বই মেলা ২০২৪
ফাগুন হাওয়া দিচ্ছে দোলা

হক ফারুক আহমেদ
প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

এ বছর শীত জেঁকে বসেছিল। তবে খোলস পালটাতে শুরু করেছে। রোদের খেলা আর বাতাসের দোল জানান দিচ্ছে ফাগুনের আগমনের। সে দোল লেগেছে বইমেলায়। বুধবার বইমেলাজুড়ে কিশোর তরুণীদের অনেকের মাথায় ফুলের টায়রা মনে করিয়ে দিচ্ছিল আর কয়েকদিন পরই পহেলা ফাগুন। বইমেলা তার কিশোর সময় পেরিয়ে তারুণ্যের দিকে এগিয়ে যাবে।
বুধবার বইমেলার প্রবেশের পথে দেখা গেল ফুলের টায়রা বিক্রি করছে ছিন্নমূল শিশুরা। তরুণীদের কেউ কেউ তাদের কাছ থেকে কিনে নিচ্ছে সেই টায়রা। মেলায় বুধবার পাঠকের উপস্থিতি ছিল আনন্দ জাগানিয়া। প্রায় সব স্টল প্যাভিলিয়নে পাঠকের সমাবেশের পাশাপাশি পুরো সময়েই টুকটাক বিক্রি ছিল।
অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, মেলার সময় এখন যত এগিয়ে যাবে তত বেশি পাঠক ক্রেতার অংশগ্রহণ বাড়বে। এটি অব্যাহত থাকবে বইমেলার শেষ সময় পর্যন্ত।
বইমেলায় এবার আকাশ প্রকাশনী বিক্রমপুরের কাঠের ঘরের স্টাইলে তাদের স্টল তৈরি করেছে। এই ঘরকে ঘিরে মেলায় আগত পাঠকদের আলাদা আনন্দ। এখানে এসে সবাই বই হাতে নিয়ে গ্রামীণ আবহে ছবি তুলছেন।
বিকালে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ : গোবিন্দ চন্দ্র দেব শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক প্রদীপ কুমার রায়। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জয়দুল হোসেন এবং সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব একজন স্মরণীয় বাঙালি। যুক্তি, বুদ্ধি, বিবেক ও গভীর দার্শনিক দৃষ্টি দিয়ে জীবন ও জগতকে প্রত্যক্ষ করেছেন তিনি। তার জীবন, কর্ম ও দর্শন তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে থাকবে।
বুধবার লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কথাসাহিত্যিক ও নাট্যকার ইসহাক খান, প্রাবন্ধিক ও গবেষক মিল্টন বিশ্বাস, শিশুসাহিত্যিক সারওয়ার-উল ইসলাম এবং কবি মেঘ অদিতি।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি বিমল গুহ, শিহাব সরকার এবং টোকন ঠাকুর। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মীর বরকত, কাজী মাহতাব সুমন এবং অনন্যা লাবণী। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পুঁথি পাঠ করেন জালাল খান ইউসুফী। এছাড়াও ছিল নূরননবী শান্তের পরিচালনায় ‘ভাবনগর ফাউন্ডেশন’ পরিবেশিত চর্যাপদের গান এবং মো. সাকিবুল ইসলামের পরিচালনায় নৃত্য সংগঠন ‘মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি একাডেমি’র পরিবেশনা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী সুমন চৌধুরী, শাহনাজ নাসরীন ইলা, ডা. মকবুল হোসেন, অরূপ বিশ্বাস, করবী দাস, স্নিগ্ধা অধিকারী, নূরতাজ পারভীন এবং জান্নাত-এ-ফেরদৌসী।
নতুন বই : বুধবার নতুন বই প্রকাশ হয়েছে ৬৯টি। ঐতিহ্য থেকে এসেছে মহিউদ্দিন আহমদ এর ‘চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষ’, একই প্রকাশনী থেকে সৈয়দ শামসুল হকের সুনির্বাচিত সৈয়দ হক ‘কথা সানান্যই’, সময় প্রকাশন থেকে মুনতাসীর মামুনের ‘কী চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু’। অন্যপ্রকাশ থেকে এসেছে কবি মালেক মুস্তাকিমের নতুন কবিতার বই ‘সেলাই করা হাওয়ার গান।’