Logo
Logo
×

শেষ পাতা

মহান ভাষার মাস

মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার ভাষা আন্দোলন

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার ভাষা আন্দোলন

বাঙালির ইতিহাসে ভাষা আন্দোলনের প্রভাব ব্যাপক। ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই পরবর্তীকালে সব আন্দোলন-সংগ্রামের ডালপালা মেলেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধও। তাই ভাষা আন্দোলন বাঙালির ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক বলেন, আমাদের জাতীয়তাবাদ ও বাঙালিয়ানার জোয়ার কিন্তু ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির মধ্য দিয়েই এসেছে। একুশের চেতনার প্রসারিত প্রভাব থেকেই ৬ দফা, ছাত্রদের ১১ দফা ও মওলানা ভাসানীর ১৪ দফা। এগুলোর সম্মিলিত ফলাফলই হলো ৬৯-এর গণজাগরণ। তার পরিণামে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়। তাই আমি সব সময় বলি, ৫২-এর ভাষা আন্দোলন আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার। আরেক ভাষাসংগ্রামী অধ্যাপক ফুলে হুসেন বলেছেন, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনকে ভিত্তি করেই বাংলাদেশের উৎপত্তি। আমাদের জাতীয়তাবোধের সবকিছুই শিখেছি ভাষা আন্দোলন থেকে। আমরা বাঙালি, বাংলায় কথা বলি, আমাদের দেশ বাংলাদেশ-এসব বোধ এ আন্দোলন থেকেই পাওয়া। ভাষা আন্দোলন থেকেই উৎসারিত হয়েছে সব মন্ত্র।

তাই ভাষা আন্দোলন জাতীয় জীবনে এতটা গুরুত্বপূর্ণ। ভাষা আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাঙালিয়ানার যে জোয়ার আসে সেটাই আমাদের জাতীয়তাবোধের জন্ম দেয়। আর এ জাতীয়তাবোধের উৎসারিত চেতনা থেকেই আমরা এখনো সব আন্দোলন-সংগ্রামে প্রেরণা পাই। শোষণের বিরুদ্ধে, নির্যাতনের বিরুদ্ধে, দাবি আদায়ের সংগ্রামে আমাদের উজ্জীবিত করে ভাষা আন্দোলন। এ প্রেরণাকে সঙ্গী করেই আমরা এগিয়ে যাই। বাংলাদেশ আজ যতটা পথ এগিয়েছে তার পেছনে অনুপ্রেরণা আমাদের চির অম্লান ভাষা আন্দোলন।

আমাদের একুশের চেতনার জন্ম হয়েছিল একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে। তৎকালীন পাকিস্তানে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। আর ১৯৪৮ সালে উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে গর্জে ওঠে বাঙালি। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে তারা আন্দোলন শুরু করে। ১৯৪৯ থেকে ১৯৫১-র মধ্যে ক্রমে জোরালো হয়ে ওঠে বাংলা ভাষার মর্যাদা আদায়ের দাবি। ১৯৫২ সালে একুশে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ‘রাষ্ট্রভাষা দিবস’ ও সাধারণ ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত হয়। পাকিস্তান সরকার আন্দোলন দমনে ১৪৪ ধারা জারির মাধ্যমে জনসমাগম, জনসভা ও মিছিল নিষিদ্ধ করে দেয়। ছাত্ররা জোটবদ্ধভাবে ১৪৪ ধারা ভাঙলে পুলিশ গুলি চালায়। শহিদ হন সালাম, রফিক, জব্বার, বরকতসহ আরও অনেকে। পরদিন সারা রাত জেগে শহিদদের স্মরণে গড়া হয় শহিদ মিনার। পুলিশ তা ভেঙে ফেললে আবারও গড়ে ওঠে শহিদ মিনার। ভাষা আন্দোলনের ভেতর দিয়ে বাঙালি জাতিসত্তায় জন্ম নিয়েছিল একুশের চেতনা। এ চেতনা আমাদের জাতীয় জীবনে আত্মত্যাগের বীজমন্ত্র।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম