Logo
Logo
×

শেষ পাতা

খাতুনগঞ্জে চিনির পর বাড়ল পেঁয়াজের দাম

ভারত থেকে আমদানি বন্ধ ও সরবরাহ সংকটের অজুহাত

Icon

আহমেদ মুসা, চট্টগ্রাম

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

খাতুনগঞ্জে চিনির পর বাড়ল পেঁয়াজের দাম

সরবরাহ সংকটের অজুহাতে ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজারখ্যাত খাতুনগঞ্জ-চাক্তাইয়ে চিনির পর এবার হঠাৎ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পেঁয়াজের দাম। একদিনের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। খুচরা বাজারে আরও বেশি বেড়েছে। অপরদিকে আমদানি বন্ধ এ অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন আমদানিকারকরা। এসব অজুহাতে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে দেশি পেঁয়াজের দামও। একাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে রোববার কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। চট্টগ্রামে বিভিন্ন উপজেলায়ও উচ্চমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। কুরবানির ঈদ আসার আগেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তারা আছেন উৎকণ্ঠায়। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বলছে, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের জিম্মি করে অতিরিক্ত মুনাফা লুটে নিচ্ছেন।

১৫ মার্চ থেকে ভারতের পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। দেশীয় পেঁয়াজ চাষিদের উপযুক্ত দাম পেতে সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের নির্দেশ দেয়। আমদানি বন্ধের জের ধরে দেশের বাজারে বাড়ছে পেঁয়াজের ঝাঁজ। ভালোমানের বড় সাইজের পেঁয়াজ চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫২ থেকে ৫৫ টাকা দরে। অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪২ টাকা দরে। ৩ দিন আগেই পাইকারি বাজারে ভালোমানের বড় সাইজের পেঁয়াজের দাম ছিল ৩২-৩৫ টাকা। আর মাঝারি সাইজের অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের পেঁয়াজের দাম ছিল কেজি প্রতি ২৮ টাকা। আর খুচরা বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি ভালোমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬২ টাকা পর্যন্ত। কিছু দোকানে আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। আর ছোট সাইজের (নিম্নমানের) পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকার বেশি দামে।

জানা গেছে, বর্তমানে দেশে তাহেরপুরী, বারি-১ (তাহেরপুরী), বারি-২ (রবি মৌসুম), বারি-৩ (খরিপ মৌসুম), স্থানীয় জাত ও ফরিদপুরী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। ফলে বছরজুড়ে কোনো না কোনো জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়। আমদানি করা হয় বাকি ৪ লাখ টন। মূলত এ আমদানিকৃত চার লাখ টন পেঁয়াজ বাজারের ওপর প্রভাব ফেলে।

খাতুনগঞ্জ ঘুরে দেখা গেছে, আড়তগুলোতে ভারতীয় পেঁয়াজের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। বিভিন্ন আড়তে শত শত বস্তা পেঁয়াজ মজুতও আছে। ট্রাকে ট্রাকে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় পেঁয়াজ যাচ্ছে। তবে খুচরা পর্যায়ে দোকানগুলোতে পেঁয়াজের সরবরাহ কম দেখা গেছে। সূত্র বলছে, সরবরাহ কমায় দাম বাড়ছে। তবে ভোক্তারা বলছেন, বাজারে পর্যাপ্ত মজুত আছে। ব্যবসায়ীরা কারসাজির মাধ্যমে দাম বৃদ্ধি করে মুনাফা লুটে নিচ্ছে।

খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের আড়তদার কামাল উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজের সরবরাহ নেই। ফলে হু হু করে বাড়ছে দাম। দেশি পেঁয়াজের দামও মনপ্রতি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, সরকার দেশীয় পেঁয়াজ চাষিদের রক্ষা করার জন্য ভারত থেকে আমদানি বন্ধ রেখেছে। এ কারণে চাহিদা অনুযায়ী বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ নেই। তাই ক’দিন ধরে পেঁয়াজের বাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। চাহিদা বাড়ার কারণে মোকামে দাম বেড়েছে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক অজুহাতে ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন। কিছুদিন চিনি ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে অতিরিক্ত মুনাফা লুটে নেন। খাতুনগঞ্জে বড় দুটি গ্রুপ সিন্ডিকেট করে চিনির দাম বাড়ায়। এখন পেঁয়াজকেন্দ্রিক ব্যবসায়ীরা নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে সাধারণ ক্রেতারাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম