সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্ল্যান্ট
পাইপে ময়লা আবর্জনা জমে বিস্ফোরণ

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের বয়লার বিস্ফোরণ। ছবি: যুগান্তর
সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের বয়লার বিস্ফোরণের কারণ গ্যাস-পানি সরবরাহে ব্যব হৃ ত পাইপে ময়লা-আবর্জনা জমে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া। চাপ সহ্য করতে না পেরে পাইপের সঙ্গে বয়লারও বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। তবে প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হয়নি।
জানা যায়, বয়লারের ভেতরে কিছু পাইপ রয়েছে। এসব পাইপ দিয়ে পানি ও গ্যাস সরবরাহ করা হয়। বয়লার শীতলীকরণের কাজে ব্যব হৃ ত কিছু পাইপ দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করায় তাতে ধীরে ধীরে ময়লা জমে যায় এবং একধরনের বরফের সৃষ্টি হয়। এতে পাইপ দিয়ে গ্যাস ও পানির স্বাভাবিক সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। একপর্যায়ে চাপ সহ্য করতে না পেরে পাইপের সঙ্গে পুরো বয়লারটি বিস্ফোরিত হয়।
বিস্ফোরণের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসানকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
বিস্ফোরক অধিদপ্তর, কলকারখানা পরিদর্শক, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে পাঁচ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক এবিএম ফখরুজ্জামানের সঙ্গে তদন্ত কমিটির সদস্যরা বৈঠক করেন। তবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি। রাতে জমা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান কমিটির এক সদস্য।
তদন্ত কমিটি বলছে, বিশ্বে এর আগে একই ধরনের আরও দুটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে একটি চীনে এবং অন্যটি মালয়েশিয়ায়। তৃতীয় ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশে। কমিটি পর্যবেক্ষণে বলেছে, অদক্ষ শ্রমিক ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে কারখানা বা বয়লার পরিচালনা করা হচ্ছিল। ২০১৮ সাল থেকে বয়লারের পাইপ পরিষ্কার করা হয়নি। বয়লার মেইনটেন্যান্স করা হয়নি। বয়লারের ভেতরের অবস্থা, টেকনিক্যাল বিষয়গুলো বোঝার মতো ক্ষমতা তাদের নেই। অথচ এজন্য দরকার ছিল বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার ও দক্ষ শ্রমিক। প্ল্যান্ট পরিচালনায় এ ধরনের শ্রমিক ও প্রকৌশলী থাকলে বিস্ফোরণের মতো এ ঘটনা এড়ানো যেত। তাই এ ঘটনার জন্য মালিকপক্ষ কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না।
শনিবার সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের ছোট কুমিরায় সীমা শিল্পগ্রুপের প্রতিষ্ঠান সীমা অক্সিজেন লিমিটেডের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুন লেগে যায়। ভয়াবহ বিস্ফোরণে চারদিকে আধা কিলোমিটার এলাকা প্রকম্পিত হয়। অক্সিজেন প্ল্যান্টটি তুলার মতো উড়ে যায়। ওই ঘটনায় প্ল্যান্টের শ্রমিক, কর্মকর্তা, এলাকাবাসী, পথচারীসহ সাতজনের মৃত্যু হয়। আহত হন ১৯ জন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তারা চিকিৎসাধীন।