মূল অর্থসহ মুনাফা বণ্টন করা হবে। এখানে কর্তৃপক্ষ বলতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সঞ্চয় অধিদপ্তরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় সম্মতির ভিত্তিতে বণ্টন নিশ্চিত হলে তা নিয়ে আদালতে কোনো অভিযোগ উপস্থাপন করা যাবে না।
সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে সরকারের ঋণ আইন ২০২২ এ এসব বিধান রয়েছে। এখন থেকে এ আইন প্রয়োগ করা হবে। এ বিষয়টি সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে। এর আলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে। একই সঙ্গে সঞ্চয় অধিদপ্তর থেকে এটি সব সঞ্চয় ব্যুরো অফিস ও ঢাকা থেকে ডাক বিভাগের শাখা অফিসগুলোতে পাঠানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে পাঠানো সার্কুলারে বলা হয়, এখন থেকে সরকারের ঋণ আইন ২০২২ এর সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। সে অনুযায়ী ব্যাংকগুলোকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, সঞ্চয়পত্রের মূল গ্রাহকের মৃত্যু হলে বা কোনো নমিনির মৃত্যু হলে সংশ্লিষ্ট সঞ্চয়পত্রের মালিকানা নিয়ে উত্তরাধিকারদের মধ্যে নানা ধরনের জটিলতার সৃষ্টি হয়। এতে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালতে গেলে এটি নিষ্পত্তি হতে অনেক সময় লাগে। এতে সঞ্চয়পত্রের উত্তরাধিকাররা সঞ্চয়ের অর্থ পেতে অনেক বিড়ম্বনায় পড়েন। ফলে সঞ্চয়পত্রের প্রতি মানুষের বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হচ্ছে। এ জটিলতা এড়াতে সরকারি ঋণ আইনে এ বিষয়গুলো স্পষ্ট করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সঞ্চয়পত্রের মূল ক্রেতার মৃত্যু হলে বা তার মনোনীত একাধিক নমিনির মধ্যে কোনো একজন নমিনির মৃত্যু হলে অবশিষ্ট নমিনির মধ্যে যদি সমঝোতা না হয়, তাহলে সঞ্চয় অধিদপ্তর বা বাংলাদেশ ব্যাংক প্রথমে বিষয়টি তদন্ত করবে। তারপর সঞ্চয়পত্রের দাবিদার সব পক্ষকে ডেকে ব্যক্তিগত শুনানি করবে। এর ভিত্তিতে প্রচলিত আইন অনুযায়ী সঞ্চয়পত্রের মালিকানা ও অঙ্কের বণ্টন নিশ্চিত করবে। এই প্রক্রিয়ায় সব পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হলে বিষয়টি নিয়ে আর আদালতে যাওয়া যাবে না। তবে সমঝোতা না হলে বা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত না মানলে আদালতে যেতে পারবে। এতে আরও বলা হয়, সঞ্চয়পত্র বন্ধক দিয়ে কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে থাকলে, আগে সেগুলো পরিশোধ করতে হবে। তারপর অবশিষ্ট যে অংশ থাকবে সেটা উত্তরাধিকারদের মধ্যে আনুপাতিক হারে বণ্টন করা হবে।
মূল ক্রেতার মৃত্যু হলে উত্তরাধিকারদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছেই রক্ষিত থাকবে। সেগুলো কেউ বা কোনো পক্ষ ভাঙিয়ে অর্থ তুলে নিতে পারবে না। গ্রাহক কোনো নমিনি নিয়োগ করে গেলে কেবল তারাই এর মালিক হবেন। অন্য কোনো ব্যক্তি উত্তরাধিকার সূত্রে এর দাবি করতে পারবেন না। তবে গ্রাহক কোনো নমিনি না করলে উত্তরাধিকাররা আনুপাতিক হারে সঞ্চয়পত্রের অংশ পাবেন।