পরীক্ষামূলকভাবে এ সুযোগ
কাল থেকে পদ্মা সেতুতে চলবে মোটরসাইকেল
শৃঙ্খলা না মানলে সুযোগ বাতিল হবে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে সরকার। আর তা কার্যকর হচ্ছে ঈদের আগেই। আগামীকাল সকাল ৬টা থেকে সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল চলতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পরীক্ষামূলকভাবে এ সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সার্ভিস লেইন ব্যবহার করে মোটরসাইকেলে পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল করা যাবে। সার্ভিস লেইন ছেড়ে সেতুর মূল লেইনে প্রবেশ করা যাবে না।
মঙ্গলবার গণভবনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানান। মোটরসাইকেলকে গতিসীমা মেনে সেতু পার হতে হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতি হবে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। নির্ধারিত হারে টোল প্রদান করতে হবে। শৃঙ্খলা না মানলে সুযোগটি বাতিল করা হবে। বাইকারদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, আশা করি আপনারা সুযোগটি নষ্ট করবেন না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করার পর গত বছরের ২৬ জুন পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। প্রথম দিনেই সেখানে ঢল নামে মোটরবাইকের আরোহীদের। তারা সেতুর ওপর উঠে দল বেঁধে আনন্দ-উল্লাস আর হৈ-হুল্লোড়ে মাতেন। সেই রাতে বাইক দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হলে ২৭ জুন ভোর থেকে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করে সেতু বিভাগ। বাইকাররা ভেবেছিলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে মানুষের উন্মাদনা থিতিয়ে এলে দ্রুতই হয়তো স্বপ্নের সেতুতে আবার মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি মিলবে। কিন্তু সেজন্য তাদের অপেক্ষা করতে হলো দশ মাস।
এবারের ঈদযাত্রার আগে সড়কের পরিস্থিতি নিয়ে গত ২ এপ্রিল ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী সেদিন বলেন, মোটরসাইকেলে ঈদযাত্রার সুযোগ দিলে রাজধানীর পাঁচ থেকে ছয় লাখ বাইকার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যেতে পারবেন। এতে ঈদযাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হলেও সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বহুলাংশে বেড়ে যাবে।
এক্সপ্রেসওয়েতে ফাস্ট ট্র্যাক টোল পদ্ধতি : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক্সপ্রেসওয়ের টোল আদায়ে চালু হয়েছে ফাস্ট ট্র্যাক পদ্ধতি। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে এই সড়কের ধলেশ্বরী সেতু এবং ভাঙ্গা টোল প্লাজার একটি করে লেইনে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে টোল দিয়ে পার হচ্ছে যানবাহন। দেশে মেঘনা এবং মেঘনা গোমতী সেতুতে এ পদ্ধতিতে টোল আদায়ে আলাদা লেইন আছে। এখন বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়েতেও তা চালু হলো।
ফাস্ট ট্র্যাক পদ্ধতিতে টোল দিলে ১০ শতাংশ ছাড়ও পাওয়া যাবে। সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বিএম আমিনুল্লাহ নুরী গণমাধ্যমকে বিষিয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। তাদের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা উপায়ের মাধ্যমে এই টোল কেটে রাখা হবে। এটা করলে টোল প্লাজায় গাড়িকে কম সময় অপেক্ষা করতে হবে।
সূত্র জানায়, বিআরটিএ থেকে নিবন্ধিত সব যানবাহনের তথ্য ফাস্ট ট্র্যাকের সিস্টেমে রাখা আছে। ফাস্ট ট্র্যাকের জন্য নির্ধারিত লেইনে সেন্সর বসানো রয়েছে। একটা গাড়ি যখন যাবে তখন সেন্সর গাড়ির ডিজিটাল নম্বর প্লেট অনুযায়ী সেটি কী ধরনের যানবাহন, তা শনাক্ত করবে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত টোলের টাকা কেটে নেবে। এছাড়া আরএফআইডি কার্ড গাড়ির উইনশিল্ডে লাগানো থাকলে তাও শনাক্ত করে টোল কেটে নেওয়া যাবে। এজন্য মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থা উপায়-এ পর্যাপ্ত টাকা থাকতে হবে। মোবাইল অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকলে টোল প্লাজার ব্যারিয়ার উঠবে না বলে জানা গেছে।
চলাচলে শর্ত : এদিকে সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার শেখ ওয়ালিদ ফয়েজ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নির্ধারিত টোল দিয়ে সেতুতে উঠতে হবে। মোটরসাইকেলের জন্য নির্ধারিত টোলবুথ ও নির্ধারিত লেন (বাম পাশের সার্ভিস লেন) ব্যবহার করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই নির্ধারিত লেন পরিবর্তন করা যাবে না। ওভারটেকও করা যাবে না। সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হওয়া যাবে। চালক ও আরোহীকে হেলমেটসহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাসামগ্রী ব্যবহার করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই সেতুর ওপর দাঁড়ানো বা ছবি তোলা যাবে না। চালকসহ সর্বোচ্চ দুজন মোটরসাইকেলে চড়তে পারবেন।