এক সপ্তাহে রিজার্ভ ক্ষয়ের গতি কমেছে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অব্যাহত গতিতে কমছে। তবে কমার গতি হ্রাস পেয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে আমদানি কমায় রিজার্ভ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি কমিয়েছে। যে কারণে রিজার্ভ কম হারে ক্ষয় হচ্ছে। অক্টোবরের ২৬ দিনে গ্রস রিজার্ভ কমেছে ৩৬ কোটি ডলার। নিট রিজার্ভ কমেছে ২৫ কোটি ডলার।
এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে নিট রিজার্ভ কমেছে ৬ কোটি ডলার ও গ্রস রিজার্ভ বেড়েছে ১ কোটি ডলার। আগের সপ্তাহগুলোতে রিজার্ভ আরও বেশি পরিমাণ কমত।
বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার নিট রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৯০ কোটি ডলার। ২০ অক্টোবর দিনের শুরুতে ছিল ২ হাজার ৯৬ কোটি ডলার। এক সপ্তাহের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে ৬ কোটি ডলার। একই সময়ের ব্যবধানে গ্রস রিজার্ভ ২ হাজার ৬৬৯ থেকে বেড়ে ২ হাজার ৬৭০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।
রিজার্ভ থেকে অর্থ নিয়ে গঠিত বিভিন্ন তহবিলের আকার ছোট করায় গ্রস রিজার্ভ বাড়ছে। ২০ অক্টোবর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার নিট রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে যায়। তবে তা ২১ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি অবস্থান করছিল। এ থেকে এ সপ্তাহে আরও ৬ কোটি ডলার কমে গেছে। আগামী সপ্তাহে আমদানি ও বৈদেশিক ঋণসহ কিছু দেনা শোধ করতে হবে। ফলে রিজার্ভের ক্ষয় আরও বাড়বে।
২৭ সেপ্টেম্বর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৭০৬ কোটি ডলার। বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে তা কমে দাঁড়িয়ছে ২ হজার ৬৭০ কোটি ডলার। ওই সময়ে রিজার্ভ কমেছে ৩৬ কোটি ডলার। একই সময়ের ব্যবধানে নিট রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ১১৫ কোটি ডলার থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯০ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে নিট রিজার্ভ কমেছে ২৫ কোটি ডলার।
এদিকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের দেনা শোধ করতে হবে ১০০ কোটি ডলারের বেশি। তখন রিজার্ভ আরও কমে যেতে পারে। ডিসেম্বরের শেষ দিকে আইএমএফ’র ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ ৬৮ কোটি ডলার পেতে পারে। তখন রিজার্ভ কিছুটা বাড়বে।
ওই সময়ে বিশ্বব্যাংক ও এডিবির কিছু ঋণও ছাড় হবে। এছাড়া হুন্ডির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিতে শুরু করায় রেমিট্যান্স প্রবাহ আগামী মাসগুলোতে বাড়বে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে গ্রস রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৮০৬ কোটি ডলারে উঠেছিল। এরপর থেকে তা কমে যাচ্ছে। ওই সময় থেকে এখন পর্যন্ত রিজার্ভ কমেছে ২ হাজার ১৩৬ কোটি ডলার। গত এক বছর আগে অর্থাৎ গত বছরের ২৫ অক্টোবরে গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ৫৮০ কোটি ডলার। এক বছরে রিজার্ভ কমেছে ৯১০ কোটি ডলার।
এদিকে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) অব্যাহতভাবে রিজার্ভ কমে যাওয়াকে উদ্বেগজনক মনে করে। রিজার্ভ বাড়াতে তারা নানামুখী পদক্ষেপ নিতে বলেছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে বুধবার পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে বিক্রি করেছে প্রায় ৪০০ কোটি ডলার।
এর আগে গত অর্থবছরে বিক্রি করেছিল ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ডলার। ব্যাংকগুলো এসব ডলার নিয়ে আমদানির দায় ও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে ব্যয় করেছে।