Logo
Logo
×

শেষ পাতা

জাবিতে অনশনরত ছাত্রের ওপর ছাত্রলীগের হামলা

Icon

জাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

জাবিতে অনশনরত ছাত্রের ওপর ছাত্রলীগের হামলা

ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) রাতের অন্ধকারে অনশনরত শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম প্রত্যয়ের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সেখানে উপস্থিত কয়েকজন ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, রাত ১১টায় লোডশেডিং চলাকালে শাখা ছাত্রলীগের উপ-সাহিত্য সম্পাদক গৌতম কুমার দাস ও সদস্য গোলাম রাব্বীর (ইংরেজি ৪৫ ব্যাচ) নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন ছাত্র প্রত্যয়ের ওপর হামলা চালায় এবং তার (প্রত্যয়) বিছানা ফেলে দেয়। এ সময় হামলাকারীরা সেখানে অবস্থানরত প্রগতিশীল আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের বলতে থাকে, ‘অন্য হলের ছেলেরা এখানে কী করছে?’ এই প্রশ্ন করার পরপরই তারা সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচী, অর্ণব সিদ্দিকী, সিল্কী নূরকে টানাহ্যাঁচড়া করে। পরে অনশনরত প্রত্যয়কে সেখান থেকে তুলে দেওয়ার জন্য চিকিৎসাকেন্দ্রে ফোন করে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসে গৌতম। জাবি চিকিৎসা কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে নম্বরটি (০১৫৬৮১২০৮৬৩) গৌতমের বলে জানা যায়।

অ্যাম্বুলেন্স এলে হামলাকারীরা ধস্তাধস্তি করে সেটিতে প্রত্যয়কে তুলে দেয়। এরপর আবার হামলা চালিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের পেছনের গ্লাস ভেঙে দেয় তারা। এ সময় সেখানে উপস্থিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচীর ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ, মাশিয়াত সৃষ্টি, মনিকা নকরেক ও শারমিন সুরকে হেনস্তা করে।

ভুক্তভোগী সৃষ্টি (মার্কেটিং ৪৭ ব্যাচ) বলেন, আমরা প্রত্যয়ের অনশনস্থলে যাই। লোডশেডিংয়ের সুযোগ নিয়ে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাকে হেনস্তা করে। রাত সাড়ে ১১টায় বিদ্যুৎ এলে প্রক্টর ও প্রভোস্ট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘আমাদের একজন এসিসট্যান্ট প্রক্টর সেখানে দাঁড়ানো ছিলেন। কিন্তু একটা মবে তার কী করার ছিল। এটা একমাত্র এলিয়েন বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে কেউ নিয়ম মানে না।’

হামলার প্রতিবাদে রাত ১২টায় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্য ভবনের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান শেষে শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলোর মধ্যে মীর মশাররফ হলের সব অবৈধ ছাত্রকে বের করে দেওয়া ও হামলাকারীদের চিহ্নিত করে বহিষ্কার করার কথা রয়েছে।

ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ বলেন, প্রত্যয়ের দাবি খুবই যৌক্তিক এবং সহজেই এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব। এই হলে ৪৯০ টি রুম রয়ছে। সেসব রুমের তালিকা করতে সর্বোচ্চ সময় ১ দিনের বেশি লাগার কথা নয়। কিন্তু প্রশাসন লিস্ট তৈরি করতে টালবাহানা করছে। মূলত তারা অছাত্রদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। যার প্রমাণ এই হামলা।

মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সাব্বির বলেন, আমরা গণরুম থেকে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নন অ্যালোটেড শিক্ষার্থীদের রুমে তুলে দিচ্ছিলাম। এতে অসন্তুষ্ট হয়ে কিছু ছাত্র এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদস্য গোলাম রাব্বী বলেন, ‘আমি প্রত্যয়ের সঙ্গে দেখা করতে গেছিলাম। তাকে বলেছি আমরাও তোমার সঙ্গে একমত। আমি চলে আসার পর অনেক হইচই শুনতে পাই। আমি হামলা কিংবা অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত না। আমি সেখানে ছিলাম না। যারা আমার নাম বলেছে তারা প্রমাণ করুক আমি সেখানে ছিলাম।’

এ ব্যাপারে জানতে গৌতম কুমার দাসের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হয়োছে। কিন্তু তিনি রিসিভ করেননি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম