রংপুরে ভোক্তার মহাপরিচালক
সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে আলুও আমদানি হবে
সারা দেশে অভিযান অব্যাহত, ১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেছেন, কোল্ড স্টোরেজে আলুর দাম ২৭ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তারপরও অসাধু ব্যবসায়ী ও কোল্ড স্টোরেজের কর্মকর্তারা সিন্ডিকেট করে আলুর বাজার অস্থির করছে। আমরা এসব সিন্ডিকেট ভাঙার চেষ্টা করছি। আরও ৩-৪ দিন দেখব। এরমধ্যে সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে সরকারের কাছে ডিমের মতো আলু আমদানিরও সুপারিশ করব। বুধবার সকালে রংপুরে একটি কোল্ড স্টোরেজে অভিযান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। এ সময় কোল্ড স্টোরেজে কর্মকর্তাসহ দুজনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বুধবারও আলু, পেঁয়াজ ও ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন। এ সময় মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, ক্রয়ের রসিদ দেখাতে না পারা ও নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রিসহ নানা অনিয়মের কারণে ১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৬৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
রংপুর : নগরীর হাজীরহাট চেয়ারম্যানের মোড় এলাকায় সকালে আরমান কোল্ড স্টোরেজে অভিযান চালায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান, রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান, জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) তরিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। অভিযানে অসঙ্গতি পাওয়ায় আরমান কোল্ড স্টোরেজের এজিএম রেজাউল করিম লেবু ও আলু ব্যবসায়ী রাসেলকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সফিকুজ্জামান বলেন, এখানে রাসেল নামে এক ব্যক্তি নিজের উৎপাদিত আড়াই হাজার বস্তা আলু ও স্থানীয় কৃষকদের সাড়ে ১২ হাজার বস্তাসহ মোট ১৫ হাজার বস্তা আলু নিজের নামে রেখেছেন। এভাবে অন্যের আলু নিজের নামে রেখে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন রাসেল। এছাড়া কোল্ড স্টোরেজ কর্তৃপক্ষ ব্যাংক থেকে চার কোটির বেশি টাকা লোন নিয়ে কৃষকদের দিয়েছে। কী উদ্দেশ্যে লোন নিয়ে কৃষকদের দিয়েছেন তা খতিয়ে দেখতে এবং রাসেল ও কোল্ড স্টোরেজের জিএম রেজাউল করিম লেবুর সিন্ডিকেট বিষয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য তাদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আরমান কোল্ড স্টোরেজে এখনো পর্যাপ্ত আলু মজুত রয়েছে। আলু বের করার সময় আর দেড় থেকে দুই মাস। এ সময়ের মধ্যে আলু বের না করা হলে আলু পচে যাবে। এরপরও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা আলু বের না করে মজুতের দিকে ঝুঁকছেন। এ সময় তিনি কোল্ড স্টোরেজ থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে আলু কিনতে বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান।
মুন্সীগঞ্জ ও শ্রীনগর : যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশের পর জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে মুন্সীগঞ্জের হিমাগারগুলোতে আলু বিক্রি বন্ধ রাখর পর বুধবার পুনরায় চালু হয়েছে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সকাল থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে (২৬-২৭ টাকা) আলু বিক্রি শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। জেলা প্রশাসক মো. আবুজাফর রিপন জানান, নির্ধারিত মূল্যেই আলু বিক্রি করতে হবে। এতে কোনো ছাড় নেই। খুচরা বাজারে ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে আলু পাওয়া যাবে। আগামী ৩ দিনের মধ্যে ৫৫ থেকে ৬০ হাজার বস্তা আলু বাজারে ছাড়া হবে ফলে আলুর কোনো সংকট থাকবে না। এদিকে শ্রীনগর উপজেলার আটপাড়ায় শ্রীনগর কোল্ড স্টোরেজের ম্যানেজার শিশির আহম্মেদকে ১০ হাজার টাকা ও আলু ব্যবসায়ী সুজন দাসকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) : ক্ষেতলাল উপজেলার হাফিজার রহমান আলুর বীজ হিমাগারের মালিক আশরাফ আলীকে ২৫ হাজার টাকা ও দুই ব্যবসায়ী মোট ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
খুলনা : অবৈধ উপায়ে বিদেশি চকলেট ও প্রসাধনী বিক্রির অভিযোগে খুলনার তিন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। এরমধ্যে হুগলী বেকারিকে ৫ হাজার টাকা, সবুর স্টোরকে ২ হাজার টাকা ও বাংলাদেশ বেকারিকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
চিতলমারী (বাগেরহাট) : উপজেলা সদর বাজারে বেশি দামে আলু বিক্রি করায় দুই প্রতিষ্ঠানকে ১৫শ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।