বিসিসি নির্বাচন
স্বশিক্ষিত খোকন উচ্চশিক্ষিত তাপস
সাইদুর রহমান পান্থ, বরিশাল ব্যুরো
প্রকাশ: ২১ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে ৬ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস উচ্চ শিক্ষিত। ইসলামী আন্দোলনের মুফতি ফয়জুল করীম পড়াশোনা করেছেন মাদ্রাসায়। আর নৌকার আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত হলফনামায় নিজেকে স্বশিক্ষিত বলে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামিমের বিরুদ্ধে নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন জাপার প্রার্থী। এ ছাড়া ৩ বছর পর অভিমান ভেঙে বড় ভাই আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর স্ত্রী শাহানারা বেগমের কবর জিয়ারত করেছেন নৌকার প্রার্থী ছোট ভাই খোকন সেরনিয়াবাত।
নির্বাচন কমিশন ও প্রার্থীদের তথ্য অনুযায়ী ৫ম পরিষদের সিটি নির্বাচনে এবারও শিক্ষাগত যোগ্যতায় এগিয়ে রয়েছেন জাপা ইকবাল হোসেন তাপস। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসির পর জাপানে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি নিয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সোশ্যাল সায়েন্সে মাস্টার্স করেছেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম একজন দাওরায়ে হাদিস ও আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কামিল পাশ।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত স্বশিক্ষিত বলে হলফনামা জমা দিয়েছেন। খোকনের নির্বাচনি মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ফরহাদ বিন জাকির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু এইচএসসি পাশ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী হোসেন নিজেও স্বশিক্ষিত বলে নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের লিখিত অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীর প্রধান সমন্বয়কারী ও জাপার মহানগর আহ্বায়ক অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী একের পর এক নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করেই চলছেন। তার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন সংসদ-সদস্য ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিম। অভিযোগে তারা পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর নির্বাচনি এলাকায় ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থায় ১২ জুন পর্যন্ত নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।
জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপস অভিযোগ করেন, স্থানীয় সংসদ-সদস্য ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এভাবে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় সাধারণ ভোটাররা বিব্রত হচ্ছেন। নৌকা প্রতীকের কর্মী ও বহিরাগতরা নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্র দখল করে নেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে সংসদ সদস্য ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। খোকন সেরনিয়াবাতের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার ব্যক্তিগত সহকারী মো. রুবেল জানান, স্যার এই অভিযোগের বিষয়ে কিছু জানেন না।
এ ব্যাপারে বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রির্টানিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, এই অভিযোগ করবে প্রার্থী বা প্রার্থীর মনোনীত নির্বাচনি এজেন্ট। এর বাইরে কেউ অভিযোগ করলে তা হবে না। এ ছাড়া কোনো প্রকার প্রমাণ ছাড়াই অভিযোগ করা হয়েছে একটি সাদা কাগজে।
এদিকে তিন বছর পর বড় ভাই আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর স্ত্রী সাহানারা বেগম কবর জিয়ারত করেছেন খোকন সেরনিয়াবাত।
হাসানাত পরিবারের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘদিন খোকন সেরনিয়াবাত বড় ভাইয়ের স্ত্রীর কবরের পাশে যাননি। অবশেষে শুক্রবার বাদ জুমা তিনি সাহানারা বেগমের কবর জিয়ারত করেন। বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, দীর্ঘদিন পর হলেও খোকন সেরনিয়াবাত অভিমান ভেঙে ভাবির কবর জিয়ারত করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি নিজের উদারতার পরিচয় দিয়েছেন। এবার দুই পরিবারের মধ্যে কিছুটা হলেও দূরত্ব কমে আসবে।
যুবলীগের টিম গঠন : প্রচার-প্রচারণার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় টিম গঠন করেছে যুবলীগ। যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের নির্দেশে সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের স্বাক্ষরে এ টিম গঠন করা হয়। টিম লিডার ও আহ্বায়ক করা হয়েছে প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু আহমেদ নাসিম পাভেলকে।
যুগ্ম-আহ্বায়ক হিসাবে রয়েছেন-বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বদিউল আলম, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, তাজ উদ্দিন আহমেদ ও জসিম মাতুব্বর। বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলামকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। একই সঙ্গে ১৯ সদস্যবিশিষ্ট সমন্বয়ক টিম গঠন করা হয়েছে।