সিংড়ায় সোঁতিজালের ফাঁদে প্রাণ গেল মাদ্রাসা ছাত্রের
লাশ রেখে মাতবরদের দেনদরবার
সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
লাশ
সিংড়ার পানাউল্লাহ খালের মুখে রাণীনগর স্লুইসগেটে অবৈধভাবে পেতে রাখা সোঁতিজালের ফাঁদ থেকে এক মাদ্রাসা ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাম কাওছার আলী। স্লুইসগেটে গোসলে নেমে সোঁতির স্রোতে (কৃত্রিমভাবে তৈরি স্রোত) নিখোঁজের একদিন পর বৃহস্পতিবার তার লাশ উদ্ধার করা হয়। কাওছারের লাশ নিয়ে বৃহস্পতিবার পুলিশের সামনেই সালিশ বৈঠক করেন গ্রাম্য মাতবররা।
কাওসার তেলিগ্রাম দাখিল মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে শেরকোল রাণীনগর গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমানের ছেলে।
রাণীনগর স্লুইসগেট এলাকায় কাঠা তৈরি করে মাছ শিকারের জন্য রাণীনগর সমাজ থেকে ৭০ হাজার টাকায় ইজারা নেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী আলমাস ও আইয়ুব আলীসহ ১০ থেকে ১২ জন। কিন্তু স্লুইসগেটের মুখে অবৈধভাবে সোঁতিজালের ফাঁদ পেতে মাছ শিকার শুরু করেন ইজারাদাররা। বুধবার বেলা ১টায় কাওছার আলী সেখানে গোসলে গিয়ে সোঁতির স্রোতে পড়েন। অনেক খোঁজাখুঁজির এক দিন পর তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বারবার মৃত্যুর পরও সেখানে সোঁতিজাল পাতা বন্ধ হচ্ছে না। এই খাল গোসলের জন্য হাজার হাজার মানুষ ব্যবহার করেন। প্রায় ১০ বছর আগে ইজারাদার আলমের ছোট ভাই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সেলিম হোসেন সোঁতিতে পড়ে মারা যান।
কাওসারের চাচা শহিদুল ইসলাম বলেন, দুপুরে মাদ্রাসা থেকে ফিরে তার ভাতিজা স্লুইসগেটে গোসলে গিয়ে সোঁতির ফাঁদে আটকে নিখোঁজ হয়। তখন সোঁতিজাল দেখতে চেয়েও কোনো লাভ হয়নি। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহাদৎ হোসেন বলেন, যেখানেই সোঁতি জালের খবর পাচ্ছি, সেখানেই অভিযান চালানো হচ্ছে।
সহকারী পুলিশ সুপার (সিংড়া সার্কেল) আকতারুজ্জামান বলেন, ওই ছাত্রের লাশ নিয়ে দেনদরবারের কোনো সুযোগ নেই। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।