প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম আর নেই
জন্ম: ৫ জানুয়ারি ১৯৫১ * মৃত্যু: ১০ মার্চ ২০২৪
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম হেলাল মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ... রাজিউন)। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ এ সাংবাদিকের বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। রোববার রাত ৮টা ১০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানান।
হৃদরোগ, শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিলতায় আক্রান্ত ইহসানুল করিম বিএসএমএমইউতে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি ওই হাসপাতালেই দীর্ঘদিন ধরে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুর পর রাতেই হাসপাতালে ছুটে যান তার সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরা।
তাদের মধ্যে ছিলেন-অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন এমপি, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সিনিয়র সাংবাদিক আতাউর রহমান, মনোজ কান্তি রায় প্রমুখ।
ইহসানুল করিম ২০১৫ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তার আগে ছিলেন রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব। ইহসানুল করিমের জন্ম ১৯৫১ সালের ৫ জানুয়ারি কুষ্টিয়ায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন। জাতীয় বার্তা সংস্থা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক ছিলেন তিনি। চার বছর ওই পদে থাকার পর ২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি অবসর নেন। এ সাংবাদিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি, ভারতের পিটিআই, দ্য স্টেটসম্যান ও ইন্ডিয়া টুডেসহ বিভিন্ন পত্রিকায় বাংলাদেশ প্রতিবেদক হিসাবেও কাজ করেছেন।
ইহসানুল করিমের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক জানিয়েছেন। এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, ইহসানুল করিমের মৃত্যুতে দেশ একজন অভিজ্ঞ সাংবাদিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং দক্ষ কর্মকর্তাকে হারাল। রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, দেশে সাংবাদিকতায় ইহসানুল করিমের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। রাষ্ট্রপতি মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
ইহসানুল করিমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবার্তায় সরকারপ্রধান বলেছেন, প্রেস সচিব হিসাবে তিনি অত্যন্ত সততা, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার মৃত্যুতে দেশের গণমাধ্যম হারাল একজন প্রিয় সহকর্মীকে আর আমি হারালাম একজন বিশ্বস্ত কর্মকর্তাকে। প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
ইহসানুল করিমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শোক জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু।
শোক জানিয়েছেন সরকারের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরাও। পৃথক শোক বার্তায় তারা ইহসানুল করিমের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং তার পরিবারের শোকসন্তপ্ত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। তার মৃত্যুতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ, যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মো. আব্দুল ওয়াদুদ, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী শোক জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম হেলালের প্রথম জানাজা আজ সকাল ৮টায় এলেন বাড়ি জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় জানাজা বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এবং তৃতীয় জানাজা বনানী কবরস্থানে বাদ জোহর অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বনানী কবরস্থানে লাশ দাফন করা হবে।