Logo
Logo
×

শেষ পাতা

জাতীয় সংসদ নির্বাচন

গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনে মতপার্থক্য

Icon

কাজী জেবেল

প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনে মতপার্থক্য

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে মতপার্থক্য কমছেই না। বরং দিন দিন তা বেড়েই চলছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার আগমুহূর্তে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তাদের মতপার্থক্য এক প্রকার প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কার্যালয়ে অনানুষ্ঠানিক কমিশন বৈঠকেও অংশ নিতে নারাজ এক নির্বাচন কমিশনার। ইসির সচিব উদ্যোগী হয়েও তাদের এক রুমে বসাতে পারেননি। ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, সর্বশেষ প্রশাসন ক্যাডার ছাড়াও অন্য কর্মকর্তাদের আসন্ন নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ এবং মাঠ প্রশাসনের মাধ্যমে যাচাই করে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ নিয়ে কমিশনারদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয়। এছাড়া কয়েকটি বিষয়ে তাদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি নির্বাচন কমিশনাররা। নিজ কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় জানতে চাইলে একজন নির্বাচন কমিশনার মতপার্থক্যের বিষয়টি স্বীকার করেন। অনেকটা হাস্যোজ্জ্বলভঙ্গিতে তিনি বলেন, একজনের সঙ্গে আরেকজনের গৃহবিবাধ যেমন থাকে, এখানেও তেমনই আছে। 
ইসির ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তা জানান, আজ মঙ্গলবার ও কাল বুধবার নির্বাচন কমিশনারদের দুটি অনানুষ্ঠানিক সভা রয়েছে। এর পরের দিন বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন সিইসি ও নির্বাচন কমিশনাররা। আগামী ১২ নভেম্বর নির্বাচনি অ্যাপ উদ্বোধনের কথা রয়েছে। এরপরই জাতীয় নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার কথা। তারা বলেন, নির্বাচন কমিশনারদের এমন মতপার্থক্যের কারণে ভোটের প্রস্তুতিমূলক কাজে প্রভাব ফেলছে। কমিশনারদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকার বিষয়টি গতকাল সোমবার প্রকাশ্য রূপ নেয়। এদিন বিপুলসংখ্যক গণমাধ্যমকর্মীর সামনে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম চারজন নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। তার বৈঠকের পর নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর আরেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খানের কার্যালয়ে যান। 
সেখান থেকে তারা দুজনেই সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের কার্যালয়ে যান। 
এর আগে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা খানমও সিইসির কার্যালয়ে যান। সেখানে তারা কিছু সময় বৈঠকও করেন। তবে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান সেখানে যাননি। সোমবার সোয়া তিনটার দিকে সিইসি ও বিকাল ৪টার দিকে আনিছুর রহমান ইসি থেকে বেরিয়ে যান। তাদের মধ্যে দেখা হয়নি।
ইসি সূত্র জানায়, সিইসির কার্যালয়ে চার নির্বাচন কমিশনারের অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করার রেওয়াজ ছিল। প্রায় এক মাস ধরে সিইসির কার্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন আনিছুর রহমান। সর্বশেষ গতকাল রোববার সিইসির কার্যালয়ে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে অংশ নেন তিনি। ওই বৈঠকে কয়েকটি বিষয়ে নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয়। এর একটি হচ্ছে, ডিসি-এসপিসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কমিটির মাধ্যমে আসন্ন নির্বাচনের প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগের নীতিমালা অনুমোদন করা। ওই নীতিমালার বিরোধিতা করেন সিইসি ও দুজন নির্বাচন কমিশনার। তাদের যুক্তি, আরপিও অনুযায়ী ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের এখতিয়ার রিটার্নিং কর্মকর্তার। নীতিমালায় ওই এখতিয়ার খর্ব করা হচ্ছে। 
এছাড়া আসন্ন নির্বাচনে প্রশাসন ক্যাডারের বাইরের অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তাদেরও রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে চায় কমিশন। তফশিল ঘোষণার আগেই রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়টি ইসির আলোচনায়ও রয়েছে। এ নিয়ে আপত্তি আছে দুজন কমিশনারের। এ বিষয়টি নিয়েও রোববারের বৈঠকে আলোচনা হয়। 
এর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার ধারণাপত্রে ‘নির্বাচনের প্রত্যাশিত অনুকূল পরিবেশ নেই’ ইসির এমন বক্তব্য নিয়েও কমিশনারদের মধ্যে মতপার্থক্য প্রকাশ্যে চলে আসে। নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, তার অজ্ঞাতেই এ ধরনের ধারণাপত্র পাঠানো হয়েছে। অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় আরেক নির্বাচন কমিশনারও একই কথা জানান। তিনি বলেন, ওই মতবিনিময়ের আমন্ত্রণপত্র পাঠানোর ফাইলে অনুমোদনের সময়ে তিনি ধারণাপত্র দেখতে পাননি। এছাড়া আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়ায় জামালপুরের ডিসিকে অপসারণ করতে চিঠি পাঠানো নিয়েও কমিশনারদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম