মানি লন্ডারিং মামলা
জি কে শামীমের ১০ বছরের কারাদণ্ড

আদালত প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ফাইল ছবি
মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় যুবলীগের কথিত নেতা ও আলোচিত ঠিকাদার এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের ১০ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তার সাত সহযোগীর চার বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এ রায় দেন। দণ্ডের পাশাপাশি আসামিদের তিন কোটি ৮৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮১৪ টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে। জরিমানার টাকা ৬০ দিনের মধ্যে পরিশোধ না করলে আরও এক বছরের কারাভোগ করতে হবে।
চার বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. মোরাদ হোসেন, মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. শহীদুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন, মো. সামসাদ হোসেন ও মো. আনিছুল ইসলাম।
এর আগে ১৫ জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৫ জুন দিন ধার্য করেন। ওই দিন আসামিপক্ষের আইনজীবী অধিকতর যুক্তি উপস্থাপন করেন। পরে আদালত রায় ঘোষণার জন্য ১৭ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন।
২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সাত সশস্ত্র দেহরক্ষীসহ জি কে শামীমকে তার কার্যালয় থেকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব। নিকেতন এ-ব্লকের ৫ নম্বর রোডের ১৪৪ নম্বর বাড়িতে তার অফিসে র্যাব ১১ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। তার কার্যালয় থেকে এক কোটি ৮০ লাখ টাকা, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ৭৫২ সিঙ্গাপুরের ডলার, ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর, অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ জব্দ করা হয়। এরপর জি কে শামীমের বিরুদ্ধে র্যাব বাদী হয়ে অস্ত্র, মাদক ও মানি লন্ডারিংয়ের তিনটি মামলা করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবু সাঈদ তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৪ আগস্ট আদালতে জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় চার্জশিট দাখিল করেন। ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত। মামলাটিতে চার্জশিটভুক্ত ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, শামীম তার দেহরক্ষীদের সহযোগিতায় দীর্ঘদিন ধরে নিজ নামে লাইসেন্স করা অস্ত্র প্রকাশ্যে বহন, প্রদর্শন ও ব্যবহার করে লোকজনের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করে আসছিলেন। বিভিন্ন ধরনের টেন্ডারবাজি, মাদক ও জুয়ার ব্যবসাসহ স্থানীয় টার্মিনাল, গরুর হাট-বাজারে চাঁদাবাজি করে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থের মালিক হয়েছেন।
মামলার তদন্ত সূত্রে জানা যায়, জি কে শামীম ও তার পরিবার বাংলাদেশ থেকে অবৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থ পাচারের উদ্দেশ্যে মজুত রেখেছে। এ ছাড়া আসামি যেকোনো সময় মজুত করা অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার প্রক্রিয়া নিতে পারে। মামলার সুষ্ঠু-তদন্তের স্বার্থে অপরাধলব্ধ আয়সংক্রান্ত ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। আসামির অপরাধলব্ধ আয় অবরুদ্ধ না হলে ব্যাংক হিসাবে জমা করা অর্থ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে আইনের উদ্দেশ্য ব্যাহত হতে পারে। ওই হিসাবগুলোতে কয়েকশ’ কোটি টাকা রয়েছে বলে জানা যায়।