যবিপ্রবিতে ছাত্রলীগ
১৭ চাকরি প্রার্থীকে আটকে রেখে নির্যাতন
যশোর ব্যুরো
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) লিফট অপারেটর পদে পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা ১৭ চাকরিপ্রার্থীকে হলে আটকে রেখে নির্যাতন করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার সকালে পরীক্ষা দিতে আসার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে তাদের ধরে নিয়ে শহিদ মসিয়ূর রহমান হলে আটকে রাখা হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রায় ৬ ঘণ্টা পর তাদের বিভিন্ন স্থানে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লিফট অপারেটর পদে চাকরির পরীক্ষা ছিল বৃহস্পতিবার সকালে। ১১টি পদের বিপরীতে এ পরীক্ষায় প্রার্থী ছিলেন ৩৮ জন। এর মধ্যে ২১ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, লিফট অপারেটর পদে ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সালের কয়েকজন প্রার্থী ছিল।
তাদের প্রার্থী ছাড়া অন্যরা যাতে পরীক্ষা দিতে না পারে; সেজন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রার্থী ছাড়া অন্য প্রার্থী এলেই তাদের শহিদ মসিয়ূর রহমান ছাত্রবাসের ৩০৪ ও ৩০৯ নম্বর কক্ষে আটকে রাখা হয়। পরে পরীক্ষা শেষে ৬ ঘণ্টা পর প্রার্থীদের বিভিন্ন স্থানে ছেড়ে দেওয়া হয়।
যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, সকাল ১০টার দিকে আমি জানতে পারলাম কিছু পরীক্ষার্থীকে শহিদ মসিয়ূর রহমান হলের ৩০৪ নম্বর রুমে ছাত্রলীগ সভাপতি সোহেল রানার কর্মীরা আটকে রাখছে। আমি হলের প্রভোস্টকে বিষয়টি দেখার জন্য পাঠালে তিনি রুমে কাউকে পাওয়া যায়নি জানান। কিন্তু দুপুরে আমি অফিসে এলে অভিভাবকরা আমার সঙ্গে দেখা করে স্বজনদের অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিকাল ৩টার দিকে পরীক্ষার্থীদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তারা জানিয়েছে, তাদের হলের ৩০৪ নম্বর রুম, ৩০৯ নম্বর রুম ও পাঁচতলার বিভিন্ন রুমে আটকে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জাজনক। এর সুষ্ঠু তদন্ত করে কঠোর থেকে কঠোরতর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।
অপহরণের শিকার এক পরীক্ষার্থী বলেন, প্রধান ফটকে ইজিবাইক থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে শহিদ মসিয়ূর রহমান হলের ৩০৯নং রুমে নিয়ে গিয়ে বলেন, তোরা পরীক্ষা দিতে আসছিস, এডমিট কার্ড কোথা থেকে পাইলি? ওই রুমে আমিসহ ৬ জন চাকরি পরীক্ষার্থী ছিলাম।
এছাড়া হলের ৩০৪নং রুম ও পাঁচতলার একাধিক রুমে আমরাসহ প্রায় ২০ জনের মতো আটক ছিলাম। আমি বের হতে চাইলে আমাকে মাথায় ও নাকে-মুখে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুসি মারে। আমার চেয়ে রুমের অন্য পরীক্ষার্থীকে অনেক বেশি মারধর করেছে। তারপর সাড়ে তিনটার দিকে ওরাই (অপহরণকারীরা) পালবাড়ি নিয়ে আমাদের ছেড়ে দেয়।
যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা বলেছেন, ছাত্রলীগের কোনো কর্মী এই অপহরণের সঙ্গে জড়িত নয়। ছাত্রলীগ কখনোই নিয়োগের সঙ্গে জড়িত ছিল না। আমাদের কোনো কর্মী যদি পরীক্ষা দেয়, তবে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে আমরা ভিসি স্যারকে জানাই। পরীক্ষার্থী যদি যোগ্য হয়, তবে তাকে চাকরি দেওয়া হয়।