Logo
Logo
×

শেষ পাতা

মোখায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকার কাজ চলছে

পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে

ফাইল ছবি

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় মোখায় এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে ২ হাজার ২০০ ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ এবং ১০ হাজার ঘরবাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। তবে ঝড়ের সময় গাছের ডালপালা ভেঙে পড়ে কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ কাজ করছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ এবং আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে গণমাধ্যমকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ সব কথা বলেন।
এদিকে যুগান্তরের ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে জানা গেছে ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে কক্সবাজারের মহেশখালীতে তিন লবণ চাষির মৃত্যু হয়েছে। চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হতে চলেছে। ঝড়ের কারণে বন্ধ থাকা বিদ্যুৎ সরবরাহও স্বাভাবিক হয়েছে। তবে টেকনাফে ২০ হাজার গ্রাহক এখনও বিদ্যুৎহীন। সোমবার রাতের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ার কথা। সারা দেশে বন্ধ থাকা নৌ চলাচল ও কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে বিমান চলাচল আবার শুরু হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে গেছে জনজীবন। প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান তার ব্রিফিংয়ে আরও বলেন, বাড়িঘরের সংখ্যা ছাড়া ক্ষয়ক্ষতির আর কোনো তথ্য আমরা পাইনি। সেন্টমার্টিনে ১২শ ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে ক্ষতি হয়েছে বেশি। এই প্রথম বাংলাদেশ কোনো ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করল, যেখানে মৃত্যুর সংবাদ নেই। কারণ প্রাণহানিটাই সবচেয়ে বড় ক্ষতি। সবকিছুই ‘রিকভার’ করা যায়, কিন্তু মানুষের জীবন আর ফিরিয়ে আনা যায় না। ১০ নম্বর মহা বিপৎসংকেত থাকা অবস্থায় কাউকে আশ্রয়কেন্দ্রের বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি। তবে এ মুহূর্তে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে সবাই নিজ নিজ ঘরবাড়িতে চলে গেছেন। যাদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারা অনেকে বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি মেরামতে কাজ শুরু করেছেন।
কক্সবাজার : ঘূর্ণিঝড় মোখা রোববার যখন উপকূলীয় অঞ্চলে তাণ্ডব চালাচ্ছিল, তখন মহেশখালী দ্বীপের চাষিরা লবণ বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন। সে সময় ঝড়ের কবলে পড়ে তিন লবণ চাষির মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন-উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের কালাগাজীর পাড়া গ্রামের আবুল ফজলের ছেলে রিদোয়ান (৩৫), পানিরছড়া গ্রামের আকতার কবিরের ছেলে মুহাম্মদ নেছার (৩২) এবং পানিরছড়া বারঘর পাড়ার মৃত মতিনের ছেলে মো. আনছার। তিন লবণ চাষির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রণব চৌধুরী।
রোববার সকালে পলিথিন ও লবণ ওঠানোর জন্য ৪০-৫০ জন শ্রমিক মাঠে যান। বৃষ্টির মধ্যে কাজ করার কারণে ঠান্ডায় ৬-৭ জন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে বিকালে রিদওয়ানকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে লবণ মাঠে পলিথিন উঠাতে গিয়ে মৃত্যু হয় মুহাম্মদ নেছারের। তাকে রাত সাড়ে ১০টায় পানিতে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। এছাড়া এলাকাবাসী রোববার রাত সাড়ে ১১টায় লবণ মাঠ থেকে আনছারের মরদেহ উদ্ধার করে। স্থানীয়রা জানান, হোয়ানকের বিভিন্ন গ্রাম থেকে আরও ১০-১৫ জন লবণচাষি এখনো ঘরে ফেরেননি।
এদিকে মোখার তাণ্ডবের পর কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর, রাস্তাঘাট মেরামত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু হয়েছে। আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। সকাল থেকে কক্সবাজারে বিমান চলাচলও শুরু হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোখার তাণ্ডবের পর রোববার রাতেই আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরে গেছেন দুর্গত মানুষ। ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। বিশেষ করে কক্সবাজারের টেকনাফ ও সেন্টমাটিন দ্বীপ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব তারা। বাড়িঘর মেরামতের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা তাদের। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পও। তবে ক্ষতিগ্রস্তরা সরকারিভাবে এখনও সহায়তা পাননি। এদিকে টেকনাফে ২০ হাজার গ্রাহক এখনও বিদ্যুৎহীন। সেন্টমার্টিনে নিজস্ব (সৌরবিদ্যুৎ) ব্যবস্থাও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। এ কারণে পুরো দ্বীপ সোমবারও অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল। তেলের অভাবে বন্ধ রয়েছে নিজস্ব জেনারেটর সার্ভিস। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে খুঁটি ভেঙে, তার ছিঁড়ে, ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়নি। টেকনাফে প্রায় ৬০ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছেন বলে জানা গেছে। সোমবার রাতের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ার কথা বলে জানান সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম