আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপির আমলে সব নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ ছিল এবং রিগিং (ভোট চুরি, ভোট ডাকাতি) হতো বলেই কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক) সরকারব্যবস্থার প্রচলন করা হয়েছিল। তবে সংবিধানের সঙ্গে তা সাংঘর্ষিক হওয়ায় সর্বোচ্চ আদালত অবৈধ ঘোষণা করেছেন। এখন সংবিধানে কেয়ারটেকার গভর্মেন্টের কোনো ব্যবস্থা নেই। সংবিধানে যেভাবে আছে-সেভাবেই নির্বাচন হবে। তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রয়োজনেই জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) জন্য গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মাগুরায় নবনির্মিত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করুক-এটা বর্তমান সরকার চায়। আর সংবিধান মেনেই তাদের অংশগ্রহণ করতে হবে। নির্বাচনে কোন দল আসবে বা আসবে না-তা দলগুলোই ঠিক করবে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রশ্নে তিনি বলেন, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলো কিনা সেটি নির্ধারণ করবে জনগণ। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে যখন জনগণ ভোট দেবে। আমার বিশ্বাস-আগামী নির্বাচনে জনগণ ভোট দেবে।
ডিসি ও ইউএনওদের জন্য গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক দাবি করেন-গাড়ি কেনা অপরিহার্য। একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করার জন্য ডিসি ও ইউএনওদের গাড়ি দেওয়া হচ্ছে। কারণ তারা অপরিহার্য। এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। তিনি বলেন, সরকার আগে গাড়ি কেনার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। কিন্তু সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রয়োজনে সেই নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছে। রিটার্নিং অফিসার এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের জন্য ২৬১টি গাড়ি কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
জেলা জজ আদালত সীমানাসংলগ্ন ৪৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২ তলা ফাউন্ডেশনবিশিষ্ট নতুন আদালত ভবন উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি আনিসুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে দেশে আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এটি ধরে রাখতে সবাইকে কাজ করে যেতে হবে। আইন ও বিচার বিভাগের সচিব গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ-সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর, মাগুরা-২ আসনের সংসদ সদস্য ড. বিরেন শিকদার, আদালত ভবন নির্মাণ প্রকল্পের প্রধান সমন্বয়ক বিকাশ কুমার সাহা, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ অমিত কুমার দে, জেলা প্রশাসক আবু নাসের বেগ, পুলিশ সুপার মশিউদ্দৌলা রেজা, গণপূর্ত বিভাগের খুলনা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শাহজালাল মজুমদার, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আফম আবদুল ফাত্তাহ ও সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।
আলোচনা সভা শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মাগুরা সদর উপজেলার কাটাখালি স্কুল প্রাঙ্গণে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেন।