আজ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জাতীয় সমাবেশ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আজ বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৪৪তম জাতীয় সমাবেশ। নানা আয়োজনে দিবসটি উদ্যাপনে গাজীপুরের সফিপুরে আনসার ও ভিডিপি একাডেমিতে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসাবে সালাম গ্রহণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন।
এ সময় উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম উদ্দিন, আনসার ও ভিডিপি একাডেমির কমান্ড্যান্ট মো. নূরুল হাসান ফরিদী, বাহিনীর উপমহাপরিচালক, অন্যান্য কর্মকর্তা ও আনসার-ভিডিপি সদস্যরা।
এছাড়া আরও উপস্থিত থাকবেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ-সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান, সিনিয়র সচিবসহ বিভিন্ন বাহিনীর প্রধান, কূটনৈতিক ব্যক্তি, সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ঊর্ধ্বতন ব্যক্তি এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা।
১৯৪৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি আনসার বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজধানীসহ সমতল ও পার্বত্যাঞ্চলসহ তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত এ বাহিনীর সদস্যরা। প্রতিষ্ঠার পর হতে এ বাহিনীর সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, জননিরাপত্তা ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে দায়িত্ব পালন করছেন।
আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর দুটি পূর্ণাঙ্গ মহিলা আনসার ব্যাটালিয়ন এবং বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নসহ (এজিবি) ৪২টি ব্যাটালিয়ন রয়েছে। পার্বত্যাঞ্চলে ১৬টি ব্যাটালিয়নের সদস্যরা অপারেশন উত্তরণ-এ যৌথ ও একক ক্যাম্পে দেশের অখণ্ডতা রক্ষা, পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রীতি রক্ষা এবং সন্ত্রাস দমনে দায়িত্ব পালন করছেন। এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় ১৯ সদস্য আত্মোৎসর্গ করেছেন। এছাড়া পার্বত্যাঞ্চলের হিল আনসার ও হিল ভিডিপি সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা জাতীয় সংসদ সচিবালয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, রাষ্ট্রীয় তোশাখানাসহ সমতল এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ মোবাইল কোর্ট ও ভেজালবিরোধী অভিযান, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন, চোরাচালান রোধ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প, মেট্রোরেল, পায়রাবন্দরসহ প্রেষণে এসএসএফ, র্যাব, এনএসআই, ডিজিএফআইয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। কূটনৈতিক জোন ও বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছেন আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের (এজিবি) সদস্যরা।
বর্তমানে দেশের বিমানবন্দর, ইপিজেডসহ গুরুত্বপূর্ণ ৫ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তায় প্রায় ৫৫ হাজার অঙ্গীভূত আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব ঈদ, পূজা-পার্বণসহ বর্ষবরণ, শপিংমল, বাণিজ্যমেলা ও বইমেলা, রেল স্টেশন, ট্রাফিক কন্ট্রোলসহ প্রভৃতি ক্ষেত্রে সাধারণ আনসার সদস্যরা জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ব্যালট বাক্স, ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও ভোটারদের শৃঙ্খলভাবে ভোটদান নিশ্চিত করতেও তারা দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২৩-২৪ সালে ‘অপারেশন সুরক্ষিত যাতায়াত’র অধীনে কনকনে শীত ও ঘন কুয়াশার মধ্যে রেললাইনের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলাসহ অগ্নিনির্বাপণ, উদ্ধার তৎপরতা, অগ্নিদগ্ধ জনগণের চিকিৎসা সহায়তা, উদ্ধারকর্মীদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে এ বাহিনীর সদস্যরা ইতঃপূর্বেও সহমর্মিতার পরিচয় দিয়েছেন। গ্রামাঞ্চলে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা, বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে কাজ করছেন। এছাড়া বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি দেশের সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছেন।
১৯৭৬ সালে বর্তমান অবস্থানে এ বাহিনীর একাডমির গোড়পত্তন হয়। ধাপে ধাপে বর্তমান রূপ পায়। ১৯৯৬ সালে নামকরণ হয় আনসার-ভিডিপি একাডেমি। এখানে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রশিক্ষক, আনসার ব্যাটালিয়ন, মহিলা আনসার ও সাধারণ আনসারসহ ভিডিপি সদস্যদের মৌলিক, পেশাভিত্তিক, আধুনিক কারিগরিসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এছাড়া সারা বছর যুগোপযোগী বিভিন্ন ট্রেডে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এখানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়াক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের লক্ষ্যে বাহিনীর ক্রীড়াবিদদের বিভিন্ন ইভেন্টে নিয়মিত আধুনিক অনুশীলনের ব্যবস্থা রয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।