Logo
Logo
×

শেষ পাতা

ছুটি পায়নি ডিএমপির ৭৫ শতাংশ জনবল

ঢাকার ১৬৩৬ ঈদ জামাত ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা

১৪৩৫ মসজিদ ও ১৮৯ ঈদগাহের নিরাপত্তায় থাকবে আর্চওয়ে, ফায়ার টেন্ডার, কমান্ড ভেহিক্যাল, সাব-কন্ট্রোল রুম ও সিসিটিভি

Icon

মাহমুদুল হাসান নয়ন

প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ঢাকার ১৬৩৬ ঈদ জামাত ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা

ঢাকার ১৬৩৬ ঈদ জামাত ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা। ফাইল ছবি

ঈদুল ফিতরের ছুটিতে রাজধানী ঢাকাজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকার ১ হাজার ৪৩৫টি মসজিদ ও ১৮৯টি ঈদগাহ ময়দান ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এই মসজিদ ও ঈদগাহগুলোতে ১ হাজার ৬৩৬টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। মুসল্লিদের তিন ধাপে আর্চওয়ে ও দেহতল্লাশির মাধ্যমে ঈদগাহে প্রবেশ করানো হবে। মোতায়েন থাকবে ফায়ার টেন্ডার ও কমান্ড ভেহিক্যাল। থাকবে সাব-কন্ট্রোল রুম ও ওয়াচ টাওয়ার। ঈদগাহগুলোতে সিটিটিভির মাধ্যমে বিশেষ নজরদারি করা হবে। এছাড়া যে কোনো ঝুঁকি এড়াতে সোয়াত টিম ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট প্রস্তুত থাকবে। নিরাপত্তার এ বিশাল কর্মযজ্ঞের সফল বাস্তবায়নে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ৩২ হাজার জনবলের ৭৫ শতাংশকেই ঈদের ছুটি দেওয়া হয়নি।

ডিএমপি সূত্র জানায়, ঈদের নামাজের নিরাপত্তার পাশাপাশি শহরের সামগ্রিক নিরাপত্তা রক্ষায় বেশকিছু পদক্ষেপ রয়েছে পুলিশের। এজন্য ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন তদারক সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। মার্কেটগুলোকে নিজস্ব অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সামগ্রিক নিরাপত্তা জোরদারের অনুরোধ করা হয়েছে। আগুনের ঘটনা নিয়ে মার্কেট কমিটিগুলোর সঙ্গে পুলিশ বৈঠক করেছে। সেখানে উন্নত বিশ্বের ন্যায় স্মোক ডিটেক্টর বসানোর কথা বলা হয়েছে। মার্কেট ও স্বর্ণের দোকানগুলোতে থানা পুলিশকে বিশেষভাবে নজরদারি করতে বলা হয়েছে। প্রতিদিন একটি টিমের মাধ্যমে মার্কেটগুলোতে নজরদারি অব্যাহত রেখেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাছাড়া এলাকাগুলোয় পুলিশি টহল বাড়ানো হবে।

জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অ্যাডমিন) একেএম হাফিজ আক্তার বৃহস্পতিবার বিকালে যুগান্তরকে বলেন, ঈদের ছুটি ঘিরে সব ধরনের নিরাপত্তা প্রস্তুতি আমাদের আছে। ছুটিতে পুলিশের প্যাট্রোল বাড়ানো হবে। যেসব বাসাবাড়ির মালিকদের সঙ্গতি রয়েছে তারা যেন ভবনে সিসিটিভি স্থাপন করেন সে বিষয়েও বলা হয়েছে। মূল্যবান সামগ্রীগুলো ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনায় নিরাপদে রাখতে বলা হয়েছে। ঈদের জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি মহানগরীর নিরাপত্তায় পুলিশ সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। খুব অল্পসংখ্যক জনবলকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। বাকিরা ঈদে কর্মস্থলেই কাটাবেন। অনেকে মাত্র ১ দিনের ছুটি পাবেন। অর্থাৎ পরিবারের সঙ্গে ঈদ কাটিয়ে পরদিন কর্মস্থলে যোগ দেবেন।

ডিএমপি সদর দপ্তর থেকে ইউনিটটির সব বিভাগে ঈদের ছুটি নিয়ে কমিশনারের পক্ষ থেকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট বিভাগের মোট ফোর্সের ২৫ শতাংশকে ছুটি প্রদান করতে হবে। মহানগরীর আশপাশের এলাকায় গ্রামের বাড়ি এমন জনবলকে ঈদের দিন ছুটি দেওয়া যেতে পারে। যাতে তারা পরেরদিন ডিউটিতে নিয়োজিত হতে পারেন। এছাড়া অফিসারদের ছুটির ক্ষেত্রে ঈদের ৫ দিন অনুমতি ছুটি, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নৈমিত্তিক ছুটি প্রদান করা যেতে পারে।

ডিএমপি সদর দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সহকারী কমিশনার থেকে ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের ৮৩ জন কর্মকর্তা ছুটি পেয়েছেন। যা এই পর্যায়ের মোট কর্মকর্তার ২২ দশমিক ৯ শতাংশ।

চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা : ঈদগাহ ময়দানকেন্দ্রিক চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখবে পুলিশ। প্রথম স্তরে ব্যারিকেড চেকপোস্টে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে দেহতল্লাশি করা হবে। দ্বিতীয় স্তরে আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে প্রবেশ, তৃতীয় স্তরে সমগ্র ঈদগাহ ময়দানের চতুর্দিকে বহিঃবেষ্টনীকেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। সর্বশেষ চতুর্থ স্তরে থাকবে অন্তঃবেষ্টনীকেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

এছাড়া মুসল্লিদের নিরাপত্তায় ঈদগাহে পুলিশ সাব-কন্ট্রোল রুম ও মহিলাদের জন্য আলাদা প্রবেশ গেট থাকবে। জাতীয় ঈদগাহ ও আশপাশের এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। মোতায়েন থাকবে ফায়ার টেন্ডার ও কমান্ড ভেহিক্যাল। যে কোনো সংকট মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হবে সোয়াত, বোম্ব-ডিসপোজাল ইউনিট ও মেডিকেল টিমকে।

নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ : ঢাকা মহানগরের নিরাপত্তায় নাগরিকদের প্রতি বেশকিছু অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ। সেগুলো হলো-জাতীয় ঈদগাহকেন্দ্রিক সব চেকপোস্টে পুলিশকে সহযোগিতা। ঈদ জামাতে কোনো ধরনের ব্যাগ, অস্ত্র, ছুরি, চাকু, দিয়াশলাই, দাহ্য পদার্থ সঙ্গে নেওয়া যাবে না। জায়নামাজ ও ছাতা চেকপোস্টে পুলিশের কাছে খুলে দেখাতে হবে। গাড়ি নির্ধারিত স্থানে পার্কিং করা। ঈদের জামাত শেষে সবাই একসঙ্গে তাড়াহুড়ো করে বের না হয়ে সুশৃঙ্খলভাবে বের হতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম