বিশ্বনেতাদের বিবৃতি খতিয়ে না দেখলে চড়া মূল্য দিতে হতে পারে: জিএম কাদের
যুগান্তর প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন, ড. ইউনূসের বিচার চলছে। এ প্রসঙ্গে আমাদের কথা নেই। তবে বিশ্ববরেণ্য নেতাদের বিবৃতি খতিয়ে না দেখলে জাতিকে চরম মূল্য দিতে হতে পারে। বিশ্বসমাজে আমাদের হেয়প্রতিপন্ন হতে হবে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় যুব সংহতি সভাপতি এইচএম শাহরিয়ার আসিফের রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল শেষে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বৃহস্পতিবার এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন-বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিন্টন, বান কি মুনসহ বিশ্ববরেণ্য ১৭৫ নেতার মধ্যে ১০৪ নোবেল বিজয়ী বিবৃতি দিয়েছেন ড. ইউনূসের পক্ষে। বিশ্ববরেণ্য এত নেতা একটি বিষয়ে কোনো বিবৃতি দিয়েছেন, এমন নজির আমার জানা নেই। তাদের বিচার-বুদ্ধি বা সততা সম্পর্কে কোনো সন্দেহ বা কটাক্ষ করা হাস্যকর। তারা বিচার বিভাগীয় হয়রানির কথা বলেছেন-এটি সংশ্লিষ্টদের খতিয়ে দেখতে হবে। আমরা যদি মনে করি, উটপাখির মতো মাথা গুঁজে বালুতে কিছু লুকিয়েছি, আমি কাউকে দেখিনি তাই কেউ আমাকেও দেখছে না। উটপাখির মতো মনে করলে চলবে না। সবাই আমাদের দেখছেন।
তিনি আরও বলেন, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকা প্রতিবেদন করেছে-নীরবে ধ্বংস করা হচ্ছে একটি দেশের গণতন্ত্র, কাঠগড়ায় মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ। নিউইয়র্ক টাইমসের সেই প্রতিবেদনেও বিচারিক হয়রানির কথা বলা হয়েছে। গণতন্ত্রহীনতার কথা বলা হয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমসকে বিশ্বের এক নম্বর গণমাধ্যম বলা হয়ে থাকে। দেশের মানুষ, সরকার ও বিরোধী দলের সঙ্গে কথা বলে তারা এ প্রতিবেদন করেছে। সারা বিশ্ব যে পত্রিকাকে গ্রহণযোগ্য মনে করে, আমরা তাকে মূল্য না দিলে তাতেও আমাদের খেসারত দিতে হতে পারে। সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত। গণতন্ত্র ধ্বংস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে, সব ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে। এটাকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। না হলে জাতি হিসাবে বড় ধরনের মাশুল দিতে হবে।
জিএম কাদের বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে-সরকার নির্বাচনের আগে অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব ও উপসচিব পদে প্রচুর পদোন্নতি দিয়েছে। এতে আমাদের আপত্তি নেই। তবে গণমাধ্যম বলছে, একটি শ্রেণিকে সুযোগ-সুবিধা দিতেই পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। দেশে এমনিতেই অর্থের অভাব। সরকার যে রাজস্ব আদায় করছে তাতে হচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এত পদোন্নতিতে সার্ভিস আরও খারাপ হবে। লোকজন বেশি হওয়ায় কাজ আরও খারাপ হবে। সরকারের উদ্দেশ্য সৎ নয়। উদ্দেশ্য হচ্ছে, নির্বাচনে জিততে হবে। সরকার পদোন্নতি দিয়ে জনগণের পয়সায় নির্বাচন প্রভাবিত করতে চায়।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার প্রশাসনকে ধ্বংস করেছে। অন্য কারও এ প্রশাসন দিয়ে দেশ চালানো কঠিন হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে সরকার। আগামীতে অন্য কোনো সরকার এলে তাদের খুবই খারাপ অবস্থার মুখোমুখি হতে হবে। মাদকের বিস্তার ঘটিয়ে সরকার দেশের তরুণ সমাজকে ধ্বংস করেছে। পরিবেশ ও প্রকৃতি ধ্বংস করেছে। আগামী প্রজন্মের জন্য আমরা একটি ধ্বংস ও বিপর্যস্ত বাংলাদেশ উপহার দিতে যাচ্ছি। আমাদের দায় আছে। রাজনৈতিকভাবে আমরা এর বিরোধিতা করেই যাব। নতুন প্রজন্মের জন্য একটি ভালো সমাজ উপহার দিতেই আমাদের রাজনীতি।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, জহিরুল ইসলাম জহির, উপদেষ্টা সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম ওমর, খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান এমপি, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহ ইয়া চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মো. আমির হোসেন ভূঁইয়া, মো, বেলাল হোসেন, যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মো. হেলাল উদ্দিন, হুমায়ুন খান, ওলিউল্লাহ মাসুদ, সুলতান মাহমুদ, এমএ রাজ্জাক খান, গোলাম মোস্তফা প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।