আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা
যমুনার টিভি এসি মোটরসাইকেলে আকর্ষণীয় ছাড়
এ হাই মিলন, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
যমুনার টিভি এসি মোটরসাইকেলে আকর্ষণীয় ছাড়
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় দেশীয় পণ্যের স্টলগুলোয় ক্রেতাদের ভিড় সবচেয়ে বেশি। বিক্রিতে খুশি ব্যবসায়ীরা। সবচেয়ে বেশি আগ্রহ দেখা গেছে পাটপণ্যে। মেলা ঘুরে দেখা যায়, উত্তরপ্রান্তে কুঁড়েঘর আকারে পাটজাত পণ্যের প্যাভিলিয়ন। এর ভেতরে রয়েছে ৪০টি স্টল। উদ্যোক্তারা তাদের তৈরি পাটের ব্যাগ, শোপিস, শতরঞ্চি, কার্পেট এবং বিভিন্ন পাটজাত পণ্যের সমাহার করেছেন। পণ্যভেদে রয়েছে নানা অফার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানিতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পাটজাতপণ্য। তাই এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে তৈরি করতে হবে আরও নতুন উদ্যোক্তা।
এদিকে মেলায় যমুনা ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড অটোমোবাইলসের প্যাভিলিয়নে টেলিভিশন, এসি, মোটরসাইকেল ক্রয়ে চলছে আকর্ষণীয় ছাড়। যমুনা অটোমোবাইলসের ম্যানেজার রাজিব সাহা জানান, তাদের প্যাভিলিয়নে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সমাগম অনেক বেড়েছে। যমুনার নতুন নতুন পণ্যের ওপর ক্রেতাদের কৌতূহল সব সময়ই থাকে। তাই গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে বাণিজ্যমেলায় যমুনা সব সময় নতুন নতুন পণ্য নিয়ে আসে।
মেলায় আগত হাজী একলাছ উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক জিয়াউর রাশেদ বলেন, আমার পছন্দ যমুনার পণ্য। যমুনা ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী সব সময় নতুন নতুন প্রোডাক্ট বাজারে নিয়ে আসছে।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, গ্রাহকরা স্বাচ্ছন্দ্যে যমুনা ইলেকট্রনিক্স এবং অটোমোবাইল পণ্য কিনছেন।
প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখা যায়, টিভি, এসি, মোটরসাইকেল বুকিংয়ে ব্যাপক ছাড় মিলছে।
এদিকে পাটপণ্যের প্যাভিলিয়নসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা মোতালিব ভুইয়া বলেন, একসময় পাটশিল্প উৎপাদন ও রপ্তানিতে ছিল দেশের সবচেয়ে বড় খাত। সোনালি সেসময় ফুরিয়ে গেলেও বর্তমানে বিশ্ববাজারে আবার বাড়ছে পাটজাত পণ্যের চাহিদা। ফলে প্রতিবারের মতো ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় পাটজাত পণ্যের স্টলগুলোয় ভিড় চোখে পড়ার মতো। বৈচিত্র্য আর ভিন্ন আমেজ নিয়ে আসায় বেড়েছে পাটপণ্যের চাহিদা।
ক্রেতারা বলছেন, পাট আমাদের দেশীয় পণ্য। তাই এটার প্রতি আমাদের আগ্রহ একটু বেশি। আর দামও হাতের নাগালে। সব থেকে বড় ব্যাপার-পাটপণ্যের মান দিনদিন বাড়ছে।
আড়াইহাজার থেকে মেলায় আসা গৃহিণী রুমা আক্তার বলেন, পাটের ব্যাগ, শোপিস, শতরঞ্চি ও কার্পেট মানের দিক থেকে আকর্ষণীয়। আবার দেখলাম এসব পণ্যের ওপর রয়েছে নানা অফার। দামও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই। তাই বিক্রিও হচ্ছে ভালো। আমিও কিছু কিনেছি। মেলায় পাটপণ্যের বিক্রেতা মহুয়া বলেন, পাটপণ্যের ওপর মেলা উপলক্ষ্যে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে ক্রেতা আসছেন ভালোই। সেই সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন অফার তো আছেই।
স্থানীয় যমুনা ব্যাংক শাখার ম্যানেজার সালেহ আহমদ বলেন, কৃষকের সোনালি আঁশ পাট দিয়ে ব্যাগ, জুতা, মানিব্যাগ, ফাইল ব্যাগ, পেন হোল্ডার, গয়না বক্স, ঘরের ব্যবহৃত কার্পেটসহ নিত্যব্যবহার্য নানা পণ্য তৈরি হয়। বলতে গেলে পাট থেকে এখন সবই তৈরি হয়। আর পাটের তৈরি এমনসব বাহারি জিনিসপত্র দিয়েই সাজানো হয়েছে বহুমুখী পাটপণ্যের স্টল।
মেলায় আগত দর্শনার্থী যুবলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন বলেন, বাণিজ্যমেলায় জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারের (জেডিপিসি) স্টলটিতে ক্রেতাদের ভিড় দেখে আমিও গেলাম। ভালো ভালো প্রয়োজনীয় জিনিস আছে স্টলে। দামও খুব সামান্য।
এদিকে মেলাসংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাটের প্রতি সবার আবেগ আছে। এখন দরকার পাটপণ্য ব্যবহারের প্রতি মায়া।
প্যাভিলিয়নে অংশ নেওয়া সোনারগাঁও জুট অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মার্চেন্ডাইজার আরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান মূলত বিভিন্ন দেশে পাটপণ্য রপ্তানি করে থাকে। ইউরোপের বাজারে আমাদের পণ্য বেশি রপ্তানি হয়। মেলায় আমাদের প্রধান টার্গেট সবাই যেন অন্তত একটি পাটের ব্যাগ কিনে নেয়। আমাদের লক্ষ্য-পাটের প্রতি সবার মায়া বাড়ুক। এ টার্গেট সামনে রেখে আমরা স্বল্পমূল্যে পাটপণ্য বিক্রি করছি। তিনি বলেন, আমরা সর্বনিম্ন ১০০ থেকে ৪৫০ টাকায় ব্যাগ বিক্রি করছি।
পাটপণ্যের প্যাভিলিয়ন ঘুরে দেখা যায়, বহুমুখী পাটপণ্যের প্যাভিলিয়নে সর্বনিম্ন ৫০ থেকে ২ হাজার টাকায় বাহারি রঙের বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ বিক্রি হচ্ছে।
পাটপণ্যের আরেকটি স্টল কারুকাজ জুট প্রডাক্টসে লেডিস ব্যাগ, ফরমাল ব্যাগ, লেডিস শু, কার্ড হোল্ডার, মানিব্যাগ এবং ছেলেদের স্লিপার বিক্রি করতে দেখা গেছে।
জেডিপিসির প্রশাসনিক কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম আখন্দ বলেন, আসলে এ জায়গাটাকে অনেকদূর নিয়ে যাওয়া সম্ভব। প্রতিবছরই এটার রপ্তানি বাড়ছে। আমরা তো আছি। সরকার যদি আমাদের আরও সহায়তা করে, আমরা অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারব।