মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক
১৭ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন, ব্যয় ৫২১৩ কোটি টাকা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় ৫০ মেগাওয়াট (এসি) ক্ষমতার সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। সেখান থেকে বিদ্যুৎ কেনা হলে ২০ বছর মেয়াদে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা ১০.৬৯৮ টাকা খরচ পড়বে। এছাড়া এক কোটি ৬০ লাখ লিটার সয়াবিন, ৫০ হাজার টন গম, এক লাখ টন সার আমদানিসহ ১৬টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে মোট ব্যয় হবে ৫২১৩ কোটি টাকা। এর আগে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে এলএনজি কেনার প্রক্রিয়াকরণ নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
বুধবার অনুষ্ঠিত দুটি ভার্চুয়াল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এসব বিষয় তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আমিন উল আহসান।
ডিমলা উপজেলায় সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ১৭৩২ কোটি টাকা। এর দরদাতা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে এসকে নিউ এনার্জি কো. এজে পাওয়ার কো. লি. গ্যাস ও এটিএন সলিউশন লি.।
বৈঠকে আশুলিয়া ৩৩.৭৫ মে.ও, মাধবদী ২৪.৩০ মে.ও এবং চান্দিনা ১৩.৫০ মে.ও গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ ৫ বছর বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। বর্ধিত মেয়াদে স্পন্সর কোম্পানি সামিট পাওয়ার লি. কে ট্যারিফ কিলোওয়াট ঘণ্টা ৫.৬৫ টাকা হিসাবে মোট ১ হাজার ১১৮ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া ঘোড়াশাল কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের শিডিউল মেনটেইন্যান্স কাজ সিমেন্স জার্মানির কাছ থেকে কেনা প্রস্তুব অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হবে ২৯৭ কোটি টাকা।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, টিসিবির জন্য ৮ হাজার মে.টন মসুর ডাল আমদানি করা হবে তুর্কি থেকে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৭২ কোটি টাকা। একই প্রতিষ্ঠানের জন্য ৮০ লাখ লিটার করে পৃথক ভাবে দুটি চালানে এক কোটি ৬০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে। এতে ব্যয় হবে ২৫৪ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে প্রথম লটের মূল্য প্রতি কেজি ১৫৯.৪৫ টাকা এবং দ্বিতীয় লটের প্রতি কেজির মূল্য পড়বে ১৫৮.৮০ টাকা।
এছাড়া মেসার্স এগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল লি. সিঙ্গাপুর থেকে ৫০ হাজার টন গম আমদানি করা হবে। প্রতি কেজি ৩২ দশমিক ৫৭ টাকা মূল্যে মোট ব্যয় হবে প্রায় ১৬৩ কোটি টাকা। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন থেকে পৃথক লটে এক লাখ মে.টন এমওপি সার আমদানি করবে বিএডিসি। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৩৪৮ কোটি টাকা।
টোটাল ইঞ্জিনিয়ারিং গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লি.র (সুইজারল্যান্ড) কাছ থেকে প্রায় ৩৪ লাখ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করা হবে। ব্যয় হবে প্রায় ৪৭৯ কোটি টাকা। এছাড়া জার্মানির বার্লিনে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের পূর্ত কাজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ব্যয় হবে ১৪৬ কোটি টাকা। কক্সবাজার জেলার মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন প্রকল্পের আওতায় পরামর্শক হিসাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হবে প্রায় ১৫৫ কোটি টাকা।
নারায়ণগঞ্জ প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল উন্নয়নের পূর্ত কাজ দেওয়া হয় তমা কনস্ট্রাকশন কো. ডল. কে। এ প্রস্তাবের ব্যয় হবে ৬১ কোটি টাকা।
এছাড়া কচুয়া-বেতাগী-পটুয়াখালী-লোহালিয়া-কালাইয়া সড়কের পায়রা নদীর উপর সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পূর্ত কাজে ভেরিয়েশনে অতিরিক্ত ৯৯ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয় বৈঠকে।
রাজশাহী মহানগরীতে বন্ধগেট রেলক্রসিং এ ফ্লাইওভার এবং নতুন বিলসিমলা রেলক্রসিং নির্মাণের পূর্ত কাজ অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় ১৭০ কোটি টাকা। খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় ৭৪৮ মিটার ব্রিজ নির্মাণের পূর্ত কাজ দেওয়া হয়েছে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং লি. কে। এতে ব্যয় হবে ১২০ কোটি টাকা।
অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক : এ বৈঠকে চারটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এরমধ্যে রয়েছে কক্সবাজার মহেশখালীর এক্সেলেটর এনার্জি বাংলাদেশ লি. এবং সামিট ওয়েল অ্যান্ড শিপিং কো. লি থেকে ১৫ বছর মেয়াদি এলএনজি সরবরাহের প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণের নীতিগত অনুমোদন। এছাড়া আরও দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।