সব দল ও পেশার মানুষের জন্য কাজ করব: তালুকদার আব্দুল খালেক
আহমদ মুসা রঞ্জু, খুলনা
প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিশাল ভোটের ব্যবধানে তৃতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক। বুধবার নিজ বাসভবনে তিনি কথা বলেন যুগান্তরের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাকে কে ভোট দিয়েছে কে দেয়নি এ নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই। আমি খুলনাবাসীর মেয়র। সব দল ও সব পেশার মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।
জয়ের পরের অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রত্যেক বিজয় নতুন উদ্যমে মানুষকে কাজ করতে শেখায়। প্রধানমন্ত্রী আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন, আমি চেষ্টা করেছি। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের পরিশ্রম এবং ভোটারদের সমর্থন আমাকে আবার বিজয়ী করেছে। এ জয় খুলনাবাসীর।
নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ ছিল কি না-এমন প্রশ্নে খালেক বলেন, আমি কোনো চ্যালেঞ্জ মনে করিনি। তার কারণ আমি জানি খুলনাবাসীর জন্য আমি কতটুকু করেছি। একসময়ের অবহেলিত খুলনা এখন মডেল। বাকি কাজ সম্পন্নের জন্য আমি ওয়াদা করেছিলাম। অনেকেই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে। শেষ পর্যন্ত জনগন আস্থা রেখেছে নৌকার প্রতি।
নির্বাচনে ভোটের হার কম হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি বাধা দিয়েছে বলে ভোট কম পড়েছে বিষয়টি এমন নয়। আমরা আশা করেছিলাম ৬০-৬৫ শতাংশ মানুষ ভোট দেবে। সেটি হয়নি। আপনারা জানেন, খুলনার কলকারখানাগুলো এখন বন্ধ। এখানকার শ্রমিকদের একটি বড় অংশ নগরীতে বসবাস করে না। ফলে তারা ভোট দিতে আসেনি। এসব কারণে ভোটার উপস্থিতির হার কম হয়েছে।
জয়ের পেছনের কৌশল জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জয়ের পেছনে যেসব কাজ প্রভাব ফেলেছে তার একটি হচ্ছে, দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে আমার নেতাকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। দ্বিতীয়ত উন্নয়ন। গত ৫ বছরে খুলনায় রেকর্ড পরিমাণ বরাদ্দ এসেছে। যার সুফল পেতে শুরু করেছে মানুষ। এজন্য নগরবাসী আমাকে ভোট দিয়েছে।
দায়িত্ব গ্রহণের পর কোন কাজটাকে অগ্রাধিকার দেবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার প্রথম কাজ হবে করোনার কারণে যে সব কাজ শেষ করতে পারিনি সেগুলো শেষ করা। নগরীতে ৪১৮টি সড়কের উন্নয়নকাজ শেষ হয়েছে। আমি মেয়রের দায়িত্ব ছাড়ার সময় ১১৪টি সড়কের কাজ চলমান ছিল। সড়কের এই কাজগুলো শেষ হলে যোগাযোগব্যবস্থায় একটা বড় উন্নয়ন হবে। এ ছাড়া অন্যতম জরুরি কাজ হবে জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা। তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে ৮২৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রকল্পটি শেষ হলে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। নগরীতে জলাবদ্ধতার সমাধান হবে। এর বাইরে আমার নির্বাচনি ওয়াদা ছিল পাবলিক হলের জায়গায় একটি সিটি সেন্টার গড়া। আমরা খুলনার উন্নয়নের জন্য প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার একটি প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। সেখানে সিটি সেন্টার নির্মাণ প্রকল্পটি রয়েছে। এটি পাশ হলে সেটাও করা সম্ভব হবে।
নতুন কাউন্সিলরদের বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন পুরোনো বলে কোনো কথা নেই। উন্নয়ন কাজ এককভাবে করা যায় না। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কাজ বাস্তবায়ন হয়। যারাই নির্বাচিত হয়েছেন আমার সঙ্গে সমন্বয় করেই তাদের চলতে হবে।
নগরবাসীর জন্য উদ্দেশে কী বলতে চান জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি যেখানেই নির্বাচন করেছি সেখানকার মানুষের জন্য কাজ করেছি। তারাও আমার কাজে খুশি। তা না হলে তারা আমাকে বিজয়ী করতেন না। খুলনাবাসী আমার ওপর আস্থা রেখেছে, জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও আমি এই শহরের উন্নয়ন করব।