সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন
ধরাশায়ী হওয়ার ঝুঁকিতে সোয়া ডজন কাউন্সিলর
আবদুর রশিদ রেনু, সিলেট
প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পুরাতন এলাকার ৩৬টি কাউন্সিলর পদে ১৬৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ২৭টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১২৩ জন ও ৯টি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৪১ জন রয়েছেন।
বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় প্রার্থী হননি নগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চারবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। সংরক্ষিত ওয়ার্ডের তিনবারের কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট রোকশানা বেগম শাহনাজ এবার প্রার্থী হয়েছেন ২৫নং সাধারণ ওয়ার্ডে। সিলেট সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে এর আগে সাধারণ ওয়ার্ডে কোনো মহিলা প্রার্থী হননি। মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী শাহনাজকে প্রার্থী হওয়ায় আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
ভোটযুদ্ধে থাকা ৩৫ জন বর্তমান কাউন্সিলরের মধ্যে সোয়া ডজন (১৫ জন) এবার ধরাশায়ী হতে পারেন। এর মধ্যে সাধারণ ওয়ার্ডের ১০ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ৫ জন বর্তমান কাউন্সিলর রয়েছেন হারের ঝুঁকিতে। গত কয়েক দিন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ভোটারদের সঙ্গে আলাপ করে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
নির্বাচনি মাঠে পরিবর্তনের স্লোগান তুলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা এবার বেশ সাড়া ফেলেছেন। যা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ভোটারদের মধ্যে প্রভাব ফেলেছে। তবে পিছিয়ে থাকলেও কয়েকজন জোর লড়াইয়ে আছেন। শেষ মুহূর্তের সমীকরণে বদলে যেতে পারে এ হিসাব।
হারের ঝুঁকিতে থাকা সাধারণ ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলরদের মধ্যে আছেন ১নং ওয়ার্ডে সৈয়দ তৌফিকুল হাদী। তার সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন মুফতি কমর উদ্দিন ও সৈয়দ আনোয়ারুছ সাদাত। ২নং ওয়ার্ডে বিক্রম কর সম্রাট। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক কাউন্সিলর মো. রাজিক মিয়া রয়েছেন ভালো অবস্থানে। ৩নং ওয়ার্ডে আবুল কালাম আজাদ লায়েক। তার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর এসএম আবজাদ হোসেন। মাঠে লড়ছেন মিজানুর রহমান ও বদরুল ইসলাম লস্কর। ১০নং ওয়ার্ডে মো. তারেক উদ্দিন পিছিয়ে আছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মো. মোস্তফা কামাল, গোলাম কিবরিয়া মাসুক রয়েছেন ভালো অবস্থানে। পিছিয়ে নেই মোহাম্মদ ছাইদুর রহমান, মো. আব্দুল হাকীমও।
১৫নং ওয়ার্ডে মো. ছয়ফুল আমিন বাকের আছেন বেকায়দায়। সাবেক কাউন্সিলর মো. মুজিবুর রহমান শওকত ও অ্যাডভোকেট কায়ছার হাসান শিমন এগিয়ে রয়েছেন। লড়াইয়ে আছেন মো. আবু তামিম, মো. আব্দুল গাফফার। ১৬নং ওয়ার্ডে আব্দুল মুহিত জাবেদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন মোহাম্মদ ফয়জুল হাসান ও আফরাফ খান। লড়াইয়ে আছেন সাবেক কাউন্সিলর জামাল আহমদও। তমাল রহমান, তামিম আহমদ খান ও মো. কামরুল হোসেন রাজীব রয়েছেন ভোটের মাঠে।
২২নং ওয়ার্ডে ছালেহ আহমদ সেলিমের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে মো. ফজলে রাব্বী চৌধুরীর। পিছিয়ে নেই মো. বদরুল আজাদ রানা, মোহাম্মদ আবু জাফর, মোহাম্মদ দিদার হোসেন, মো. ইব্রাহিম খান সাদেক ও শোয়াইবুর রহমান শোয়াইব। ২৪নং ওয়ার্ডে সোহেল আহমদ রিপন এবার কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে।
সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ শাহজাহান ও হুমায়ুন কবির সুহিন রয়েছেন ভালো অবস্থানে। লড়াইয়ে আছেন হাবিবুর রহমান, আব্দুস শহিদ লস্কর, মোহাম্মদ আবুল কাশেম খায়ের।
২৫নং ওয়ার্ডে তাকবির ইসলাম পিন্টুর জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন সংরক্ষিত ওয়ার্ডে তিনবারের কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট রোকসানা বেগম শাহনাজ। সাধারণ ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়ে ভোটারদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছেন তিনি। লড়াইয়ে আছেন সাবেক কাউন্সিলর আশিক আহমদ, মো. মোফাজ্জুল হোসেন ও মো. সাহাব উদ্দিন সিহাব।
২৭নং ওয়ার্ডে মো. আজম খান অনেকটা পিছিয়ে রয়েছেন। তার চেয়ে ভালো অবস্থানে আছেন সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল জলিল নজরুল, সাংবাদিক মঈন উদ্দিন ও জালাল উদ্দিন আহমদ কয়েস। এছাড়াও লড়াইয়ে আছেন বিপ্লব কান্তি দে মাধব ও শাহীন আহমদ।
হারের ঝুঁকিতে থাকা সংরক্ষিত ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলরদের মধ্যে রয়েছেন ২নং ওয়ার্ডে কুলসুমা বেগম পপি। এই ওয়ার্ডে এখন পর্যন্ত কোনো কাউন্সিলর টানা দ্বিতীয়বার জয়লাভ করতে পারেননি। চারটি নির্বাচনে চারজন কাউন্সিলর হয়েছেন। এই ধারা অব্যাহত থাকলে এবার নতুন মুখ বিজয়ী হতে পারে। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন রুনা বেগম, জোসনা আহমদ, তাহমিনা রহমান রোবা। ৩নং ওয়ার্ডে রেবেকা বেগমের হ্যাটট্রিক কাউন্সিলর হওয়া ঝুঁকির মুখে। ৭ জন প্রার্থীর মধ্যে একাধিক প্রার্থীর অবস্থা তার চেয়ে ভালো। ভোটযুদ্ধে লড়ছেন রুবি বেগম, নেহারুন বেগম, শ্যামলী সরকার, মুসলিমা নাজনিন হাসান, নাছরিন আহমদ নুপুর ও রুকসানা খানম।
৪নং ওয়ার্ডে মাসুদা সুলতানা সাকি পিছিয়ে রয়েছেন একাধিক প্রার্থীর চেয়ে। সাবেক কাউন্সিলর রুহেনা খানম মুক্তা, অ্যাডভোকেট জোহরা জেসমিন ও শিক্ষিকা সালমা বেগম তার চেয়ে ভালো অবস্থানে আছেন। লড়ছেন উম্মে সালমা, তাহমিনা বেগম, রুবি বেগম, সুনিয়া আক্তার সূচনা ও রুপিয়া খানম। ৫নং ওয়ার্ডে এবার চমক দেখাতে পারেন অ্যাডভোকেট জয়শ্রী দাস জয়া। বর্তমান কাউন্সিলর শাহানা বেগম শানু ও সাবেক কাউন্সিলর দীবা রানী দে শেষ মুহূর্তে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে মরিয়া। ৮নং ওয়ার্ডে রেবেকা আক্তার লাকীর জয়ের পথে প্রধান বাধা সাবেক কাউন্সিলর সালেহা কবীর সেপী। জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী সেপীকে প্রার্থী হওয়ায় আজীবন বহিষ্কার করেছে বিএনপি। এছাড়াও ভোটযুদ্ধে আছেন শারমিন আক্তার রুবি, মিনা বেগম ও মোছাম্মৎ হেনা বেগম।