Logo
Logo
×

শেষ পাতা

শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় গণমানুষের নায়ককে শেষ বিদায়

বাবার কবরের পাশে শায়িত

Icon

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় গণমানুষের নায়ককে শেষ বিদায়

শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিবেদনের মধ্য দিয়ে গণমানুষের প্রিয় নায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুককে শেষ বিদায় জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বরে শত শত মানুষ কফিনে ফুল দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, অভিনয়শিল্পী, সাংস্কৃতিক সংগঠক থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

এছাড়া এফডিসি, চ্যানেল আই কার্যালয়ে শত শত মানুষ ফুল দিয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। ঢাকায় শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সন্ধ্যায় গাজীপুরের কালীগঞ্জের নিজ বাড়িতে সন্ধ্যায় ঢাকাই সিনেমার স্বর্ণযুগের চিত্রনায়ক ও সংসদ-সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুককে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

নায়ক ফারুক সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ১০টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মঙ্গলবার সকালে ইউএস বাংলার বিশেষ একটি ফ্লাইটে লাশ দেশে আনা হয়। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লাশ প্রথমে নেওয়া হয় তার উত্তরার বাসায়। সেখানে পরিবারের সদস্যরা তাকে শেষবারের মতো দেখেন।

পরে কফিন নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে। গাড়ি থেকে কফিন সাংস্কৃতিক জোটের সদস্যরা শ্রদ্ধা নিবেদন মঞ্চে নিয়ে যান। সেখানে প্রথমে ফারুকের কফিনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে কর্মরত লেফটেন্যান্ট কর্নেল সৈয়দ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম শ্রদ্ধা জানান। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ ফারুকের কফিনে শ্রদ্ধা জানান। জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষে সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস কমোডর এমএম নাঈম রহমান শ্রদ্ধা জানান।

আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা জানান দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক, পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি বলেন, রাজনৈতিক বিশ্বাসে, কর্মকাণ্ডে নায়ক ফারুক সারা জীবন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ওই অবস্থানের কারণে তার পেশাজীবন হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারত, কিন্তু তিনি আদর্শ থেকে একচুলও নড়েননি।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ বলেন, উজ্জ্বল নক্ষত্র হারালাম আমরা। সংস্কৃতি অঙ্গনের পাশাপাশি রাজনৈতিক অঙ্গনেও বিশাল শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। শ্রদ্ধা জানান নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। উপাচার্য ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে নায়ক ফারুকের শ্রদ্ধা নিবেদন পর্বে যোগ দেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, ফেরদৌস, খলনায়ক মিশা সওদাগর, নায়িকা নিপুণ, নায়ক জায়েদ খান প্রমুখ।

এছাড়া কফিনে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শেষ শ্রদ্ধা জানায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন, জাতীয় কবিতা পরিষদ, জয় বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, আওয়ামী শিল্পীগোষ্ঠী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।

শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানে ফারুকের ছেলে রওশন হোসেন পাঠান শরৎ বলেন, ‘সারাজীবন বাবা মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন। মৃত্যুর পর আপনারা সেই ভালোবাসা দিয়ে যাবেন। তার জন্য দোয়া করবেন।’

কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর লাশ বেলা সোয়া ১টায় এফডিসিতে নেওয়া হয়। সেখানে ফারুককে শেষ শ্রদ্ধা জানান তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ, চিত্রনায়িকা সুজাতা, চিত্রনায়ক আলমগীর, উজ্জল, নায়িকা রোজিনা, চিত্রনায়ক ওমর সানী, পরিচালক সমিতির মহাসচিব শাহীন সুমন, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন ও সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার।

এফডিসির জানাজা শেষে লাশ নেওয়া হয় চ্যানেল আইতে। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তৃতীয় দফা জানাজা হয়। বিকালে গুলশানের আজাদ মসজিদে আরেক দফা জানাজা হয়। এরপর লাশ নেওয়া হয় গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার তুমুলিয়া দক্ষিণ সোম গ্রামের বাড়িতে। সেখানে সোমটিওরী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসংলগ্ন ঈদগাহ ময়দানে সর্বশেষ জানাজা হয়। পরে বাবা আজগর হোসেন পাঠানের পাশে সমাহিত করা হয় নায়ক ফারুককে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম