Logo
Logo
×

শেষ পাতা

নর্থ সাউথ শিক্ষার্থীর মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন

রহস্য উদ্ঘাটনে জোরালো ভূমিকা নেই পুলিশের

ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির তিন শিক্ষার্থী আত্মগোপনে

Icon

মতিউর রহমান ভান্ডারী, সাভার (ঢাকা)

প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রহস্য উদ্ঘাটনে জোরালো ভূমিকা নেই পুলিশের

ছোট ভাই-বন্ধুদের মেসে বেড়াতে এসে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির মার্কেটিং বিভাগের বিবিএ-এর ছাত্র আবির মাশরুর ডায়মন্ডের মৃত্যুর আজ সাতদিন। রহস্যজনক এ মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের তৎপরতা দৃষ্টিতে না আসায় স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যদের মনে ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্ন জমেছে। তাদের মতে, ডায়মন্ডকে পরিকল্পিত হত্যা করে পাঁচতলা ভবনের ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়। আর যে শিক্ষার্থীরা এ পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত, তাদের বাবা পুলিশ সদস্য হওয়ায় হত্যাকাণ্ডের বিষয়টিকে অপমৃত্যুর অপপ্রচারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ডায়মন্ডের মৃত্যুর পরদিন ওই মেসের তিন শিক্ষার্থী আত্মগোপনে চলে যায়। এ বিষয়ে পুলিশে জোরালো কোনো ভূমিকা দেখা যায়নি। পাশাপাশি অপমৃত্যুর মামলাটিও আদালতে পাঠানো হয়নি পুলিশের পক্ষ থেকে। যে কারণে তাদের মনে এসব প্রশ্ন জায়গা করে নিয়েছে। আর এসব প্রশ্নের উত্তর সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে-এটাই তাদের প্রত্যাশা।

সাভার থানা পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, ডায়মন্ডের মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। তদন্ত শেষে কোনো কর্মকর্তার ছেলের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে। যতক্ষণ ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এবং কয়েকটি মোবাইল ফোনের কথোপকথন হাতে না পাব, ততক্ষণ এ রহস্য উন্মোচনে কিছুটা সময় লাগবে। নিহত আবির মাশরুর ডায়মন্ড বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার লতিফপুর মধ্যপাড়ার মো. মিজানুর রহমানের ছেলে। সাভারের খাগান এলাকায় আব্দুল জলিলের ৫তলা ভবনের কেয়ারটেকার শেখ মজিদ যুগান্তরকে বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে আবির মাশরুর আমার রুমের সামনে বিকট শব্দে পড়ে। ঘুম থেকে উঠে দেখি ডায়মন্ড ভবনের কাছাকাছি মাটিতে পড়ে আছে। আত্মহত্যার জন্য ৫তলার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়লে আরও দূরে পড়ার কথা। দেখে মনে হচ্ছিল ছাদের ওয়ালের কার্নিশ বেয়ে নিচে পড়েছিল সে। পরে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় সাভার থানার উপপুলিশ পরিদর্শক ও বিরুলিয়া ফাঁড়ি ইনচার্জ মো. দিদার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি এ বিষয়ে কোনো খোঁজ নিতে আসেননি।

বিরুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ মো. দিদার হোসেন যুগান্তরকে বলেন, অপমৃত্যুর অভিযোগে ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। আর এ মামলার তদন্ত করে যদি অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, তাহলে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপমৃত্যুর মামলাটি সাতদিনেও আদালতে প্রেরণ না করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী সবকিছু করা হবে।

মেসের সদস্য শিক্ষার্থী রাসেল আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টার দিকে আবির মাশরুর ডায়মন্ড আমাদের বাসায় পৌঁছায়। রাতের খাবার শেষে আমরা সবাই শুয়ে পড়ি। এই ফাঁকে সে রুমের দরজা খুলে ছাদে চলে যায়। আমরা দ্রুত তার পেছনে পেছনে ছাদে যাওয়ার আগেই সে ছাদ থেকে লাফিয়ে মাটিতে পড়ে। তিনি বলেন, পারিবারিক কলহ অথবা প্রেমঘটিত কারণে সে আত্মহত্যা করতে পারে।

ডায়মন্ডের খালা শিক্ষিকা কুইন মন্ডল জানান, ডায়মন্ডকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এজন্যই ওই মেসের তিন শিক্ষার্থী আত্মগোপনে রয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশের জোরালো কোনো ভূমিকা নেই। অপরাধীরা প্রভাবশালীর সন্তান হওয়ায় এ মামলায় অগ্রগতি হচ্ছে না।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম