ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিস্ফোরণে সরকারের ব্যর্থতাই দায়ী: মির্জা ফখরুল
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিস্ফোরণের ঘটনায় সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন তিনি। বিস্ফোরণের কারণ খুঁজতে সঠিক তদন্তের আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, সরকার ব্যর্থ হওয়ার কারণে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও ব্যর্থ হচ্ছে, এসব মনিটরিং হচ্ছে না।
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে সরকার পতনে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য। মির্জা ফখরুল ছাড়াও বৈঠকে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের পক্ষে এর সমন্বয়ক প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের মহাসচিব হারুন আল রশীদ খান, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক হারুন চৌধুরী, নুরে আলম ও শাহজালাল মোল্লা উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) সীতাকুণ্ডে এবং আজ (রোববার) ঢাকায় বিস্ফোরণ হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন-এ বিস্ফোরণগুলো ঘটছে কেন? সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, যারা এ বিষয়গুলোর দায়িত্বে রয়েছে, সবকিছু সঠিকভাবে আছে কি না, অর্থাৎ সেখানে যেন বিস্ফোরণ না ঘটে, কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, দুর্ঘটনা ঘটলে যেন মানুষের জীবননাশ না হয়, এ ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে কি না-সরকারি সংস্থাগুলো সেই ব্যবস্থা নিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের ব্যর্থতার কারণে এ ধরনের বিস্ফোরণ ঘটছে।’
চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিস্ফোরণে নিহতদের প্রতি শোকপ্রকাশ করে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন বিএনপি মহাসচিব।
পঞ্চগড়ে সাম্প্রদায়িক সংকট সরকারের সৃষ্টি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পঞ্চগড়েও চরম একটা সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। দুজন নিহত হয়েছেন, দোকানপাটসহ বাড়িঘর লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন-এই ধরনের একটা বিতর্কিত বিষয় নিয়ে সরকার চুপ করে থাকল কেন? সেখানে সমাবেশ করা অনুমতিই বা দেওয়া হলো কেন বা পরবর্তীকালে যখন আক্রমণ হয়েছে, তখন পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেটা দেখল কেন, সেটাকে তারা প্রতিহত করতে সক্ষম হলো না কেন? সাম্প্রদায়িক সমস্যা, বিভেদ সৃষ্টির পেছনে সরকারের ইন্ধন রয়েছে। তারা অত্যন্ত অসৎ উদ্দেশ্যে করছে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ গণতান্ত্রিক আন্দোলন শুরু করেছে, অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করেছে। পণ্যদ্রব্য যখন জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে, তখন রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। এ পরিস্থিতি অন্য খাতে প্রবাহিত করতে এবং জনমনে বিভ্রান্ত করার জন্যই এই ধরনের সাম্প্রদায়িকতা ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন নস্যাৎ করতে চায় সরকার। এই ঘটনার জন্য সরকার সম্পূর্ণ দায়ী। তাদেরই জবাবদিহির পাশাপাশি যারা দায়ী, তাদের বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক হারুন আল রশীদ খান বলেন, আদানি গ্রুপের সঙ্গে সরকারের বিদ্যুৎ চুক্তির বিষয়টিকে ঘুরানোর জন্য পঞ্চগড়ে কাদিয়ানি ইস্যু তৈরি করা হয়েছে। এটা মানুষ এখন বলাবলি করছে। আপনারা দেখেছেন, কয়েকদিন আগে প্রাথমিক বৃত্তির ফলাফলকে সরকার কীভাবে বিতর্কিত করেছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু থেকে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনে এক অরাজগ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে অবস্থান করে যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে যাব।