Logo
Logo
×

শেষ পাতা

মাদারীপুর কলেজে নবীনবরণ

দাওয়াত না পেয়ে ৩ ছাত্রকে পুলিশে দিল ছাত্রলীগ

Icon

টেকেরহাট (মাদারীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দাওয়াত না পেয়ে ৩ ছাত্রকে পুলিশে দিল ছাত্রলীগ

মাদারীপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে দাওয়াত না পেয়ে তিন ছাত্রকে পুলিশে দিয়েছেন ক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

শনিবার বেলা ১২টার দিকে কলেজের মূল ভবনে এ ঘটনা ঘটে। আটকরা হলেন-কালকিনির লক্ষ্মীপুর এলাকার নাসির উদ্দিনের ছেলে সাইফুল্লাহ মানসুর (২৩), গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর বাগিয়া এলাকার মনিরুজ্জামান মোল্লার ছেলে হামিম মোল্লা (২১) ও বরগুনার আমতলীর আব্দুল খলিফার ছেলে মাহফুজুর রহমান (২১)।

তাদের মধ্যে সাইফুল্লাহ কলেজের রসায়ন বিভাগের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের এবং হামিম ও মাহফুজ পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। জানা গেছে, এ নবীনবরণ উৎসবের আয়োজন করে কলেজের নবগঠিত একটি ছাত্র সংগঠন জিনিয়াস ক্লাব।

এ ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাইফুল্লাহর নেতৃত্বে অন্য বিভাগের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী নিয়ে কলেজের মূল ভবনের ৮ নম্বর কক্ষে শনিবার সকাল থেকেই চলতে থাকে উৎসবের প্রস্তুতি। বেলা ১১টার দিকে অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কলেজ ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী সেখানে বাধা সৃষ্টি করেন। পরে সাইফুল্লাহসহ তিন কলেজছাত্রকে শিবিরের নেতাকর্মী আখ্যায়িত করে অনুষ্ঠান পণ্ড করে দেয় ছাত্রলীগ।

এ সময় তারা ওই তিনজনকে আটক করে সদর মডেল থানায় জানায়। পুলিশ কলেজে গিয়ে তিন ছাত্রকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাব্বির আহমেদ বলেন, নবীনবরণের অনুষ্ঠান শুরু হবে ওই সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন এসে শিবির বলে স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ ছাত্রদের ওই রুম থেকে বের করে দেন।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান শ্যামল চন্দ্র শিকদার বলেন, আমাদের বিভাগের দুই ছাত্রকে আটকের বিষয়টি আমরা জানি না। আমি অধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব। বিষয়টি আমরা খোঁজ নিয়ে দেখব।

আটক তিন কলেজছাত্রের দাবি, তারা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। সাইফুল্লাহ মানসুর বলেন, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি শিক্ষার্থীদের নবীনবরণের জন্য ফোন করে দাওয়াত দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে আসার পর আমরা জিনিয়াস ক্লাবের সদস্য সংগ্রহের কার্যক্রমও শুরু করি। অনুষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষক ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক সংগঠনকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি। এ কারণে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের অনুষ্ঠানে বাধা দিয়েছেন।

আটক মাহফুজুর বলেন, তারা আমাদের শিবির নেতা বলে আখ্যায়িত করেছে। অথচ আমরা কোনো রাজনৈতিক সংগঠনে জড়িত নই। ছাত্রলীগের নেতারা আধিপত্য দেখানোর জন্য আমাদের সঙ্গে এ জঘন্য আচরণ করেছেন।

কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, নবীনবরণ অনুষ্ঠান করতে হলে অধ্যক্ষ, শিক্ষক সমিতি, ছাত্র সংগঠন সবাই জানবে। কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতিও থাকবে। এসব কোনো কিছুই না করে একটি সন্ত্রাসী মহল কথিত একটি সংগঠন বানিয়ে কলেজে হুট করে নবীনবরণ উৎসবের আয়োজন করে। আয়োজকদের দুজন শিবিরের সঙ্গে জড়িত বলে আমরা জেনেছি। সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠান বয়কট করে পুলিশকে জানালে তাদের ধরে নিয়ে যায়। এখানে আমরা তাদের কোনো বাধা দিইনি মারধর করিনি।

থানার ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, কলেজে নবীনবরণ অনুষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কর্মীরা হট্টগোল করছে এমন খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ যায়। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন কলেজছাত্রকে থানায় আনা হয়েছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কলেজের অধ্যক্ষ জামান মিয়া বলেন, নবীনবরণ অনুষ্ঠানের জন্য জিনিয়াস ক্লাবের সদস্যরা আমার কাছে মৌখিক অনুমতি নেয়। পরে আমি তাদের বলেছি, সবাইকে নিয়ে যদি অনুষ্ঠান করতে পার তাহলে কর। পরে শুনেছি, ওই সংগঠনের তিনজনকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। আটক ছাত্ররা পুলিশের কাছে জবাবদিহি করবে। আমাদের কিছুই করার নেই।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম