Logo
Logo
×

শেষ পাতা

বই মেলা ২০২৪

জমজমাট দিন, আবর্জনায় অস্বস্তি

Icon

হক ফারুক আহমেদ

প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

জমজমাট দিন, আবর্জনায় অস্বস্তি

দ্বিতীয় দিনেই জমজমাট বাইমেলা। কারণ দিনটি ছিল শুক্রবার। সকালেই শিশুদের কলকাকলিতে মুখরিত হয় মেলা প্রাঙ্গণ। মা-বাবার হাত ধরে সিসিমপুরের হালুম, ইকরি, টুকটিকিদের সঙ্গে চমৎকার সময় কেটেছে তাদের। শিশুপ্রহরে তারা ঘুরে ঘুরে বইও কিনেছে। দুপুরের পর অসংখ্য পাঠক সমাগম হয় মেলায়। বই বিক্রিও মন্দ ছিল না। কিন্তু মেলাজুড়ে ময়লা আর আবর্জনার স্তূপ বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ স্টল নির্মাণের কাজ চলছিল।

বিকালে আগামীর স্টলে এসেছিলেন ইতিহাসবিদ প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। বইমেলার টানে ছুটে এসেছেন বলে জানান তিনি।

প্রথমার স্টলে নিজের নতুন উপন্যাস ‘কখনো আমার মাকে’ সংগ্রহকারী পাঠকদের অটোগ্রাফ দিচ্ছিলেন কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক। মেলা সম্পর্কে তিনি যুগান্তরকে বলেন, ‘এবার রাজনৈতিক উত্তাপ নেই। পাঠক ক্রেতারা সহজেই মেট্রোরেলে যাতায়াত করতে পারবেন। মেলা এবার খুব ভালো হবে। সময় প্রকাশনীর প্রকাশক ফরিদ আহমেদের কথা উল্লেখ করে আনিসুল হক বলেন, ফরিদ ভাই বলেন এই যে এখনো স্টল নির্মাণ চলছে, বিকাশ তাদের বুথ তৈরি করছে, কর্তৃপক্ষ কি জানে না প্রতিবছর ১ ফেব্রুয়ারি বইমেলা শুরু হয়? তাহলে এমনটা কেন?’

অন্বেষা প্রকাশনীর প্রকাশক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘মেলার অবস্থা দেখলে মনে হয় ময়লার ভাগাড়ে আছি। চারদিকে স্তূপ স্তূপ ময়লা। প্রবেশপথে এখনো ঠিকভাবে ইট বিছানো হয়নি। টয়লেট এবং নামাজের স্থান কোনোভাবে চালু করা হয়েছে। অনেকে এখনো স্টল নির্মাণ শেষ করতে পারেননি। প্রশ্ন আসে তারা স্টল পান কীভাবে?’

শুক্রবার মেলায় জনস্রোত না থাকলেও নানা বয়সি মানুষ এসেছিলেন। নতুন বইয়ের খোঁজ করেছেন। আগেরদিন বৃষ্টি থাকার মেলার মাঠের কিছু স্থান কর্দমাক্ত ছিল। এতকিছুর পরেও পাঠক পুরো সময়টা আড্ডা, বই নিয়ে মেতে ছিলেন।

রাজধানীর কলাবাগান থেকে এসেছিলেন সানজিদা আলম। তিনি বলেন, এই মেলার জন্য সারা বছরের অপেক্ষা আমার। আড্ডা, বই কেনা, চা খাওয়া সব মিলিয়ে দারুণ একটা সময় কাটে। কয়েকটা বই কিনেছি। কিন্তু মেলায় একটু পরপরই এত আবর্জনার স্তূপ ভাবাই যায় না। চারদিকে ছড়িয়েও আছে কাগজের টুকরো আর ময়লা। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। মেলায় মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট সেবা খুব দুর্বল।

মূলমঞ্চের অনুষ্ঠান : মহাকবি আলাওল শীর্ষক আলোচনার আয়োজন করা হয় মেলার মূলমঞ্চে। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাইমন জাকারিয়া। আলোচনায় অংশ নেন মিল্টন বিশ্বাস ও মোহাম্মদ শেখ সাদী। সভাপতিত্ব করেন আবুল কাসেম। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি রুবী রহমান, আসাদ মান্নান ও মাহবুব সাদিক। আবৃত্তি করেন লায়লা আফরোজ, মুস্তাফা ওয়ালিদ ও মজুমদার বিপ্লব। এছাড়া ছিল ড. আবুল কালাম আজাদের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ লোকসংগীত পরিষদ’ এবং ড. মো. শাহাদাৎ হোসেনের পরিচালনায় আবৃত্তি সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী তিমির নন্দী, মহিউজ্জামান চৌধুরী, প্রিয়াংকা গোপ, জুলি শারমিলি ও মানিক রহমান।

আজ অমর একুশে বইমেলার ৩য় দিন। মেলা শুরু হবে বেলা ১১টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। আগামীকাল বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত থাকবে শিশুপ্রহর।

নতুন বই : বাংলা একাডেমির তথ্যকেন্দ্র থেকে জানা যায়, শুক্রবার মেলায় নতুন বই এসেছে ৩১টি। এগুলোর মধ্যে অনন্যা থেকে প্রকাশ হয়েছে ইমদাদুল হক মিলনের উপন্যাস ‘অন্ধকার নামতে পারেনি’; অন্যপ্রকাশ থেকে ফরিদুর রেজা সাগরের ‘রহিম সাহেবের হাত ও আরেক পৃথিবী’; সময় প্রকাশন থেকে আনিসুল হকের ‘কিশোর তুমি বড় হবে’; একই প্রকাশনী থেকে মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘ওগো টুনটুনি কীগো ছোটাচ্ছু’; আগামী থেকে সৈয়দ আনোয়ার হোসেন সম্পাদিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান : এ প্রোফাইল ইন লিডারশিপ’; পাঠক সমাবেশ থেকে কামাল চৌধুরীর ‘কবিতার অন্বেষণ কবিতার কৌশল’; আগামী থেকে আনোয়ারা সৈয়দ হকের ‘শ্রেষ্ঠ উপন্যাস’।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম